মো. জহির হোসেন:
চাঁদপুরে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা (নং- ৩৩০/২০২২ইং) বিচারাধীন ও বিবাদীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা থাকা অবস্থায় হাজীগঞ্জ বাজারস্থ ডিগ্রি কলেজ রোডে বেশ কয়েকটি দোকানঘর দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৭ নভেম্বর) সকালে হাজীগঞ্জে কর্মরত সংবাদকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ করেন, ভুক্তভোগি পরিবারদের পক্ষে আতিকুর রহমান চৌধুরী। শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে তিনি জানান।
মামলা সূত্রে সূত্রে জানা গেছে, হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ২১৩নং হালে ৮৩নং মকিমাবাদ মৌজার বিএস ২৫০৪ খতিয়ানের অনুক‚লে হাজীগঞ্জ সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের ৫/১২/২০০৬ইং ৫৭০৫ নং ছাপ-কবলা দলিলটি অকার্যকর এবং বিএস ২৫০৪নং খতিয়ানটি অবৈধ ঘোষণার প্রার্থনায় পেয়েরা বেগম, শেফালী বেগম, জোহরা মোস্তাফিজ, খোদেজা বেগম, ফরিদা আক্তার, আমির হোসেন টুটুল ও গোলাম মাইন উদ্দিন জুয়েল বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন।
মামলায় আয়েশা বেগম, শ্যামগিরি রায়, স্বপন কুমার রায়, বিকাশ রায়, নিরঞ্জন রায়, রাধা রানী রায়, কার্তিক চন্দ্র আচার্য্য, হাজীগঞ্জ সাব রেজিষ্টার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চাঁদপুরসহ ৯ জনকে বিবাদী করা হয়।
আতিকুর রহমান চৌধুরী জানান, উল্লেখিত বিবাদীদের সাথে সম্পত্তিগত বিরোধ থাকার কারণে বিবাদীরা নিজ ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে তাদের (বাদী) পরিবারের সদস্যদের প্রায় সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। তারা সম্পত্তিগত বিষয়টি সুষ্ঠ সমাধানের লক্ষ্যে গত ৩০ নভেম্বর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যা বিচারাধীন। বিষয়টি জানতে পেরে বিবাদীরাও হাজীগঞ্জ পৌরসভায় একটি অভিযোগ দেন। যা চলমান রয়েছে। এমনকি নালিশী ভূমির উপর ওই মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ হয়েছে।
অথচ আদালতে মামলা বিচারাধীন ও পৌরসভায় অভিযোগের মিমাংসা চলমান থাকা অবস্থায় শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে সুমন চৌধুরীর নেতৃত্বে তারা (বিবাদীরা) আমাদের দখলীয় বেশ কয়েকটি দোকানঘরে জোরপূর্বক তালা ও দোকানগুলোর সামনে টিনের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমরা বিষয়টি টের পেয়ে তাৎখনিক তাদেরকে বাধা দেই। যার ফলে তারা দোকানঘরগুলো দখল করতে পারেনি।
এরপর আমরা ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আমাদেরকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেয়। আতিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, তারা আদালতকে উপেক্ষা করে এবং হাজীগঞ্জ পৌরসভাকে অবজ্ঞা করে জোরপূর্বক আমাদের দখলীয় সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে। এছাড়াও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। যার ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতা ভুগছি।
একই সময়ে ফরিদা আক্তার ও পেয়েরা বেগম নামের মামলার দুইজন বাদী বলেন, এটি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। এখানে আমাদের দোকানঘর এবং চলাচলের পথ রয়েছে। অথচ বিবাদীরা লোকজন ভাড়া করে এনে আমাদের দোকানঘর দখল ও চলাচলের পথ বন্ধ করার চেষ্টা করে এবং আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই সু-বিচার পাওয়ার জন্য আমরা আদালত ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ দিকে সুমন চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি দূরে আছেন এবং এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে সংবাদকর্মীদের জানান। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে ফোন দেওয়া হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আমিন জানান, দুই পক্ষকে তাদের প্রয়োজনীয় নিজ নিজ কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসার জন্য বলা হয়েছে। কাগজপত্র দেখে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।