ঢাকা 5:42 am, Monday, 4 August 2025

হাজীগঞ্জের মিতুকে গলাকেটে হত্যা, প্রাক্তণ স্বামীর ফাঁসির রায়

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:39:07 pm, Sunday, 26 May 2024
  • 11 Time View

মো. হযরত আলী (ডানে) মিতু আকতার (বামে)। ছবি-ত্রিনদী

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আলোচিত মিতু আক্তার (২১) হত্যা মামলার আসামী মো. হযরত আলী (৩০) কে মৃত্যুদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অপর ধারায় ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

রবিবার (২৬ মে) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সাহেদুল করিম এই রায় দেন।

হত্যার শিকার মিতু আক্তার উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মো. হযরত আলী একই উপজেলার কীর্তনখোলা গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, মিতু আক্তার এর সাথে ২০১৩ সালে আসামী হযরত আলীর সাথে মোবাইলে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক হয়। ওই বছরই তারা উভয়ে নিজ ইচ্ছায় হাজীগঞ্জে কাজী অফিসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর শ^শুরালয়ে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন। যার ফলে ২০১৬ সালের ২৫ জুন নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে মিতু ও হযরত আলীর তালাক সম্পাদন হয়। এর মধ্যে হযরত আলী প্রবাসে চলে যায় এবং মিতুর সাথে ফোনে যোগাযোগ রাখে।

২০১৭ সালের জুন মাসে আবার দেশে ফিরে আসে এবং পরের মাসের ২৩ জুলাই মিতুকে নিয়ে চাঁদপুর শহরে ঘুরতে আসে। ঘুরাঘুরি শেষে মিতুকে বাড়িয়ে দিয়ে যায়। ওই দিন রাতেই হযরত আলী ও তার বন্ধুরা মিতুদের বাড়ীতে খেতে আসবে বলে। রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে হযরত আলী মিতুকে বন্ধুদের তাদের বাড়ীর সামনে থেকে এগিয়ে নিতে বলে। মিতু এগিয়ে আনতে গিয়েই হত্যার শিকার হন। তার মা রাবেয়া বেগম মেয়ে ঘরে ফিরে আসতে না দেখে এগিয়ে গিয়ে এলাকার আবদুর রহমানের ঘরের দক্ষিণে পুকুর পাড়ে মিতুর গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। তিনি ডাকচিৎকার করেন এবং লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন।

এই ঘটনায় মিতুর মা রাবেয়া বেগম পরদিন ২৪ জুলাই হযরত আলীকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামীকে হযরত আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন।

মামলাটি থানা আমলে নিয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন তৎকালীন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিনকে। তিনি তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, মামলাটি প্রায় ৭ বছর চলাকালীন সময় আদালত ১৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আসামীর অপরাধ স্বীকার এবং মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর ও ইয়াসিন আরাফাত ইকরাম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

চাঁদপুরের কচুয়ার সম্রাট ও তার ছেলে ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান গ্রাহকের কয়েক শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা

হাজীগঞ্জের মিতুকে গলাকেটে হত্যা, প্রাক্তণ স্বামীর ফাঁসির রায়

Update Time : 08:39:07 pm, Sunday, 26 May 2024

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আলোচিত মিতু আক্তার (২১) হত্যা মামলার আসামী মো. হযরত আলী (৩০) কে মৃত্যুদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অপর ধারায় ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

রবিবার (২৬ মে) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সাহেদুল করিম এই রায় দেন।

হত্যার শিকার মিতু আক্তার উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মো. হযরত আলী একই উপজেলার কীর্তনখোলা গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, মিতু আক্তার এর সাথে ২০১৩ সালে আসামী হযরত আলীর সাথে মোবাইলে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক হয়। ওই বছরই তারা উভয়ে নিজ ইচ্ছায় হাজীগঞ্জে কাজী অফিসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর শ^শুরালয়ে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন। যার ফলে ২০১৬ সালের ২৫ জুন নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে মিতু ও হযরত আলীর তালাক সম্পাদন হয়। এর মধ্যে হযরত আলী প্রবাসে চলে যায় এবং মিতুর সাথে ফোনে যোগাযোগ রাখে।

২০১৭ সালের জুন মাসে আবার দেশে ফিরে আসে এবং পরের মাসের ২৩ জুলাই মিতুকে নিয়ে চাঁদপুর শহরে ঘুরতে আসে। ঘুরাঘুরি শেষে মিতুকে বাড়িয়ে দিয়ে যায়। ওই দিন রাতেই হযরত আলী ও তার বন্ধুরা মিতুদের বাড়ীতে খেতে আসবে বলে। রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে হযরত আলী মিতুকে বন্ধুদের তাদের বাড়ীর সামনে থেকে এগিয়ে নিতে বলে। মিতু এগিয়ে আনতে গিয়েই হত্যার শিকার হন। তার মা রাবেয়া বেগম মেয়ে ঘরে ফিরে আসতে না দেখে এগিয়ে গিয়ে এলাকার আবদুর রহমানের ঘরের দক্ষিণে পুকুর পাড়ে মিতুর গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। তিনি ডাকচিৎকার করেন এবং লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন।

এই ঘটনায় মিতুর মা রাবেয়া বেগম পরদিন ২৪ জুলাই হযরত আলীকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামীকে হযরত আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন।

মামলাটি থানা আমলে নিয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন তৎকালীন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিনকে। তিনি তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, মামলাটি প্রায় ৭ বছর চলাকালীন সময় আদালত ১৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আসামীর অপরাধ স্বীকার এবং মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর ও ইয়াসিন আরাফাত ইকরাম।