ঢাকা 12:41 am, Thursday, 6 November 2025

প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সিহিরচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:14:46 pm, Thursday, 18 May 2023
  • 49 Time View

ত্রিনদী ডেস্ক:

চল্লিশ বছরেরও অধিক পুরানো সিহিরচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। হাজীগঞ্জ উপজেলার ৩নং কালচোঁ ইউনিয়নের সিহিরচোঁ গ্রামে অবস্থিত এই পুরানো বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারী, খামখেয়ালিপনা, দায়িত্বহীনতা এবং অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়টি বলতে গেলে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এক সময় কয়েক’শ শিক্ষার্থীর কলরবে বিদ্যালয়টি মুখরিত থাকলেও বর্তমানে এটি নিভু নিভু অবস্থায় আছে। গত শিক্ষাবছরে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা একশর মতো থাকলেও এ বছর মাত্র পঞ্চাশে এসে ঠেকেছে।

এর প্রধান কারণ হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলির বিদ্যালয়ের কার্যক্রম, পড়াশোনা এবং এর উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে মনোযোগী না হয়ে এলাকার সালিস, দরবার, জমি বেচা-কেনার দালালি, বিয়ের ঘটকালিসহ আরো নানা অশোভন, অহেতুক কাজে তিনি সময় ব্যয় করেন। বিদ্যালয়ের দিকে তার কোনো নজর নেই। বিদ্যালয়ের জন্য দানকৃত ৩৩ শতক জমির অধিকাংশই বলতে গেলে বর্তমানে বেহাত অবস্থায় আছে। পুরো জমির কোনো হদিস নেই। অথচ এসব দেখে শুনে রাখার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। তার বাবা এ বিদ্যালয়ের ভূমিদাতাদের একজন। আর এ কারণেই তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না এবং কোনো নিয়মনীতির ধার ধারে না। এলাকার বিশিষ্ট দানবীর শিল্পপতি এবং দেশের খ্যাতিমান রপ্তানিকারক সিআইপি জয়নাল আবেদীন মজুমদারের দানকৃত ১২শতক জমির উপর স্কুলটির বর্তমান ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমানে স্কুলটির সম্পত্তি বলতে দৃশ্যমান এতটুকুই। বাদবাকি সম্পত্তির কোনো হদিস নেই। এমনকি স্কুলটির সম্পত্তি প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলির দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী এবং স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চিঠির ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদনও দেয়া আছে। সে মর্মে প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় উপ-পরিচালক ড. মোঃ শফিকুল ইসলাম তাকে এই বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র বদলির জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) বরাবর চিঠিও দিয়েছেন। ওই চিঠিতে তার বিরুদ্ধে যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয় তা হচ্ছে-

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১৫নং সিহির চৌ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলী-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি), হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন (কপি সংযুক্ত) এবং উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন ও সূত্রোক্ত স্মারকের পত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলী দীর্ঘ প্রায় ৩৩ বছর একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় অনেকটা খামখেয়ালীভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। তিনি দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে থাকায় বিদ্যালয় পরিচালনা ও যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া একক কর্তৃত্ব দেখানোর চেষ্টা করেন মর্মে সূত্রোক্ত স্মারকে উল্লেখ রয়েছে।

তাছাড়া উক্ত শিক্ষক জমি জমা পরিমাপ ও বিচার সালীশের কাজে থাকলে অনেক ক্ষেত্রে স্কুলের পাঠদান বিরত রেখে তিনি উক্ত কাজে অংশগ্রহণ করেন এবং এতে বিদ্যালয় পাঠদান ও পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে মর্মে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এ অবস্থায় উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে উক্ত প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলী পূর্বক একজন দক্ষ প্রধান শিক্ষক পদায়ন করে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার বিষয়ে জেলা প্রশাসক, চাঁদপুর এর মতামত রয়েছে (কপি সংযুক্ত)।

