একসময় তারা গাড়ী চালাতেন। হঠাৎ পেশা পরিবর্তন করে নামেন চুরিতে। এ ব্যবসাটি লাভজনক হওয়ায় ধীরে ধীরে তাদের পেশায় বাড়ে সদস্য সংখ্যা।
চুরর পেশায় জড়িত প্রত্যেকেই গাড়িচালক। তবে এখন সেই পেশায় নেই তারা। যুক্ত হয়েছে নতুন পেশায়। তাদের কাজ হচ্ছে, কেউ না থাকলে খালি বাসাাবড়ির তালা ভেঙে মালামাল চুরি করা।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে এমন চোরচক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এসময় তারা কীভাবে চুরি করছে তার বর্ণনা দিয়েছে পুলিশের কাছে।
এদিকে, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে আটক এই ৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা।
পরে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার আমিন রোডের সোহাগ মঞ্জিল। ৫ তলার এই বাড়ি। সোমবার দুপুরে ওপরের তলার একটি ফ্ল্যাটে তালা মারা ছিল।
আর এই সুযোগে চোর চক্রের সদস্যরা হানা দেয়। কারণ, তার আগে এই চক্রের সদস্যরা সেখানে খোঁজ নেয়, কেউ আছে কিনা। তারপর আশপাশের কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে বাসার দরজার তালা ভাঙার চেষ্টা। এতে সফলও হয়।
কিন্তু বেরিয়ে যাওয়ার পথে ধরা পড়ে এই চক্রের একজন। যার নাম তুহিন। পটুয়াখালীর দশমিনার এই তুহিন মূলত যাত্রীবাহী বাসচালক। রাজধানী ঢাকায় তার সঙ্গে পরিচিত আরো কয়েকজন চালক মিলে গড়ে তোলে একটি চক্র। একসময় রাজধানীতে দিনে-দুপুরে বাসাবাড়িতে ঢুকে এমন কাজ করলেও এখন তারা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। তবে কিভাবে চুরি করছে তারা সেই চিত্র ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়। আর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর বিস্তারিত এভাবেই তুলে ধরে।
এদিকে, চক্রের প্রধান তুহিনের সঙ্গে ধরা পড়ে আরো ৪ জন। আর পেশা পরিবর্তন করা এমন চোরচক্র নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ। তুহিন (৩০) ছাড়াও অন্য যাদের আটক করা হয় তারা হচ্ছে, ফরিদগঞ্জের মো. স্বপন (৪০), শাহরাস্তির জামাল হোসেন (৩১), হাজীগঞ্জের মো. মাসুম (৩৫) এবং কুমিল্লার মেহেদী হাসান (২৫)। গত কয়েকদিনের অভিযানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ তাদের আটক করে। এর মধ্যে মেহেদী হাসান স্বর্ণ কারিগর। তার কাছে চুরি করা মালামালের মধ্যে স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করত চক্রটি।
অন্যদিকে, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় জানান, মূল পেশা পরিবর্তন করে চুরিতে আসা এই চক্রটি খুব দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। একটি অভিযানে একাধিক সদস্য অংশ নেয়। কেউ আশপাশ পর্যবেক্ষণ করে। আবার কেউ খালি বাসাাবড়িতে ঢুকে চুরি করে। তিনি আরো জানান, এরইমধ্যে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ এই চক্রের আরো তিনজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ৫ জনসহ এই নিয়ে মোট ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। যাদের কাছ থেকে চুরি করার সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।