শিরোনাম:
জুময়ার খুৎবায় সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান : ইমামকে চাকুরিচ্যুত করার চেষ্টার অভিযোগ! র‌্যাবের অভিযানে ১১৯ কেজি গাঁজা’সহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি-কচুয়ায় ডাকাত আতঙ্ক নির্ঘুম রাত চাঁদপুর সদরের চান্দ্রায় কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা গর্ভবতী শাশুড়ি’কে বিয়ে করে লজ্জার হাত থেকে বাঁচলেন জামাই হাজীগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের পদোন্নতিপ্রাপ্ত ম্যানেজার আমিনুল ইসলামকে সংবর্ধনা প্রদান শাহরাস্তিতে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থীদের সকর কার্যক্রম বন্ধ টোরাগড়-বড়কুল সেতু লাগোয়া:হাজীগঞ্জে সরকারি জায়গা দখল করে দোকানঘর ও দেয়াল নির্মাণ! হাজীগঞ্জে সাইকেল থেকে পড়ে কিশোরের মৃত্যু

জাল সনদে পুলিশে চাকরি নিয়ে কামিয়েছেন বিপুল অর্থ, এখন ধরার পড়ায় ভয়ে স্বেচ্ছায় অবসর

ত্রিনদী অনলাইন
ত্রিনদী অনলাইন
আপডেটঃ : রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪

জাল সনদে পুলিশে চাকরি নিয়ে বিভিন্ন জেলায় ১৭ বছর ৫ মাস ১৬ দিন চাকরি করেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আল মামুন। কনস্টেবল থেকে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হোন। তবে জাল সনদে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে অক্ষম রোগী সেজে পুলিশের চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। এ সময় পুলিশ বিভাগ থেকে অবসরকালীন আর্থিক সব সুবিধা নিয়েছেন।

এদিকে নিজেকে অক্ষম ঘোষণা করে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসার নিলেও এখন তিনি রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী। এক অনুসন্ধানের ফেরতপত্রে ১৯ মে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম ও তথ্য কর্মকর্তা এসএম গোলাম আজম নিশ্চিত করেন, ২০০১ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় এ নামের কোনো শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ ও উত্তীর্ণের কোনো রেকর্ড নেই বোর্ডের সংরক্ষিত রেকর্ডপত্রে। অথচ এ সনদ দেখিয়েই তিনি ২০০৩ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি নিয়েছিলেন। এ পুলিশ কর্মকর্তা চাকরিকালে কামিয়েছেন বিপুল অর্থ। দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তুলেছেন বিপুল সম্পদ। তার বেপরোয়া চালচলনে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। তবে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেন না।

জানা গেছে, আল মামুনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের শ্যামপুর ইউনিয়নের উমরপুরে। বাবা মফিজ উদ্দিন শ্যামপুর ইউপির ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। আল মামুন এখন আওয়ামী লীগ করেন। ২১ মে অনুষ্ঠিত শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে তিনি ভাইস-চেয়ারম্যান পদে টিয়া পাখি প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। মামুন মনোনয়নপত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাশ উল্লেখ করেন। ৩০ এপ্রিল জনৈক মোহা. ওলিউল্লাহ রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগে দাবি করেন তার এসএসসির সনদ জাল। তবে রিটার্নিং অফিসার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি।

আরও জানা গেছে, মামুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। চাকরিতে যোগদানকালে তিনি গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ী আল ইসলাহ ইসলামী একাডেমি থেকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০০১ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে উত্তীর্ণের সনদ প্রদর্শন করেন। এদিকে ৬ মে এ প্রতিবেদককে আল ইসলাহ ইসলামী একাডেমির প্রধান শিক্ষক তারেক আহমেদ অনিক রেকর্ডপত্র যাচাই করে নিশ্চিত করেন ২০০১ সালে তার প্রতিষ্ঠান থেকে এ নামের কোনো শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় নেয়নি। এ প্রশংসাপত্রটিও তারা দেননি। এদিকে পুলিশ বিভাগের সার্ভিস রেকর্ড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, খুলনা পুলিশ লাইনে কনস্টেবল হিসাবে চাকরি জীবন শুরু করেন আল মামুন। এরপর ২০১৭ সালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে পদোন্নতি লাভ করেন। বিভিন্ন জেলায় চাকরির পর ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্বেচ্ছায় অবসার নেন। জানা গেছে, চাকরি জীবনে আল মামুন জাতিসংঘের সুদান মিশনে একবার দায়িত্ব পালন করেন।

শিবগঞ্জের শ্যামপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আসাদুজ্জামান ভোদন জানান, মামুনকে কখনো তারা পুলিশের পোশাকে দেখেননি। ১০ বছরের বেশি সময় তাকে নিজ এলাকা শিবগঞ্জে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় দেখা গেছে। শিবগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামুন নিজেকে পুলিশের একজন প্রভাবশালী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বডিগার্ড কাম পিএস পরিচয় দিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাজে নিয়মিত হস্তক্ষেপ করেন, বিশেষ করে পুলিশের কাজে। মোটরসাইকেলের সামনে পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে মামুনকে শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাউন্ড দিয়ে বেড়াতে দেখেছেন এলাকার মানুষ।

পুলিশের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আল মামুন পোস্টিং হওয়া থানা ফাঁড়িতে কখনো সশরীরে চাকরি করেননি। বরং তার এলাকার ওই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা যেখানে বদলি হয়েছেন মামুন তার সঙ্গেই থেকেছেন। সূত্র মতে, কোন থানায় কোন ওসি পোস্টিং যাবেন কাকে কোথায় বদলি করা হবে-১০ বছর মামুন এসবই করেছেন এবং চাকরিতে না থেকে এখনো সেই কাজ করছেন। ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ কর্মকর্তারা থানা ফাঁড়িতে পোস্টিং নিতে এখনো মামুনেরই শরণাপন্ন হন।

জানা গেছে, নির্বাচনি হলফনামায় মামুন টিনশেড বাড়ির কথা বললেও গ্রামের বাড়ি উমরপুরে তৈরি পাকা বাড়ির কথা গোপন করেছেন। রাজশাহী মহানগরীর বহরমপুর এলাকায় পাঁচ কাঠা জমির ওপর থাকা কয়েক কোটি টাকার বাড়ির তথ্যও চেপে গেছেন। মামুন এলাকায় কিনেছেন জমি ও বাগান। সোনামসজিদ বন্দর এলাকায় জমি কিনে করেছেন কয়লা ও পাথরের ইয়ার্ড। তিনি আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্স করে ভারত থেকে পাথর আমদানি করেন। হলফনামায় তিনি বছরে ১২ লাখ টাকা আয় করেন বলে দাবি করেছেন। উত্তরা ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ টাকা ঋণ থাকার কথা হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। আয়ের উৎস দেখিয়েছেন ব্যবসা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আল মামুন বলেন, তার এসএসসির সনদ জাল নয়। তিনি আল ইসলাহ ইসলামী একাডেমি থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। পরে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি করেন। পুলিশে চাকরি করতে অক্ষম ঘোষণা করে স্বেচ্ছা অবসর ও অবসরকালীন সুবিধা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই সময় আমি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ কারণে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছি। হলফনামায় রাজশাহীর বাড়ির কথা গোপন করা প্রসঙ্গে মামুনের দাবি, রাজশাহীতে তার বাড়ি নেই। তিনি সম্প্রতি উপজেলা নির্বাচন করেছেন। তাই প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে এসব রটাচ্ছেন। তিনি অবৈধভাবে কোনো উপার্জন করেননি। যুগান্তর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুক

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১