ঢাকা ০৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদে পরিমিতিবোধ, সংযম ও স্বাস্থ্যসচেতনতার প্রতি নজর দিন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৫২:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪
  • ৫৫ Time View

কোরবানির ঈদে খাবারের মূল উপাদানই হলো বিভিন্ন রকমের মাংস; যেমন গরু, খাসি, মহিষ, এমনকি কারও কারও মেনুতে উটের মাংসও থাকবে। নিজের বাসায় তো বটেই; আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবের বাসায় ঘুরে ঘুরে প্রায় সারা দিনই টুকটাক এটা-সেটা ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় খাওয়া হয়েই যায়। মাংস তো খাবেনই, কিন্তু এ ক্ষেত্রে চাই পরিমিতিবোধ, সংযম ও স্বাস্থ্যসচেতনতা। মনে রাখতে হবে, দু–এক দিন বেশি মাংস খেতে বাধা যদিও নেই, তবু খেতে হবে রয়েসয়ে। বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ দিন বিভিন্ন রোগে ভুগছেন; যেমন পেটের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, কিডনি বা লিভারের রোগ। এসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণও যাঁদের আছে, তাঁদেরও সতর্ক থাকা দরকার। আমরা কী খাচ্ছি, কতটুকু খাচ্ছি, শরীরে বিভিন্ন খাবারের কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তার ওপর একটু নজর দেওয়া দরকার।

খাবারের পরিমাণ

খাবারের পরিমাণটাই আসলে মূল সমস্যা। কোরবানির মাংস পরিমাণে একটু বেশিই খাওয়া হয়। অনেকেই একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে হজম করতে পারেন না। অধিক পরিমাণে মাংস খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা হয়, পেট ফাঁপে, জ্বালাপোড়া করে, ব্যথা করে। গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত রোগীদের সমস্যাটা হয় আরও বেশি। পর্যাপ্ত পানি বা তরল খাদ্য গ্রহণ না করার কারণে অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। যদিও সাধারণভাবে কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেতে মানা নেই, কিন্তু পরিমাণ বজায় রাখা খুবই জরুরি। কিছু কিছু খাবার তিন বেলা না খাওয়াই ভালো। যেমন তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি; আমিষজাতীয় খাবার যেমন খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা ইত্যাদি। অন্য খাবারও যথাসম্ভব কম খেয়ে পেটটা একটু খালি রাখুন। কারণ, দিন গড়িয়ে গেলে কোরবানির মাংস প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। ঈদের দিন অনেকেই শরবত, কোমল পানীয়, ড্রিংকস এবং ফলের জুস খেতে পছন্দ করেন। তবে মনে রাখা উচিত, বাজারে দেশি-বিদেশি যেসব ফলের জুস পাওয়া যায়, সেগুলোর বেশির ভাগই আসল ফলের রস নয়। লেবুর শরবত, বাসায় বানানো ফলের রস, ডাবের পানি, বোরহানি, ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

সকালের খাবার হতে হবে হালকা

ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে অল্প করে সেমাই বা পায়েস খেতে পারেন। সঙ্গে কিশমিশ, বাদাম, এমনকি খেজুর বা খুরমা, ফলের রস, ডাবের পানি খেতে পারেন। খাওয়ার আধ ঘণ্টা পর দেড় থেকে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নামাজ পড়তে যান।

খাবার খেতে হবে বুঝেশুনে

যাদের বয়স কম এবং শারীরিক কোনো সমস্যা নেই, তারা নিজের পছন্দমতো সবই খেতে পারেন। হজমেও তাদের কোনো সমস্যা হয় না। শুধু অতিরিক্ত না হলেই হলো। বিশেষ করে চর্বিজাতীয় খাবার। বেশি মাংস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। যাঁদের এনাল ফিশার ও পাইলসজাতীয় রোগ আছে, তাঁদের পায়ুপথে জ্বালাপোড়া, ব্যথা ইত্যাদি বাড়তে পারে। এমনকি পায়ুপথে রক্তক্ষরণও হতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি, শরবত, ফলের রস, ইসবগুলের ভুসি ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি করে খাবেন। পেটে গ্যাস হলে ডমপেরিডন, অ্যান্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল–জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। যাঁদের আইবিএস আছে, তাঁরা দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। দাওয়াতে গেলে পরিমিত খাবেন, অতিভোজন পরিহার করার চেষ্টা করুন। খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি খাবেন না। এতে হজম রসগুলো পাতলা হয়ে যায়। ফলে হজমে অসুবিধা হয়। তাই খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পর পানি খান। খাবারের মাঝে বোরহানি খেতে পারেন। খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করুন। রাতের খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়বেন না। খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর বিছানায় যাবেন।

