বিশেষ প্রতিনিধি ॥
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তখন সবার চোখে মুখে একটাই স্বপ্নছিল দেশটাকে স্বাধীন করা। জীবনের মায়া আপনারা (বীর মুক্তিযোদ্ধা) করেননি। আপনাদের সকলেরই বাড়িতে হয়তা বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তান ও ভাই বোন ছিল। কোন পিছুটান আপনাদেরকে ধমিয়ে রাখতে পারেনি। আপনারা সেদিন শুধু দেশ মাকে স্বাধীন করবেন, দেশ মার সম্মানকে উদ্ধার করবেন, হানাদার বাহিনীকে এই দেশ মাকে মুক্ত করে স্বাধীন মানুষ হিসেবে এই দেশের প্রতিটি মানুষ যেন বাঁচতে পারে সে প্রতিজ্ঞা নিয়ে জীবন বাজি রেখে ঘর ছেড়ে ছিলেন।
রবিবার (২৬ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চের কাল রাতে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে পাকবাহিনী। পুরো দেশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছিল তারা। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি নিকৃষ্টতম ঘটনা ছিলো। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতা কখন ভুলার নয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপনারা স্বাধীন ভূখন্ড তৈরী করে দিয়েছিলেন। আপনাদের কারণে আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক বলতে পারি।
দীপু মনি বলেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি রাষ্ট্রের জন্যে কখনো শুভ নয়। আওয়ামী লীগের কারণে বাঙালি তার স্বাধীনতা পেয়েছে। যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো, আজকে তারা নাকি মানুষের অধিকারের কথা বলে। আমরা কথা বললেই বোমা ও গ্রেনেড মারা হয়েছিলো। তারাই আজকে অধিকারের কথা বলে। এরা মানুষকে হত্যা করেছে। তারা হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার যখন বঙ্গবন্ধু করেছিলো, সেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জিয়াউর রহমান বন্ধ করে তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। বিএনপি চায় আমাদের ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে।
মন্ত্রী বলেন, আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছি। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে ভিক্ষুকের হাত থেকে দাতার হাতে পরিণত হয়েছি। আজকে প্রতিটি মানুষ ভালো অবস্থানে রয়েছে। দারিদ্র কমেছে। গৃহহীনদের জন্যে ঘর উপহার দিচ্ছেন সরকার। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাসের ব্যবস্থা করছেন। আপনাদের যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করছেন সরকার।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, পুরাণ বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার। সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তারের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন সাবু পাটওয়ারী প্রমূখ।
আলোচনা শেষে বীর মুক্তযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রীসহ অতিথিরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রায় দুই শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ফুলি দিয়ে বরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
তারিখ: ২৬.০৩.২০২৩খ্রি.