ঢাকা 9:45 am, Monday, 23 June 2025

ইসরাইলের গোপন জীবাণু কারখানা গুঁড়িয়ে দিল ইরান

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:11:19 am, Monday, 23 June 2025
  • 0 Time View

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী। তারা জানিয়েছে, ‘অপারেশন অনেস্ট প্রমিস ৩’-এর ২০তম ধাপে একযোগে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে ইসরাইলর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর দিকে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজের বরাতে জানা গেছে, ‘দীর্ঘপথ অতিক্রমকারী তরল ও কঠিন জ্বালানির মিশ্রণযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রে প্রচণ্ড ধ্বংসক্ষমতা ছিল।’

ইরানি বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, একটি ‘জীবাণু গবেষণা কেন্দ্র’, সরবরাহ ঘাঁটি এবং একাধিক কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র।

এছাড়াও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে তেল আবিব, নেস সিয়োনা ও হাইফার আবাসিক এলাকায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণ এবং আগুন দেখা গেছে।

এই হামলা এমন এক সময় হলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ছে এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরান তার কৌশলগত জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। নেস সিয়োনার ‘জীবাণু গবেষণা কেন্দ্র’, যা নিয়ে বহুদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে, এবার সরাসরি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হলো। এটি ইসরাইলর সবচেয়ে গোপন গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি, যেখানে সামরিক উদ্দেশ্যে রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ রয়েছে।

নেস সিয়োনা সরাসরি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে পরিচালিত হয়। ২০২১ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শমুয়েল ইয়িৎসহাকি। গবেষণাগারে শত শত পিএইচডি ডিগ্রিধারী বিজ্ঞানী কাজ করেন। তাদের গবেষণার বেশিরভাগই গোপন, বিশেষ করে যেগুলো সামরিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত।

ডাচ সাংবাদিক কারেল নিপ জানান, এই ল্যাবে নানা ধরনের নার্ভ গ্যাস, পক্ষাঘাত সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ও ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা হয়, যদিও দাবি করা হয় এসব ‘প্রতিরক্ষা’ এবং ‘বেসামরিক গবেষণা’র অংশ।

ইরানের ভাষায়, এই হামলা ছিল ‘অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে নিপীড়িত জাতির জবাব’।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ইসরাইলের গোপন জীবাণু কারখানা গুঁড়িয়ে দিল ইরান

Update Time : 09:11:19 am, Monday, 23 June 2025

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী। তারা জানিয়েছে, ‘অপারেশন অনেস্ট প্রমিস ৩’-এর ২০তম ধাপে একযোগে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে ইসরাইলর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর দিকে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজের বরাতে জানা গেছে, ‘দীর্ঘপথ অতিক্রমকারী তরল ও কঠিন জ্বালানির মিশ্রণযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রে প্রচণ্ড ধ্বংসক্ষমতা ছিল।’

ইরানি বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, একটি ‘জীবাণু গবেষণা কেন্দ্র’, সরবরাহ ঘাঁটি এবং একাধিক কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র।

এছাড়াও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে তেল আবিব, নেস সিয়োনা ও হাইফার আবাসিক এলাকায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণ এবং আগুন দেখা গেছে।

এই হামলা এমন এক সময় হলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ছে এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরান তার কৌশলগত জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। নেস সিয়োনার ‘জীবাণু গবেষণা কেন্দ্র’, যা নিয়ে বহুদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে, এবার সরাসরি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হলো। এটি ইসরাইলর সবচেয়ে গোপন গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি, যেখানে সামরিক উদ্দেশ্যে রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ রয়েছে।

নেস সিয়োনা সরাসরি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে পরিচালিত হয়। ২০২১ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শমুয়েল ইয়িৎসহাকি। গবেষণাগারে শত শত পিএইচডি ডিগ্রিধারী বিজ্ঞানী কাজ করেন। তাদের গবেষণার বেশিরভাগই গোপন, বিশেষ করে যেগুলো সামরিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত।

ডাচ সাংবাদিক কারেল নিপ জানান, এই ল্যাবে নানা ধরনের নার্ভ গ্যাস, পক্ষাঘাত সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ও ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা হয়, যদিও দাবি করা হয় এসব ‘প্রতিরক্ষা’ এবং ‘বেসামরিক গবেষণা’র অংশ।

ইরানের ভাষায়, এই হামলা ছিল ‘অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে নিপীড়িত জাতির জবাব’।