এমতাবস্থায় জেলা প্রশাসক, চাঁদপুর সূত্রোক্ত স্মারকের পত্র মোতাবেক চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১৫ নং সিহির চৌ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলী কে একই উপজেলার ভিতরে অন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে বদলীর অনুমতি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র মহোদয়ের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় কার্যার্থে এতদসঙ্গে সবিনয়ে প্রেরণ করা হলো।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন মজুমদার (সিআইপি)-এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্কুলের যে কোনো বিষয় প্রধান শিক্ষক একক সিদ্ধান্ত নেন। আমার সাথে যোগাযোগ করেন না এবং কোনো মিটিংয়ে আমাকে জানানো হয় না। সে তার ইচ্ছামতো কাজ করে চলেছে। আমি স্কুলে জুম মিটিংয়ের জন্য সেটআপ করে দিয়েছি। সেটি ব্যবহার করেও চাইলে আমাকে মিটিংয়ে সংযুক্ত করতে পারেন কিন্তু তিনি তা করেন না। আপনারা স্কুলের রেজ্যুলেশন খাতায় দেখবেন দীর্ঘদিন যাবৎ আমার কোনো স্বাক্ষর নেই। কারণ আমাকে বাদ রেখেই উনি মিটিং করেছেন। তার বাবা-চাচা স্কুলের জন্য ভূমি দান করেছেন এবং এ কারণেই সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার নিয়োগ হয়। সে কারণে নিয়োগের পর থেকেই স্কুলটাকে তিনি তার নিজস্ব সম্পত্তি মনে করেন। এজন্য সে অন্য কারো সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা করেন না। কারো কোনো মতামত নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না এ শিক্ষক।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের সকল সম্পত্তি দেখে রাখার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। যদি তিনি কোনো কাজে সমস্যা দেখেন আমাদেরকে জানালে আমরা সহযোগিতা করবো। আমি বিষয়টি যেহেতু অবগত হয়েছি তা অবশ্যই খতিয়ে দেখব।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাজিগঞ্জ তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। সে তদন্ত প্রতিবেদনটি বর্তমানে ডিজি অফিসে আছে।

উল্লেখ্য, স্কুলের ভূমির পরিমাণ ৪৫শতক হলেও হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের রেকর্ড বইয়ে লিপিবদ্ধ আছে ৩৬ শতক এবং ভূমি অফিসের রেকর্ড বুকে লিপিবদ্ধ আছে ৩৫ শতক। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো হদিস নেই। (চাঁদপুরকণ্ঠ)

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফরিদগঞ্জে তৃতীয় দিনের মতো বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত এম এ হান্নানের সমর্থকদের বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও আগুন

প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সিহিরচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

Update Time : 07:14:46 pm, Thursday, 18 May 2023

ত্রিনদী ডেস্ক:

চল্লিশ বছরেরও অধিক পুরানো সিহিরচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। হাজীগঞ্জ উপজেলার ৩নং কালচোঁ ইউনিয়নের সিহিরচোঁ গ্রামে অবস্থিত এই পুরানো বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারী, খামখেয়ালিপনা, দায়িত্বহীনতা এবং অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়টি বলতে গেলে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এক সময় কয়েক’শ শিক্ষার্থীর কলরবে বিদ্যালয়টি মুখরিত থাকলেও বর্তমানে এটি নিভু নিভু অবস্থায় আছে। গত শিক্ষাবছরে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা একশর মতো থাকলেও এ বছর মাত্র পঞ্চাশে এসে ঠেকেছে।

এর প্রধান কারণ হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলির বিদ্যালয়ের কার্যক্রম, পড়াশোনা এবং এর উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে মনোযোগী না হয়ে এলাকার সালিস, দরবার, জমি বেচা-কেনার দালালি, বিয়ের ঘটকালিসহ আরো নানা অশোভন, অহেতুক কাজে তিনি সময় ব্যয় করেন। বিদ্যালয়ের দিকে তার কোনো নজর নেই। বিদ্যালয়ের জন্য দানকৃত ৩৩ শতক জমির অধিকাংশই বলতে গেলে বর্তমানে বেহাত অবস্থায় আছে। পুরো জমির কোনো হদিস নেই। অথচ এসব দেখে শুনে রাখার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। তার বাবা এ বিদ্যালয়ের ভূমিদাতাদের একজন। আর এ কারণেই তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না এবং কোনো নিয়মনীতির ধার ধারে না। এলাকার বিশিষ্ট দানবীর শিল্পপতি এবং দেশের খ্যাতিমান রপ্তানিকারক সিআইপি জয়নাল আবেদীন মজুমদারের দানকৃত ১২শতক জমির উপর স্কুলটির বর্তমান ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমানে স্কুলটির সম্পত্তি বলতে দৃশ্যমান এতটুকুই। বাদবাকি সম্পত্তির কোনো হদিস নেই। এমনকি স্কুলটির সম্পত্তি প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলির দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী এবং স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চিঠির ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদনও দেয়া আছে। সে মর্মে প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় উপ-পরিচালক ড. মোঃ শফিকুল ইসলাম তাকে এই বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র বদলির জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) বরাবর চিঠিও দিয়েছেন। ওই চিঠিতে তার বিরুদ্ধে যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয় তা হচ্ছে-

