জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ডলারের দাম বেড়েই চলছে। টাকা দিয়েও ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে টাকার ভ্যালু। মূল্যস্ফীতির কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। দেশে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট চলছে। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের দুই দিনের রংপুর সফরে এসেছেন। সার্কিট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এয়ারলাইনস কোম্পানিগুলো টিকিট বিক্রি করে দেশে টাকা নিতে পারছে না ডলারের অভাবে। ইমপোর্ট করতেই পারছে না সরকার। মিল-ফ্যাক্টরিগুলো চলতে পারছে না। মানুষ বেকার হয়ে যাচ্ছেন। অসহনীয় পরিবেশ থেকে মানুষ মুক্তি চান।
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফলে সাংবাদিকেরা আগের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়াটা অন্যায়। মানুষ জানতে চায়। বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণের সম্পদ। সেগুলো সরকার ঠিকঠাকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করছে কি না, সে বিষয়ে জনগণকে জানতে হবে। আর জনগণ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে। বিনিয়োগ আসছে না। আমরা যে পরিমাণ খরচ করছি, তার থেকে অনেক কম প্রবেশ করছে। আমরা কি কষ্ট করছি, ভবিষ্যতে আরও কী হবে—এগুলো সবাইকে জানাতে হবে। সরকার এগুলো গোপন করছে। গোপন করার অর্থ আপনারা জনগণের স্বার্থবিরোধী কিছু করছেন। না জানানোটা অপরাধ।’
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু সম্প্রতি ঢাকা সফর করেছেন। এ বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘ডোনাল্ড লু সফরে এসে বললেন, “আমেরিকান অনেক কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করছে। কিন্তু তারা প্রফিট নিয়ে যেতে পারছে না দেশে।” এসব কারণে দেশে কেউ আর বিনিয়োগ করতে চাইবে না। তা ছাড়া সরকার প্রচুর লুটপাট করছে। বিদ্যুৎ আর গ্যাসে লুটপাট হয়েছে। বিদেশে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে। যার কারণে আজকের এ অবস্থা।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের অনেক কথাই বলছেন। আমি ওনাকে শ্রদ্ধা করি। আওয়ামী লীগ বলছে, তারা অনেক শক্তিশালী হয়েছে। আসলে এই শক্তি কি দানবীয়, নাকি শুভ শক্তি? দানবীয় শক্তি যদি হয়, তা আমরা পছন্দ করি না। জনগণ পছন্দ করে না।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে। দল হিসেবে তারা রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা হারিয়েছে। এখন তারা কিছু পেশাজীবী আর সরকারি কর্মকর্তা নিয়ে দল করছে। আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের কথা ভাবতে। তারা কিছু হাস্যকর ও অপ্রয়োজনীয় কিছু করছে, যার কারণে আওয়ামী লীগ এখন দেশের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আলাউদ্দিন মিয়া; রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর; কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন; কেন্দ্রীয় সদস্য লোকমান হোসেন প্রমুখ।