ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ) আসনে বিএনপিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ছড়াছড়ি, উৎকন্ঠায় কর্মী-সমর্থকরা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর উজ্জীবিত হয়ে উঠে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ) আসনের রাজনীতির মাঠ। বিগত ১৭ বছর ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি দেওয়া হলে চলতো হামলা-মামলা। এই আসনের অতীত রাজনৈতিক চর্চা খুবই হিংসাত্মক। বহু মামলায় জর্জরিত ছিলেন বিএনপিসহ বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বাহিরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার পর এখন সমান তালে নির্বাচনী প্রচারণায় রয়েছে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও গন অধিকার পরিষদসহ সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

জানা যায়, এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৩ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৪৩ জন পুরুষ, ২ লাখ ৩২ হাজার ২১৮ জন নারী এবং ২ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটি গঠন হওয়ার পর থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুল হক, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপির মো. নুরুল হুদা, ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রার্থী মো. নুরুল হুদা, ১৯৯৬ সালের পরবর্তী নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ২০০১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের প্রার্থী মো. নুরুল হুদা, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ২০১৪ সালে নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল আমিন রুহুল, সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ড. জালাল উদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম নুরুল হুদার ছেলে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা, ঢাকা মহানগর উত্তর (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) ড্যাব এর সভাপতি সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম,  মতলব দক্ষিণের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এম এম শুক্কুর পাটোয়ারী, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি এবং চাঁদপুর জেলা বিএনপির সদস্য আজহারুল হক মুকুল, বাংলাদেশ মেডিকেলের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ডা. আনিসুল আউয়াল পিএইচডি।

চাঁদপুর দুই আসন থেকে ধানের শীষের মনোনয়নের দৌড়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা নিজ নিজ প্রার্থীদের এগিয়ে থাকার ঘোষণা দিলেও মাঠ পর্যায়ে চিত্রটা ভিন্ন। দল ঘোষিত ৩১ দফার প্রচার-প্রচারণার ফাঁকে প্রাথীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন জোরালো ভাবেই। এর মধ্যে ড. জালাল উদ্দিন, তানভীর হুদা, ঢাকা মহানগর উত্তর (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) ড্যাব এর সভাপতি সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, এম.এ শুক্কুর পাটোয়ারী অন্যতম। পিছিয়ে নেই আজহারুল হক মুকুল, ব্যারিস্টার ওবায়েদুর রহমান টিপু ও ডাঃ আনিসুল আউয়াল।

আগামী এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে এই আসনে কে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন তারই হিসেব নিকাশ যতটা না দলীয় মনোনয়ন বোর্ড করছে, তার চেয়ে বেশি চর্চা চলছে এলাকার চায়ের দোকানে কিংবা আড্ডায়। মনোনয়ন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে ‘‘আলহামদুলিল্লাহ”, ১০০%.. ইত্যাদি লিখে পোস্ট দিচ্ছেন। যদিও কেন্দ্রীয় ভাবে এখনো পর্যন্ত কাউকে চূড়ান্ত ভাবে ‘গ্রিন সিগনাল’ দেওয়া হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবে পশ্চিম নাগদা মুন্সিবাড়িতে দুইদিন ব্যাপী বার্ষিক তাফসীরুল কুরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত

চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ) আসনে বিএনপিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ছড়াছড়ি, উৎকন্ঠায় কর্মী-সমর্থকরা

Update Time : ১১:৩৩:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর উজ্জীবিত হয়ে উঠে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ) আসনের রাজনীতির মাঠ। বিগত ১৭ বছর ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি দেওয়া হলে চলতো হামলা-মামলা। এই আসনের অতীত রাজনৈতিক চর্চা খুবই হিংসাত্মক। বহু মামলায় জর্জরিত ছিলেন বিএনপিসহ বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বাহিরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার পর এখন সমান তালে নির্বাচনী প্রচারণায় রয়েছে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও গন অধিকার পরিষদসহ সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

জানা যায়, এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৩ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৪৩ জন পুরুষ, ২ লাখ ৩২ হাজার ২১৮ জন নারী এবং ২ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটি গঠন হওয়ার পর থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুল হক, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপির মো. নুরুল হুদা, ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রার্থী মো. নুরুল হুদা, ১৯৯৬ সালের পরবর্তী নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ২০০১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের প্রার্থী মো. নুরুল হুদা, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ২০১৪ সালে নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল আমিন রুহুল, সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ড. জালাল উদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম নুরুল হুদার ছেলে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হুদা, ঢাকা মহানগর উত্তর (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) ড্যাব এর সভাপতি সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম,  মতলব দক্ষিণের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এম এম শুক্কুর পাটোয়ারী, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি এবং চাঁদপুর জেলা বিএনপির সদস্য আজহারুল হক মুকুল, বাংলাদেশ মেডিকেলের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ডা. আনিসুল আউয়াল পিএইচডি।

চাঁদপুর দুই আসন থেকে ধানের শীষের মনোনয়নের দৌড়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা নিজ নিজ প্রার্থীদের এগিয়ে থাকার ঘোষণা দিলেও মাঠ পর্যায়ে চিত্রটা ভিন্ন। দল ঘোষিত ৩১ দফার প্রচার-প্রচারণার ফাঁকে প্রাথীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন জোরালো ভাবেই। এর মধ্যে ড. জালাল উদ্দিন, তানভীর হুদা, ঢাকা মহানগর উত্তর (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) ড্যাব এর সভাপতি সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, এম.এ শুক্কুর পাটোয়ারী অন্যতম। পিছিয়ে নেই আজহারুল হক মুকুল, ব্যারিস্টার ওবায়েদুর রহমান টিপু ও ডাঃ আনিসুল আউয়াল।

আগামী এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে এই আসনে কে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন তারই হিসেব নিকাশ যতটা না দলীয় মনোনয়ন বোর্ড করছে, তার চেয়ে বেশি চর্চা চলছে এলাকার চায়ের দোকানে কিংবা আড্ডায়। মনোনয়ন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে ‘‘আলহামদুলিল্লাহ”, ১০০%.. ইত্যাদি লিখে পোস্ট দিচ্ছেন। যদিও কেন্দ্রীয় ভাবে এখনো পর্যন্ত কাউকে চূড়ান্ত ভাবে ‘গ্রিন সিগনাল’ দেওয়া হয়নি।