বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। রোববার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ মহোৎসব। বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ২ অক্টোবর পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবের শেষ হবে।
এবছর জেলায় ২২৪ টি পূজামন্ডপ হয়েছে। তারমধ্যে এই প্রথম সদরে শ্রী শ্রী মহাপ্রভু নীলাচল মন্দির প্রাঙ্গণে শ্রী পুষ্পাঞ্জলি সংঘের পূজা করা হচ্ছে।
পুজা পরিষদ কমিটির সভাপতি সুধীর চন্দ্র পর্বত ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. পলাশ মজুমদার জানায়, আসলে দীর্ঘদিন যাবত আমাদের আকুতি ছিলো মায়ের পুজা করবো সকলকে নিয়ে, এটাই হচ্ছে আমাদের উদ্দেশ্য। আমরা মায়ের কাছে সকলের মঙ্গল কামনা করছি। পুজা উদযাপন করতে আমরা প্রশাসনিক সব ধরণের সহায়তা পাচ্ছি। আমরা আশাকরি ভবিষ্যতেও আমরা সকলের সহায়তা নিয়ে আরো বড়ভাবে যেন পুজা উদযাপন করতে পারি।
কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরো জানান, আমরা পুজা উদযাপন উপলক্ষে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প, অসহায়দের জন্যে বস্ত্র বিতরণ, চন্ডী পাঠ, ওলু ধ্বনি ও শঙ্খ প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।
এদিকে শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে পুরো জেলায় যেন উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। টানা চার দিনের সরকারি ছুটি উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এদিকে জেলার পূজামণ্ডপগুলোতে প্রতিমা, মণ্ডপ নির্মাণ ও আলোকসজ্জাসহ সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
শাস্ত্রকারদের মতে, দুর্গা ভক্তদের বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা ও যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করেন। আরেক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন এবং তখন ভক্তরা তাকে ডাকলে তিনি কষ্ট দূর করেন।
‘মহাচণ্ডী’তে উল্লেখ আছে, ত্রেতা যুগে ভগবান রামচন্দ্র রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে শক্তি বৃদ্ধির আশায় শরৎকালে দেবী মহামায়ার পূজা করেছিলেন। এরপর তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করে সীতাকে উদ্ধার করেন ও রাবণকে পরাজিত করেন। সেই থেকে প্রতিবছর শরৎকালে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গোৎসব পালন করে আসছেন।
এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হয়েছে গজে (হাতি) এবং প্রস্থান হবে দোলায় (পালকি)। শাস্ত্রমতে, গজে আগমন শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলার প্রতীক। তবে দোলায় প্রস্থানকে অশুভ ধরা হয়, যা মহামারী বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে।