ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কচুয়ায় এক ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও নিয়মিত অফিসে না আসার অভিযোগ

ছবি-ত্রিনদী

কচুয়া উপজেলার ১নং সাচার ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বিজয় কৃষ্ণ শীলের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের সাথে দুর্ব্যবহার, নিয়মিত দেরিতে অফিসে আসাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা তার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১ দিকে সাচার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অন্তত ১০ জন সেবাগ্রহীতা সচিবের কক্ষের উত্তর পাশে উদ্যোক্তার রুমে সচিবের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সচিব বিজয় কৃষ্ণ শীল বেলা ১১টা ৪৪ মিনিটে মোটরসাইকেলে পরিষদে এসে পৌঁছান।

সেবাগ্রহীতারা জানান,সচিব প্রতিদিন দেরিতে ইউনিয়ন পরিষদে আসেন। ফলে তাদের দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন এবং সরকারি নিয়ম-কানুন না মেনে নিজের খেয়ালখুশিমতো চলেন। সচিবের এই কর্মকান্ড ও নির্দিষ্ট সময়ে সেবা না পেয়ে সেবাগ্রহিতারা অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিষদ থেকে চলে যান ।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একজন সেবা গ্রহীতা বলেন,”আমি দুই ঘণ্টা আগে এসেছি, কিন্তু সচিবের দেখা পাইনি। এর আগেও একবার এসে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি কোনো নিয়ম মানেন না ।পরিষদের সেবা গ্রহীতাদের নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ, চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন ও ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্সসহ যেকোনো কাগজপত্র স্বাক্ষর জন্য ওনার কাছে গেলেও নির্দিষ্ট ফ্রি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান (প্রশাসক) তিনি প্রতিদিন উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পরিষদে নির্দিষ্ট সময় আসলেও এবং কাগজপত্র স্বাক্ষর দিলেও সচিবের জন্য স্বাক্ষর এর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। উনাকে কেউ কিছু বললে সেবা গ্রহীতাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকেন ।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক সাচার বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান,”আমি একজন ব্যবসায়ী। তিন দিন ধরে সচিবের জন্য ঘুরছি। তিনি ঠিকমতো অফিসে আসেন না। আমরা এমন লোককে চাই না।

ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যরা বলেন, ইউপি সচিব দেরিতে আসলেই নির্দিষ্ট সময় অফিস শেষ করে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত সময় দেন অফিসে।

নিয়মিত অফিসে না আসা কারণ জানতে চাইলে ইউপি সচিব বিজয় কৃষ্ণ শীল বলেন, আমার বাচ্চা অসুস্থ ছিলো এবং মোটরসাইকেল নষ্ট হয়েছে এজন্য আমার আসতে দেরি হয়েছে।
নিয়মিত দেরি আসার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কাজ থাকে, ওইগুলো শেষ করে আমি পরিষদে আসতে একটু দেরি হয়।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (প্রশাসন) জহিরুল ইসলাম বলেন, ইউপি সচিবকে অনেকবার সতর্ক করা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিয়মিত অফিসে আসার জন্য।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে না পড়েন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মহান বিজয় দিবস পালনকল্পে হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের প্রস্তুতি সভা

কচুয়ায় এক ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও নিয়মিত অফিসে না আসার অভিযোগ

Update Time : ১০:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

কচুয়া উপজেলার ১নং সাচার ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বিজয় কৃষ্ণ শীলের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের সাথে দুর্ব্যবহার, নিয়মিত দেরিতে অফিসে আসাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা তার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১ দিকে সাচার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অন্তত ১০ জন সেবাগ্রহীতা সচিবের কক্ষের উত্তর পাশে উদ্যোক্তার রুমে সচিবের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সচিব বিজয় কৃষ্ণ শীল বেলা ১১টা ৪৪ মিনিটে মোটরসাইকেলে পরিষদে এসে পৌঁছান।

সেবাগ্রহীতারা জানান,সচিব প্রতিদিন দেরিতে ইউনিয়ন পরিষদে আসেন। ফলে তাদের দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন এবং সরকারি নিয়ম-কানুন না মেনে নিজের খেয়ালখুশিমতো চলেন। সচিবের এই কর্মকান্ড ও নির্দিষ্ট সময়ে সেবা না পেয়ে সেবাগ্রহিতারা অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিষদ থেকে চলে যান ।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একজন সেবা গ্রহীতা বলেন,”আমি দুই ঘণ্টা আগে এসেছি, কিন্তু সচিবের দেখা পাইনি। এর আগেও একবার এসে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি কোনো নিয়ম মানেন না ।পরিষদের সেবা গ্রহীতাদের নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ, চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন ও ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্সসহ যেকোনো কাগজপত্র স্বাক্ষর জন্য ওনার কাছে গেলেও নির্দিষ্ট ফ্রি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান (প্রশাসক) তিনি প্রতিদিন উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পরিষদে নির্দিষ্ট সময় আসলেও এবং কাগজপত্র স্বাক্ষর দিলেও সচিবের জন্য স্বাক্ষর এর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। উনাকে কেউ কিছু বললে সেবা গ্রহীতাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকেন ।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক সাচার বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান,”আমি একজন ব্যবসায়ী। তিন দিন ধরে সচিবের জন্য ঘুরছি। তিনি ঠিকমতো অফিসে আসেন না। আমরা এমন লোককে চাই না।

ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যরা বলেন, ইউপি সচিব দেরিতে আসলেই নির্দিষ্ট সময় অফিস শেষ করে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত সময় দেন অফিসে।

নিয়মিত অফিসে না আসা কারণ জানতে চাইলে ইউপি সচিব বিজয় কৃষ্ণ শীল বলেন, আমার বাচ্চা অসুস্থ ছিলো এবং মোটরসাইকেল নষ্ট হয়েছে এজন্য আমার আসতে দেরি হয়েছে।
নিয়মিত দেরি আসার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কাজ থাকে, ওইগুলো শেষ করে আমি পরিষদে আসতে একটু দেরি হয়।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (প্রশাসন) জহিরুল ইসলাম বলেন, ইউপি সচিবকে অনেকবার সতর্ক করা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিয়মিত অফিসে আসার জন্য।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে না পড়েন।