পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুরোধে হাজীগঞ্জে অর্ধশত নারী অভিভাবকের অংশগ্রহণে বসুন্ধরা শুভসংঘের সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ, উপজেলা শাখার আয়োজনে সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের বাকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রৌশন আরা বেগমের সভাপতিত্বে ও বসুন্ধরা শুভসংঘ উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান টুটুলের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন, শুভসংঘের সহ-সভাপতি জুয়েল রানা তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন ফরাজী, সহকারি শিক্ষক মর্জিনা বেগম, কামরুল ইসলামসহ অর্ধশত অভিভাবক।
সভার সভাপতির বক্তব্যে রৌশন আরা বেগম বলেন, শিশুর হাঁটা থেকে শুরু করে সাঁতার শিখানো পর্যন্ত প্রতিটা মা তার সন্তানকে চোখে চোখে রাখতে হবে। একটু ভুল হলে এ ভুলের মাসুল অভিভাবক হিসেবে আপনাদেরকে দিতে হবে। সন্তানের প্রতি একটু খেয়াল রাখলে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমে যাবে। আমরা দেখেছি, খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে বেশিরভাগ শিশু মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বসুন্ধরা শুভসংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ তাঁর বক্তব্যে বলেন, হাজীগঞ্জে প্রতিবছর প্রায় শতাধিক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এর মধ্যে গত ৭ মাসে ৫১ শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ সকল শিশুদের সবার বয়স দেড় বছর থেকে ৫ বছরের মধ্যে। বাবারা কর্মের কারণে বাড়ির বাইরে থাকে আর মায়েরা বাড়িতেই থাকেন। তাই মায়েদের সবচে বেশি সচেতন থাকতে হবে।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ত্রিনদী পত্রিকার সম্পাদক মহিউদ্দিন আল আজাদ বলেন, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র যখন শিশুদের লাশগুলো দেখি তখন নিজেকে স্থির রাখা যায় না। বাবা-মা ও অভিভাবকদের সবসময় শিশুদের পানির কাছাকাছি একা যেতে না দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। স্থানীয়ভাবে সভা, মসজিদে ঘোষণা, স্কুলে ক্লাস, লিফলেটের মাধ্যমে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সচেতন করতে হবে।
সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান টুটুল বলেন, বাড়ির আশপাশের পুকুর, খাল, ডোবা, কূপ ও পানির ট্যাংক ঢেকে রাখা বা বেড়া দেওয়া যেতে পারে। ছোট শিশুদের জন্য বাড়ির আঙিনায় খেলার জায়গা নির্ধারণ করা, যা পানির কাছাকাছি নয়, ছোট শিশুদের কখনোই পানির কাছাকাছি একা ফেলে রাখা যাবে না। ঘরের ভেতরে বালতি বা ড্রামে পানি থাকলেও ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
তিনি বলেনম, দূর্ঘটনা ঘটে গেলে পানি থেকে তোলার পর অবিলম্বে শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস ও পালস্ পরীক্ষা করতে হবে। প্রাথমিক সিপিআর (CPR) জানা থাকলে তা প্রয়োগ করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সভায় বসুন্ধরা শুভসংঘের অন্যান্য সদস্য, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।