ইসমাইল হোসেন বিপ্লব, কচুয়া ॥
৫দিন পর আগুনে দগ্ধ হওয়া সেই স্কুল শিক্ষার্থী সামিয়া (৬) চিকিৎসাধী অবস্থা গতকাল রবিবার সকালে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। তার বাবা মিজানুর রহমান বিষয়টি সাংবাদিকদেরকে নিশ্চিত করেছেন । নিহত শিক্ষার্থী সামিয়া তেতৈয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে। সেই উপজেলার ৪১নং সরকারি প্রাথমিক বিদালয়ে প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় দিকে স্কুল ছুটির হওয়ার পর বড় বোনের জন্য অপেক্ষায় করতে গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে খেলার ছলে ময়লার আগুনের স্তুপে পড়ে গিয়ে তার শরীর ঝঁলসে যায়। তার ডাক-চিৎকারে শিক্ষকরা ছুটে এসে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশু সামিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ বার্ন ইউনিটে রেফার করে।
সামিয়ার বাবা মিজানুর রহমান জানান, আগুনে দগ্ধ আমার মেয়ে সামিয়া ৫দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আল্লাহর ডাকে রবিাবর সকাল ১০টায় বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরপারে চলে য়ায়। এই কথা বলে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসান জানান,শিক্ষার্থী সামিয়া শিশু শ্রেণীর ছাত্রী। দুপুর ১২ টায় বিদ্যালয় ছুটির পর সে বড় বোনের জন্য অপেক্ষায় করতে গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে মাঠে খেলা করে। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে আমি ক্লাসে থাকাকালিন দেখতে পাই মেয়েটি শরীরে আগুন নিয়ে চিৎকার দিতে দিতে বিদ্যালয়ের বারান্দার দিকে ছুটে আসছে। আমি ও নতুন বই নিতে আসা বরুচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সোহেল রানা সহ তাৎক্ষনিক ছুটে গিয়ে মেয়েটির জামা ছিড়ে ফেলি। এসময় আমাদের উভয়ের দু’হাত জ¦লসে যায়। ততক্ষনে মেয়েটির শরীরের ৭০ ভাগ অংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা রেফার করে। তার চিকিৎসার জন্য আমরা শিক্ষকরা নগদ অর্থ দিয়ে সহয়তা প্রদান করেছি এবং সার্বক্ষণিক তার খোঁজ –খবর রেখেছি। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা শিক্ষক পরিবার মর্মাহত ও শোকাহত।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারভীন সুলতানা জানান, শিশু শিক্ষার্থী সামিয়া অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর থেকে তার চিকিৎসার খোঁজ খবর সবসময় নিয়েছি। তার অকাল মৃত্যুতে আমি ও শিক্ষক পরিবারবৃন্দ মর্মাহত ও শোকাহত। আমরা অফিসের কর্মকর্তা ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে নিহত শিক্ষার্থী সামিয়ার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমাবেদনা জ্ঞাপন করেছি।