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১৫নং সিহির চৌ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলী-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি), হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন (কপি সংযুক্ত) এবং উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন ও সূত্রোক্ত স্মারকের পত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলী দীর্ঘ প্রায় ৩৩ বছর একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় অনেকটা খামখেয়ালীভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। তিনি দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে থাকায় বিদ্যালয় পরিচালনা ও যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া একক কর্তৃত্ব দেখানোর চেষ্টা করেন মর্মে সূত্রোক্ত স্মারকে উল্লেখ রয়েছে।

তাছাড়া উক্ত শিক্ষক জমি জমা পরিমাপ ও বিচার সালীশের কাজে থাকলে অনেক ক্ষেত্রে স্কুলের পাঠদান বিরত রেখে তিনি উক্ত কাজে অংশগ্রহণ করেন এবং এতে বিদ্যালয় পাঠদান ও পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে মর্মে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এ অবস্থায় উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে উক্ত প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলী পূর্বক একজন দক্ষ প্রধান শিক্ষক পদায়ন করে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার বিষয়ে জেলা প্রশাসক, চাঁদপুর এর মতামত রয়েছে (কপি সংযুক্ত)।

এমতাবস্থায় জেলা প্রশাসক, চাঁদপুর সূত্রোক্ত স্মারকের পত্র মোতাবেক চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১৫ নং সিহির চৌ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলফিকার আলী কে একই উপজেলার ভিতরে অন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে বদলীর অনুমতি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র মহোদয়ের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় কার্যার্থে এতদসঙ্গে সবিনয়ে প্রেরণ করা হলো।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন মজুমদার (সিআইপি)-এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্কুলের যে কোনো বিষয় প্রধান শিক্ষক একক সিদ্ধান্ত নেন। আমার সাথে যোগাযোগ করেন না এবং কোনো মিটিংয়ে আমাকে জানানো হয় না। সে তার ইচ্ছামতো কাজ করে চলেছে। আমি স্কুলে জুম মিটিংয়ের জন্য সেটআপ করে দিয়েছি। সেটি ব্যবহার করেও চাইলে আমাকে মিটিংয়ে সংযুক্ত করতে পারেন কিন্তু তিনি তা করেন না। আপনারা স্কুলের রেজ্যুলেশন খাতায় দেখবেন দীর্ঘদিন যাবৎ আমার কোনো স্বাক্ষর নেই। কারণ আমাকে বাদ রেখেই উনি মিটিং করেছেন। তার বাবা-চাচা স্কুলের জন্য ভূমি দান করেছেন এবং এ কারণেই সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার নিয়োগ হয়। সে কারণে নিয়োগের পর থেকেই স্কুলটাকে তিনি তার নিজস্ব সম্পত্তি মনে করেন। এজন্য সে অন্য কারো সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা করেন না। কারো কোনো মতামত নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না এ শিক্ষক।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের সকল সম্পত্তি দেখে রাখার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। যদি তিনি কোনো কাজে সমস্যা দেখেন আমাদেরকে জানালে আমরা সহযোগিতা করবো। আমি বিষয়টি যেহেতু অবগত হয়েছি তা অবশ্যই খতিয়ে দেখব।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাজিগঞ্জ তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। সে তদন্ত প্রতিবেদনটি বর্তমানে ডিজি অফিসে আছে।

উল্লেখ্য, স্কুলের ভূমির পরিমাণ ৪৫শতক হলেও হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের রেকর্ড বইয়ে লিপিবদ্ধ আছে ৩৬ শতক এবং ভূমি অফিসের রেকর্ড বুকে লিপিবদ্ধ আছে ৩৫ শতক। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো হদিস নেই। (চাঁদপুরকণ্ঠ)