ঢাকা 11:01 am, Wednesday, 23 July 2025

হাজীগঞ্জে ৮২ লক্ষ টাকার প্রতারণা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহ আলম গ্রেপ্তার

মোঃ শাহ আলম

 

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে দীর্ঘদিন পলাতক থাকা ৮২ লক্ষ টাকার প্রতারণা ও চেক ডিজঅনার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোঃ শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুকিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত মুনসুর আহমদের ছেলে।

গত ২০ জুলাই রাতের দিকে হাজীগঞ্জ থানার এএসআই (নিঃ) মোঃ মোস্তফা মাজেদ বিন রশিদ সঙ্গীয় ফোর্সসহ মুকিমাবাদে অবস্থিত নিজ বাসা থেকে  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন।

শাহ আলমের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার আইনের (N.I. Act 138) আওতায় মোট ৫টি মামলা রয়েছে। আদালত প্রতিটি মামলায় তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৭২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, সিআর নং-৫৪৮/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৮২/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১১,০০,০০০/- (এগারো লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড,সিআর নং-৫৪৫/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৪৮/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড। সিআর নং-৫৪৭/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৪৭/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ৩০,০০,০০০/- (ত্রিশ লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড। সিআর নং-৫৪৯/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৮০/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১১,০০,০০০/- (এগারো লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড। সিআর নং-৫৪৬/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৮৩/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা ও নগদ ১০,০০,০০০ টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহ আলম দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যবসায়িক লেনদেনের আড়ালে বহু ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করতেন। অনেকেই তার কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা পেয়েও পরবর্তীতে চেক ফেরত পাওয়ার মাধ্যমে প্রতারিত হন।

একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ করেন, “শাহ আলম খুব বিশ্বাসযোগ্য ভান করে আমাদের সঙ্গে বড় বড় আর্থিক চুক্তিতে যায়। কিন্তু সময়মতো টাকা ফেরত না দিয়ে আমাদের নামে চেক ইস্যু করে, যেগুলো ব্যাংকে ডিজঅনার হয়।”

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে এর আগেও মৌখিক ও লিখিতভাবে একাধিক অভিযোগ থানায় জমা পড়ে, তবে আদালতের পর্যায়ে এসে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়।

শাহ আলমের গ্রেপ্তারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা। এক ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে আইনি লড়াই করছি। আজ পুলিশের এমন পদক্ষেপে আমরা সাহস পাচ্ছি যে, আইনের ওপর এখনও ভরসা রাখা যায়।”

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। জনগণের আইনগত অধিকার নিশ্চিত করা এবং আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করাই আমাদের অঙ্গীকার।”

তিনি আরও বলেন, “যারা প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিপন্ন করছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ শাহ আলমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

চাঁদপুর সদর ও ফরিদগঞ্জে মাদক’সহ ৩ কারবারি গ্রেপ্তার

হাজীগঞ্জে ৮২ লক্ষ টাকার প্রতারণা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহ আলম গ্রেপ্তার

Update Time : 09:25:24 pm, Tuesday, 22 July 2025

 

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে দীর্ঘদিন পলাতক থাকা ৮২ লক্ষ টাকার প্রতারণা ও চেক ডিজঅনার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোঃ শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুকিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত মুনসুর আহমদের ছেলে।

গত ২০ জুলাই রাতের দিকে হাজীগঞ্জ থানার এএসআই (নিঃ) মোঃ মোস্তফা মাজেদ বিন রশিদ সঙ্গীয় ফোর্সসহ মুকিমাবাদে অবস্থিত নিজ বাসা থেকে  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন।

শাহ আলমের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার আইনের (N.I. Act 138) আওতায় মোট ৫টি মামলা রয়েছে। আদালত প্রতিটি মামলায় তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৭২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, সিআর নং-৫৪৮/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৮২/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১১,০০,০০০/- (এগারো লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড,সিআর নং-৫৪৫/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৪৮/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড। সিআর নং-৫৪৭/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৪৭/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ৩০,০০,০০০/- (ত্রিশ লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড। সিআর নং-৫৪৯/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৮০/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১১,০০,০০০/- (এগারো লক্ষ) টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড। সিআর নং-৫৪৬/২৩ (হাজীঃ), এসসি নং-৯৮৩/২৩, ধারা-এনআইএ্যাক্ট ১৩৮ সংক্রান্তে ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা ও নগদ ১০,০০,০০০ টাকা অর্থ দন্ড এবং ০১ (এক) বছর বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহ আলম দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যবসায়িক লেনদেনের আড়ালে বহু ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করতেন। অনেকেই তার কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা পেয়েও পরবর্তীতে চেক ফেরত পাওয়ার মাধ্যমে প্রতারিত হন।

একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ করেন, “শাহ আলম খুব বিশ্বাসযোগ্য ভান করে আমাদের সঙ্গে বড় বড় আর্থিক চুক্তিতে যায়। কিন্তু সময়মতো টাকা ফেরত না দিয়ে আমাদের নামে চেক ইস্যু করে, যেগুলো ব্যাংকে ডিজঅনার হয়।”

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে এর আগেও মৌখিক ও লিখিতভাবে একাধিক অভিযোগ থানায় জমা পড়ে, তবে আদালতের পর্যায়ে এসে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়।

শাহ আলমের গ্রেপ্তারে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা। এক ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে আইনি লড়াই করছি। আজ পুলিশের এমন পদক্ষেপে আমরা সাহস পাচ্ছি যে, আইনের ওপর এখনও ভরসা রাখা যায়।”

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। জনগণের আইনগত অধিকার নিশ্চিত করা এবং আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করাই আমাদের অঙ্গীকার।”

তিনি আরও বলেন, “যারা প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিপন্ন করছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ শাহ আলমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।