চর্বি এড়িয়ে চলুন

যেকোনো পশুর চর্বি খাওয়া এমনিতেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কোরবানির সময় এ বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত। গরু বা ছাগলের মাংসকে এককথায় বলা হয় লাল মাংস বা রেড মিট। লাল মাংস প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস, শরীরের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ ও শরীরের গঠনে যার ভূমিকা অপরিসীম। তবে লাল মাংসের যেমন উপকার আছে, তেমনি রয়েছে অনেক ঝুঁকিও। এতে আছে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট; যেমন ট্রাইগ্লিসারাইড ও এলডিএল, যা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। এগুলো শরীরের ওজন বাড়ায়, রক্তচাপ বাড়ায়, রক্তনালিতে চর্বি জমিয়ে রক্তপ্রবাহকে ব্যাহত করে, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়, ডায়াবেটিস–সংক্রান্ত জটিলতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার; যেমন কোলন ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ার আশঙ্কা থাকে। যতটুকু সম্ভব মাংসের চর্বি ছাড়িয়ে খাওয়া ভালো। মাংসের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে সবজি খাওয়া যেতে পারে। টাটকা সবজি পাকস্থলীকে নির্ভার রাখে।

বয়স্কদের সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ

মধ্যবয়সী ও বয়স্কদের খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকা আরও জরুরি। এমনকি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, ইত্যাদি না থাকা সত্ত্বেও এই বয়সের সবাইকেই ঈদের খাবারের ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকা দরকার। অতিভোজনে তাঁদের পেট ভরা ভাব বা অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে। বেশি মাংস খেলে তা পরিপূর্ণভাবে হজম করতে অনেক সময় লাগতে পারে। এতে পেটে অস্বস্তিকর অনুভূতি, ভরা ভরা ভাব, বারবার ঢেকুর ওঠা, এমনকি বুকে ব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।

স্ট্রোক ও হৃদ্‌রোগে আক্রান্তদের জন্য

স্ট্রোক ও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত রোগীরা অবশ্যই তৈলাক্ত মাংস কমিয়ে খাবেন। খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে যে ধরনের নিয়মকানুন তাঁরা সারা বছর পালন করেন, ঈদের সময়ও সেভাবে চলা উচিত। কোরবানির মাংস একটু–আধটু বেশি খেলে শরীরের যে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে তা নয়, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের অবশ্যই ঈদের সময় অতিরিক্ত খাওয়া পরিহার করতে হবে। গেঁটে বাত বা ইউরিক অ্যাসিড বেশি যাঁদের এবং যাঁরা কিডনির সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের সাধারণত প্রোটিনজাতীয় খাবার কম খেতে বলা হয়।

লেখক: ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, ইমেরিটাস অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

১০ম গ্রেডসহ ৫ দফা দাবী বাস্তবায়নে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি প্রদান

ঈদে পরিমিতিবোধ, সংযম ও স্বাস্থ্যসচেতনতার প্রতি নজর দিন

Update Time : ০৩:৫২:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

কোরবানির ঈদে খাবারের মূল উপাদানই হলো বিভিন্ন রকমের মাংস; যেমন গরু, খাসি, মহিষ, এমনকি কারও কারও মেনুতে উটের মাংসও থাকবে। নিজের বাসায় তো বটেই; আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবের বাসায় ঘুরে ঘুরে প্রায় সারা দিনই টুকটাক এটা-সেটা ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় খাওয়া হয়েই যায়। মাংস তো খাবেনই, কিন্তু এ ক্ষেত্রে চাই পরিমিতিবোধ, সংযম ও স্বাস্থ্যসচেতনতা। মনে রাখতে হবে, দু–এক দিন বেশি মাংস খেতে বাধা যদিও নেই, তবু খেতে হবে রয়েসয়ে। বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ দিন বিভিন্ন রোগে ভুগছেন; যেমন পেটের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, কিডনি বা লিভারের রোগ। এসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণও যাঁদের আছে, তাঁদেরও সতর্ক থাকা দরকার। আমরা কী খাচ্ছি, কতটুকু খাচ্ছি, শরীরে বিভিন্ন খাবারের কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তার ওপর একটু নজর দেওয়া দরকার।

খাবারের পরিমাণ

খাবারের পরিমাণটাই আসলে মূল সমস্যা। কোরবানির মাংস পরিমাণে একটু বেশিই খাওয়া হয়। অনেকেই একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে হজম করতে পারেন না। অধিক পরিমাণে মাংস খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা হয়, পেট ফাঁপে, জ্বালাপোড়া করে, ব্যথা করে। গ্যাস্ট্রিকে আক্রান্ত রোগীদের সমস্যাটা হয় আরও বেশি। পর্যাপ্ত পানি বা তরল খাদ্য গ্রহণ না করার কারণে অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। যদিও সাধারণভাবে কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেতে মানা নেই, কিন্তু পরিমাণ বজায় রাখা খুবই জরুরি। কিছু কিছু খাবার তিন বেলা না খাওয়াই ভালো। যেমন তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি; আমিষজাতীয় খাবার যেমন খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা ইত্যাদি। অন্য খাবারও যথাসম্ভব কম খেয়ে পেটটা একটু খালি রাখুন। কারণ, দিন গড়িয়ে গেলে কোরবানির মাংস প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। ঈদের দিন অনেকেই শরবত, কোমল পানীয়, ড্রিংকস এবং ফলের জুস খেতে পছন্দ করেন। তবে মনে রাখা উচিত, বাজারে দেশি-বিদেশি যেসব ফলের জুস পাওয়া যায়, সেগুলোর বেশির ভাগই আসল ফলের রস নয়। লেবুর শরবত, বাসায় বানানো ফলের রস, ডাবের পানি, বোরহানি, ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

