চাঁদপুরের মতলব দক্ষিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিফাত (২০) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের সহপাঠী ও স্বজনদের অভিযোগ করেছেন ভুল চিকিৎসার সে মারা গেছে।
ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার অভিযোগে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও ঘটনার পর( ৬টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত) হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তার স্বজন ও এলাকার উত্তেজিত জনগণ।
ঘটনার খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) জাবির হুসনাইন সানীব ও মতলব দক্ষিণ থানার ওসি সালেহ আহাম্মদ হাসপাতালের উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা যায়,বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় প্রচন্ড জ্বর নিয়ে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে তার মা চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। পরে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি দেন। হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকায় বারান্দায় চিকিৎসা চলে তার। মাগরিব নামাজের কিছুক্ষণ আগে স্যালাইন শেষ হলে সিফাত পায়ে হেঁটে বাথরুমে যায়। বাথরুম থেকে বের হয়ে আসার পর মাথা ঘুরে পড়ে যায় সে। ওই সময় তার স্বজনদের আত্মচিৎকারে কর্তব্যরত নার্স ছুটে যায় এবং ডিউটি ডাক্তারকে তাৎক্ষণিক খবর দেয়। খবর পেয়ে ডাক্তার রতন চন্দ্র দাস ভর্তির ওয়ার্ডে ছুটে দিয়ে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সিফাতকে জরুরি বিভাগে নিয়ে এসে ইসিজি করায় এবং মৃত ঘোষণা করে।
সিফাতের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার সহপাঠী ও স্বজনরা ছুটে এসে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগ তুলে জরুরি বিভাগের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং দায়ী ডাক্তারের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। সেই সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তারদের আবাসিক ভবনের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা চালায়।
এদিকে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে এমন কথার ভিত্তিতে হাসপাতালে আগত উৎসুক জনতা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের বিষয়ে
(হাসপাতালে ডাক্তারদের পাওয়া যায় না,চেয়ারে পায়ের ওপর পা দিয়ে বসে থাকে, টিএইচও থাকে না) নানা বিরূপ মন্তব্য করেন।
পরবর্তী সময়ে সিফাতের মৃত্যুর বিষয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চাঁদপুর মর্গে পাঠানোর উদ্যোগ নিলে তার সহপাঠীরা লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের দাবি তুলে। পরবর্তীতে সিফাতের বাবার লিখিত সম্মতির ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মৃত সিফাত মতলব পৌরসভার চরমুকন্দি গ্রামের শরিফ খানের একমাত্র ছেলে। তার ছোট দুই বোন রয়েছে। সে এ বছর মতলব সরকারি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করেছিল।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম রায়হান বলেন, আমি স্টেশনে নাই, আমি শুনেছি যে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। তবে ফোনে ডাক্তারদের সাথে কথা বলে জেনেছি ভুল চিকিৎসা বা দায়িত্ব অবহেলা ছিল না।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, নিহতের বাবার মৃত্যু নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। তার বাবা শরীফ খাঁনসহ এলাকার লোকজন আইনি ব্যবস্থা না করার আবেদন করেছেন।
সফিকুল ইসলাম রিংকু : 














