ঢাকা 12:10 pm, Sunday, 2 November 2025

হাজীগঞ্জে আপন ভাইকে পি’টিয়ে হ’ত্যার চেস্টা , ৯৯৯ কলে উদ্ধার করলো পুলিশ ও জনতা

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে আপন বড় ভাই আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে ছোট ভাই আব্দুস সামাদ খোকাকে পিটিয়ে হত্যার চেস্টার অভিযোগ উঠেছে। মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়ালজোশ গ্রামের নতুন মসজিদ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে পুলিশ ৯৯৯ কল পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় ছোট ভাই আব্দুস সামাদ খোকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজী আব্দুস সোবহান ও উলফতের নেছা দম্পতির তিন ছেলে। এর মধ্যে বড় ছেলে আব্দুর রহিম তার মা-বাবাকে হাত করে বেশকিছু পারিবারিক সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে তার ছোট দুইভাই আব্দুস সামাদ খোকা ও আবুল হাশেমকে বাড়িতে উঠতে দিচ্ছেন না।

শনিবার বিকেলে ছোট ভাই খোকা তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে যান। তিনি বাবা-মায়ের সাথে কথা বলা অবস্থায় হঠাৎ করে পেছন দিক থেকে বড় ভাই আব্দুর রহিম তাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। এসময় পেছন দিকে ফিরে তাকালে বড় ভাই তার মাথায় আঘাত করেন।

ভুক্তভোগী খোকা বলেন, আমি ১৯৯৭ সাল থেকে বাহরাইন প্রবাসী। নিজের উপার্জিত অর্থ ও সম্পদ ভাই এবং মা-বাবার হাতে দিয়েছিলাম। বিয়ের পরের বছর থেকে শ্বশুরবাড়িতে থাকতাম। এখন বাহরাইন থেকে দেশে একবারে ফিরে এসেছি। কিন্তু ভাইয়ের এমন আচরণে আমি হতবাক। খবর পেয়ে পুলিশ আমাকে উদ্বার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, বড় ভাই আমাদের ছোট দুই ভাইকে বাড়িতে উঠতে দেন না। তিনি জোরপূর্বক পারিবারিক বাড়ি-ঘর ও সহায়-সম্পত্তি দখল করে আছেন। আমরা বাড়িতে গেলে তিনি আমাদের উপর অতর্কিত হামলা ও মারধর শুরু করেন। তার ভয়ে আমরা’সহ এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। আমরা ন্যায়-বিচার চাই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আব্দুর রহিম এলাকায় মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রায় ১৫টির মতো মামলা দিয়েছেন। এসব মামলায় সামাজিকভাবে স্থানীয়রা প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো খরচ বহন করেছেন। তার আচরণে ও অত্যাচারে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তিনি অসামাজিক লোক। যার কারণে তার সাথে এলাকার কারো সম্পর্ক নেই।

আব্দুর রহিমের মা উলফতের নেছা বলেন, আমি আমার ছেলেকে (আব্দুস সামাদ খোকা) মেরেছি। কারো কিছু বলার আছে? আমার ছোট দুই ছেলে? আমার কোনো খোঁজখবর রাখে না। আগে আব্দুর রহিমকে ছোট ছেলে মারধর করেছে। তাই আজ খোকাকে তার বড় ভাই মেরেছে।

এদিকে খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত খোকাকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। এরপরেই সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হলে ঘটনাস্থলে আব্দুর রহিমকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন করলেও তাকে না পাওয়ায় এবং ফোন ব্যাক না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নাজমুল আলম সংবাদকর্মীদের বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগকারীর বাবা-মায়ের সাথে কথা বলেছি। এবং তাকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফরিদগঞ্জ দুই শতাধিক কৃতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংবর্ধনা

হাজীগঞ্জে আপন ভাইকে পি’টিয়ে হ’ত্যার চেস্টা , ৯৯৯ কলে উদ্ধার করলো পুলিশ ও জনতা

Update Time : 12:03:27 pm, Sunday, 2 November 2025

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে আপন বড় ভাই আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে ছোট ভাই আব্দুস সামাদ খোকাকে পিটিয়ে হত্যার চেস্টার অভিযোগ উঠেছে। মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়ালজোশ গ্রামের নতুন মসজিদ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে পুলিশ ৯৯৯ কল পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় ছোট ভাই আব্দুস সামাদ খোকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজী আব্দুস সোবহান ও উলফতের নেছা দম্পতির তিন ছেলে। এর মধ্যে বড় ছেলে আব্দুর রহিম তার মা-বাবাকে হাত করে বেশকিছু পারিবারিক সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে তার ছোট দুইভাই আব্দুস সামাদ খোকা ও আবুল হাশেমকে বাড়িতে উঠতে দিচ্ছেন না।

শনিবার বিকেলে ছোট ভাই খোকা তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে যান। তিনি বাবা-মায়ের সাথে কথা বলা অবস্থায় হঠাৎ করে পেছন দিক থেকে বড় ভাই আব্দুর রহিম তাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। এসময় পেছন দিকে ফিরে তাকালে বড় ভাই তার মাথায় আঘাত করেন।

ভুক্তভোগী খোকা বলেন, আমি ১৯৯৭ সাল থেকে বাহরাইন প্রবাসী। নিজের উপার্জিত অর্থ ও সম্পদ ভাই এবং মা-বাবার হাতে দিয়েছিলাম। বিয়ের পরের বছর থেকে শ্বশুরবাড়িতে থাকতাম। এখন বাহরাইন থেকে দেশে একবারে ফিরে এসেছি। কিন্তু ভাইয়ের এমন আচরণে আমি হতবাক। খবর পেয়ে পুলিশ আমাকে উদ্বার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, বড় ভাই আমাদের ছোট দুই ভাইকে বাড়িতে উঠতে দেন না। তিনি জোরপূর্বক পারিবারিক বাড়ি-ঘর ও সহায়-সম্পত্তি দখল করে আছেন। আমরা বাড়িতে গেলে তিনি আমাদের উপর অতর্কিত হামলা ও মারধর শুরু করেন। তার ভয়ে আমরা’সহ এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। আমরা ন্যায়-বিচার চাই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আব্দুর রহিম এলাকায় মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রায় ১৫টির মতো মামলা দিয়েছেন। এসব মামলায় সামাজিকভাবে স্থানীয়রা প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো খরচ বহন করেছেন। তার আচরণে ও অত্যাচারে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তিনি অসামাজিক লোক। যার কারণে তার সাথে এলাকার কারো সম্পর্ক নেই।

আব্দুর রহিমের মা উলফতের নেছা বলেন, আমি আমার ছেলেকে (আব্দুস সামাদ খোকা) মেরেছি। কারো কিছু বলার আছে? আমার ছোট দুই ছেলে? আমার কোনো খোঁজখবর রাখে না। আগে আব্দুর রহিমকে ছোট ছেলে মারধর করেছে। তাই আজ খোকাকে তার বড় ভাই মেরেছে।

এদিকে খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত খোকাকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। এরপরেই সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হলে ঘটনাস্থলে আব্দুর রহিমকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন করলেও তাকে না পাওয়ায় এবং ফোন ব্যাক না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নাজমুল আলম সংবাদকর্মীদের বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগকারীর বাবা-মায়ের সাথে কথা বলেছি। এবং তাকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।