সকালের খাবার হতে হবে হালকা

ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে অল্প করে সেমাই বা পায়েস খেতে পারেন। সঙ্গে কিশমিশ, বাদাম, এমনকি খেজুর বা খুরমা, ফলের রস, ডাবের পানি খেতে পারেন। খাওয়ার আধ ঘণ্টা পর দেড় থেকে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নামাজ পড়তে যান।

খাবার খেতে হবে বুঝেশুনে

যাদের বয়স কম এবং শারীরিক কোনো সমস্যা নেই, তারা নিজের পছন্দমতো সবই খেতে পারেন। হজমেও তাদের কোনো সমস্যা হয় না। শুধু অতিরিক্ত না হলেই হলো। বিশেষ করে চর্বিজাতীয় খাবার। বেশি মাংস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। যাঁদের এনাল ফিশার ও পাইলসজাতীয় রোগ আছে, তাঁদের পায়ুপথে জ্বালাপোড়া, ব্যথা ইত্যাদি বাড়তে পারে। এমনকি পায়ুপথে রক্তক্ষরণও হতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি, শরবত, ফলের রস, ইসবগুলের ভুসি ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি করে খাবেন। পেটে গ্যাস হলে ডমপেরিডন, অ্যান্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল–জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। যাঁদের আইবিএস আছে, তাঁরা দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। দাওয়াতে গেলে পরিমিত খাবেন, অতিভোজন পরিহার করার চেষ্টা করুন। খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি খাবেন না। এতে হজম রসগুলো পাতলা হয়ে যায়। ফলে হজমে অসুবিধা হয়। তাই খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পর পানি খান। খাবারের মাঝে বোরহানি খেতে পারেন। খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করুন। রাতের খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়বেন না। খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর বিছানায় যাবেন।

চর্বি এড়িয়ে চলুন

যেকোনো পশুর চর্বি খাওয়া এমনিতেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কোরবানির সময় এ বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত। গরু বা ছাগলের মাংসকে এককথায় বলা হয় লাল মাংস বা রেড মিট। লাল মাংস প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস, শরীরের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ ও শরীরের গঠনে যার ভূমিকা অপরিসীম। তবে লাল মাংসের যেমন উপকার আছে, তেমনি রয়েছে অনেক ঝুঁকিও। এতে আছে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট; যেমন ট্রাইগ্লিসারাইড ও এলডিএল, যা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। এগুলো শরীরের ওজন বাড়ায়, রক্তচাপ বাড়ায়, রক্তনালিতে চর্বি জমিয়ে রক্তপ্রবাহকে ব্যাহত করে, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়, ডায়াবেটিস–সংক্রান্ত জটিলতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার; যেমন কোলন ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ার আশঙ্কা থাকে। যতটুকু সম্ভব মাংসের চর্বি ছাড়িয়ে খাওয়া ভালো। মাংসের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে সবজি খাওয়া যেতে পারে। টাটকা সবজি পাকস্থলীকে নির্ভার রাখে।

বয়স্কদের সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ

মধ্যবয়সী ও বয়স্কদের খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকা আরও জরুরি। এমনকি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, ইত্যাদি না থাকা সত্ত্বেও এই বয়সের সবাইকেই ঈদের খাবারের ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকা দরকার। অতিভোজনে তাঁদের পেট ভরা ভাব বা অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে। বেশি মাংস খেলে তা পরিপূর্ণভাবে হজম করতে অনেক সময় লাগতে পারে। এতে পেটে অস্বস্তিকর অনুভূতি, ভরা ভরা ভাব, বারবার ঢেকুর ওঠা, এমনকি বুকে ব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।

স্ট্রোক ও হৃদ্‌রোগে আক্রান্তদের জন্য

স্ট্রোক ও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত রোগীরা অবশ্যই তৈলাক্ত মাংস কমিয়ে খাবেন। খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে যে ধরনের নিয়মকানুন তাঁরা সারা বছর পালন করেন, ঈদের সময়ও সেভাবে চলা উচিত। কোরবানির মাংস একটু–আধটু বেশি খেলে শরীরের যে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে তা নয়, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের অবশ্যই ঈদের সময় অতিরিক্ত খাওয়া পরিহার করতে হবে। গেঁটে বাত বা ইউরিক অ্যাসিড বেশি যাঁদের এবং যাঁরা কিডনির সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের সাধারণত প্রোটিনজাতীয় খাবার কম খেতে বলা হয়।

লেখক: ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ, ইমেরিটাস অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক