টাইব্রেকারে স্পেনকে কাঁদিয়ে মরক্কোর ইতিহাস। আফ্রিকার দেশটির জয় ৩-০ গোলে স্পেন বিদায় নিল টুর্নামেন্ট থেকে। এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময়ে দুদলের কেউ গোল করতে না পারলে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। শুটআউটের প্রথমটিতেই গোল করে মরক্কো। পরে স্পেনের পাবলো সারাবিয়ার নেয়া শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। মরক্কোর হয়ে দ্বিতীয় শট নিতে আসেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা হাকিম, সফলও হন তিনি। স্পেনের দ্বিতীয় শট ফিরিয়ে দেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। পরে মরক্কোর শট ফিরিয়ে দিয়ে স্পেনের আশা বাঁচিয়ে রাখেন উনাই সিমন।
এর আগে ম্যাচের ১১ মিনিটে প্রথম গোলের উদ্দেশ্যে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি-কিক নেয় মরক্কো। তবে আশরাফ হাকিমির জোরালো শটটি থাকেনি লক্ষ্যে। তিন মিনিট পর নুসাইর মাজরাউয়ির ক্রস স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন গ্লাভসবন্দি করে দলকে বিপদমুক্ত করেন। ২১ মিনিটে ভীতি ছড়িয়েছিল হাকিম জিয়েশ। একক নৈপুণ্যে মাঝ মাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে তিনি ঢুকে পড়েন স্প্যানিশ রক্ষণদুর্গে। তবে আয়মারিক লাপোর্তের বাধায় তিনি গোলের উদ্দেশে শট নিতে পারেননি। তিন মিনিট পর উল্টো গোল হজম করতে বসেছিল মরক্কো। সতীর্থের ক্রস দখলে নিয়ে মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনোকে পরাস্ত করে গোলের উদ্দেশে শট নেন গাভি। তার শটটি বাধা পায় বারে। ফিরতি বলে শট নেন ফেরান তোরেস। এবার বাধা হয়ে দাঁড়ান মরক্কোর ডিফেন্ডাররা।
৩৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় থেকে বল কেড়ে নিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন নুসাইর মাজরাউয়ি। কোনো রকম ঠেকিয়ে দিয়ে দলকে গোল হজম থেকে উদ্ধার করেন সিমন। অন্যদিকে টিকিটাকা ফুটবল খেলতে থাকা লুইস এনরিকের শিষ্যরা বার বার আক্রমণে উঠলে গোলের উদ্দেশ্যে তাদের শট নিতে দেননি হাকিমিরা। গোলশূন্য ড্র নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল। বিরতির পরও স্পেন বার বার আটকা পড়েছে মরক্কোর রক্ষণদুর্গে। ৫৫ মিনিটে এনরিকের শিষ্যরা প্রথম অন টার্গেট শট নেয়। তবে সেটা ভেদ করতে পারেনি মরক্কোর জাল। ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেয়া অ্যাসেনসিও’র জোরালো ফ্রি-কিক শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন বুনো।
৮০ মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন দানি ওলমো। ডানপ্রান্ত থেকে উইলিয়ামসের পাঠানো পাস গোলবারের সামনে পেলেও জালে জড়াতে পারেননি তিনি। ৮২ মিনিটে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে গোল করতে ব্যর্থ হন আলভারো মোরাতা। তিন মিনিট পর লিড পেতে পারতো মরক্কো। কিন্তু প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে নিজের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতে না পারায় জোরালো শট নিতে পারেননি ওয়ালিদ।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষেও কেউ গোল করতে পারেনি। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের ১০৪ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল মরক্কো। কিন্তু আজেদিন ওউনাহির দুর্বল শট পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমন। অতিরিক্ত সময়ের বিরতির পর স্পেনের সামনেও সুযোগ এসেছিল, কিন্তু তারা গোল করতে পারেনি নিজেদের ব্যর্থতায়। ১১৫ মিনিটে স্পেনের রক্ষণভাগে এসে খেই হারিয়ে ফেলে গোলবঞ্চিত হয় মরক্কো। কিছুক্ষণ পর স্পেনের আলভারো মোরাতা বল নিয়ে আক্রমণে উঠেছিলেন। কিন্তু তার পাস ধরতে ব্যর্থ হন সতীর্থরা। ফলে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে।