• বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
হাজীগঞ্জের গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ পোস্ট মাস্টার হলেন হাজীগঞ্জের খোরশেদ আলম ধার্মিক ছেলে পেলে অভিনয় ছেড়ে বিয়ে করবেন মডেল প্রিয়াঙ্কা হাজীগঞ্জে নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব হাজীগঞ্জের মনিনাগে সম্পতিগত বিরোধের জেরধরে হামলা, ৮জন আহত ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে’ মতলব উত্তরে ১০ম গ্রেডের দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর স্মরণে দোয়া ও মিলাদ শাহরাস্তিতে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে রবি শস্য বীজ ও নগদ অর্থ প্রদান শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ফরিদগঞ্জ ॥ বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তরা

আগামী মাস থেকে আর থাকবেনা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ভোগান্তি, বললেন প্রধানমন্ত্রী

ত্রিনদী অনলাইন
ত্রিনদী অনলাইন
আপডেটঃ : শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২
ছবি-ত্রিনদী।

আগামী মাস থেকে আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জন্য জনগণকে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, হয়ত আগামী মাস থেকেই এত কষ্ট আর থাকবে না।’

শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল কিনতে ও গ্যাস আনতে অসুবিধা হচ্ছে। শুধু আমাদের দেশ নয়, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশও জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে। তারাও হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে আমাদেরও কিছু দিনের জন্য কষ্ট পোহাতে হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, হয়ত আগামী মাস থেকে এত কষ্ট আর থাকবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, তারপরও তেল, পানি এবং জ্বালানি ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হতে হবে। কারণ সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার যে প্রভাব তা থেকে আমরা মুক্ত নই। কারো এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। যে যা পারেন উৎপাদন করেন। নিজের জমিতে ফসল ফলান। কেননা সারাবিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের নিজেদের খাদ্যের সংস্থান নিজেরা করতে পারলে বিশ্বব্যাপী চলমান দুর্ভোগ্যের আঁচ বাংলাদেশে লাগবে না।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। আমাদের যা প্রয়োজন তার থেকে বেশি উৎপাদন করছি। তারপরও আমরা আপৎকালের জন্য খাদ্য সবসময় মজুত রাখি, যেন আমার দেশের মানুষের কোনো কষ্ট না হয়।

মানুষকে বিনামূল্যে এবং কমমূল্যে খাদ্য সরবরাহ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বেশি দাম দিয়ে সব জিনিস কিনে নিয়ে এসে কম দামে দিচ্ছি যাতে কোনো মানুষ খাদ্যে কষ্ট না পায়। টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, চিনি ভর্তুকিতে দিচ্ছি। ১ কোটি মানুষ এটা পাচ্ছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে আমরা ১৫ টাকায় দিচ্ছি আর ৫০ লাখ পরিবার পাচ্ছে বিনাপয়সায়। যারা বয়োবৃদ্ধ তাদের দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা গৃহহীন-ভূমিহীন তাদের ঘর করে দিচ্ছি। যাদের ঠিকানা ছিল না, এ ধরনের যত মানুষ পাচ্ছি আমরা খুঁজে খুঁজে বের করে বিনাপয়সায় ঘর দিচ্ছি। কিছু দিন আগে বন্যা হয়ে গেল। নদী ভাঙনে যারা ভূমিহীন আমরা তাদেরও ঘর করে দেব।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে আসিনি। গড়ছি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য। বিনাপয়সায় বই দিচ্ছি। বৃত্তি-উপবৃত্তি, মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা দিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনাপয়সায় দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, কবে কে করেছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এত কাজ? এতবার তো ক্ষমতায় ছিল সবাই। জিয়া, খালেদা জিয়া ছিল। মানুষের কল্যাণে তারা তো কখনো করেনি! করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগই করে।

তিনি বলেন, আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। চোখে দেখে না আমাদের দেশের কিছু মানুষ। তাদের কিছুই ভালো লাগে না। এই গণতান্ত্রিক সরকার তাদের ভালো লাগবে না। অগণতান্ত্রিক কিছু হলে তাদের মূল্যটা বাড়ে। এটাই তারা ভাবে। বাংলাদেশে সেই খেলাই খেলতে চায় তারা। বারবার তো সেই খেলা চলেছে দীর্ঘ দিন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর একটানা গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে আবার সেই মর্যাদা পেয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের নাম শুনলে মনে করত দুর্ভিক্ষ-ঝড়-দরিদ্র। এভাবেই দেখত। এখন তো আর সেই ছোট চোখে আর বাংলাদেশকে দেখতে পারে না! কারণ আমরা বিজয়ী জাতি। জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করেই চলব আমরা। সেটাই করছি।

তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে রিজার্ভ নিয়ে অনেক কথা শোনা যাচ্ছে। করোনাকালে আমাদের আমদানি হয়নি, কেউ বিদেশে যেতে পারেনি, কোনো রকম খরচ ও হুন্ডি ব্যবসা ছিল না। একেবারে সরকারিভাবে সব অর্থ এসেছে, যার ফলে আমাদের ভালো ফান্ড আসে। ’৯১ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। যেটা ৩ মাসের খাবার আমদানি করারও পয়সা হতো না।

প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের কল্যাণেই তার সরকার রিজার্ভের অর্থ খরচ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অতীতের ঋণের সুদও গুণতে হয় বড় অংকের। তার সরকার কখনো ঋণ খেলাপি হয়নি বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনো যে রিজার্ভ রয়েছে- তা দিয়ে ৫ মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। এটি ৩ মাসের থাকলেই যথেষ্ট বলেই তিনি উল্লেখ করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ৮ বিলিয়ন ডলার আমরা আলাদাভাবে বিনিয়োগ করেছি। আধুনিক বিমান ক্রয় করেছি। এটা আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়েই করেছি। অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার নেইনি। কারণ ধার নিলেও সে টাকা সুদসহ শোধ করতে হতো। সেই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিমান নিয়েছে এবং ২ শতাংশ সুদে আবার ফেরত দিচ্ছে। ফলে দেশের টাকা দেশে থাকছে। রপ্তানি ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়ায় টাকা খরচ হচ্ছে। এতে আমাদের দেশের লোকই লাভবান হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির অনেক নেতা মানিলন্ডারিংয়ের কথা বলেন। তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে মানিলন্ডারিং কেসে। তার বিরুদ্ধে আমেরিকা থেকে এফবিআইয়ের লোক এসে বাংলাদেশের সাক্ষী দিয়ে গেছে। মানিলন্ডারিং কেসে সাত বছর সাজা, বিশ কোটি টাকা জরিমানা আর গ্রেনেড হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির জন্যও সে সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় খালেদা জিয়া সাজা পেয়েছে।

করোনায় বিনামূল্যে টিকা প্রদান, টেস্ট করানো এবং আনুষঙ্গিক খাতে বিপুল অংকের টাকা খরচের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সরকারের যে ব্যয় সেদিকে পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ার নজর নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা দুর্নীতির কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো দিন খুঁজে দেখেনি যে টাকা সব মানুষের জন্য খরচ হয়েছে।

আওয়ামী লীগ কোনো দুর্নীতি করেনি বরং দুর্নীতি তারেক জিয়া, খালেদা জিয় এবং কোকো করে গেছে। আর এটা তার সরকারের কথা নয় আমেরিকা থেকে এফবিআই এসে দুর্নীতির সাক্ষ্য দিয়েছে এবং তাদের পাচার করা কিছু টাকাও উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তারেক জিয়ার সম্পৃক্ততা ও সাজাপ্রাপ্তি এবং তার ওপর একের পর এক প্রাণঘাতী হামলা ও সে সময় খালেদা জিয়ার বক্তব্য- ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না’, ‘আওয়ামী লীগ ১শ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না’- সবিস্তারে তিনি তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা খুন, হত্যা এবং গুমের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। বিএনপি আমলে বাংলা ভাই এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি এবং একযোগে সারা দেশের ৫শ জায়গায় বোমা হামলার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে প্রকৃত গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক অধিকার এ দেশের মানুষের ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করি।

তিনি বলেন, নির্বাচনে যতটুকু স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে সেটা কিন্তু আমাদের (আওয়ামী লীগ) আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল।

বিএনপি আমলের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করার পর থেকে দেশে হত্যা, খুন, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং- এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি।

প্রধানমন্ত্রী সে সময়কার নির্বাচন বিষয়ে বলেন, ‘কথাই ছিল ১০টা হুন্ডা (মোটরসাইকেল), ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা। অবশ্য তাদের মুখে এখন খুব গণতন্ত্রের কথা শোনা যায়। তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুক

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০