ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাইমচরে গাইড বই কোম্পানীর প্রশ্ন দিয়ে নেয়া হচ্ছে মাদ্রাসার পরীক্ষা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:২৭:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • ৫৯ Time View

ছবি-ত্রিনদী

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার কাটাখালী হামিদিয়া সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসায় প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার কথা থাকলেও গাইড বই প্রকাশনা কোম্পানী লেকসার পাবলিকিশেন্স এর দেয়া প্রশ্নপত্র দিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। যা মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নিয়মের বহির্ভূত। শুধুমাত্র এই প্রতিষ্ঠানেই নয় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অনেক প্রতিষ্ঠানেই গাইড বই কেনার বিনিময়ে এভাবে প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষা নিচ্ছেন। এতে করে পাঠ্যবই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গাইড বইয়ের উপর নির্ভর হয়ে পড়ছে।

রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে কাটাখালী হামিদিয়া সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসায় গিয়ে দেখাগেছে শিক্ষার্থীরা প্রকাশনা থেকে সরবরাহ করা প্রশ্নে পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষার কক্ষে গিয়ে দেখাগেছে সরবরাহকৃত প্রশ্নে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা দিচ্ছেন গণিত এবং নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা দিচ্ছেন আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা। এই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয় ১২ নভেম্বর। চলবে আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত।

প্রতিষ্ঠানের ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য সোহরাব হোসেন জানান, মাদ্রাসার যিনি অধ্যক্ষ তিনি নিজের ইচ্ছেমত কাজ করেন। তিনি কমিটির লোকজনের সাথে কোন বিষয়ে পরামর্শ করেন না। যেভাবে কোম্পানীর প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে, এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে অন্ধকার নেমে আসবে এবং পাঠ্যবই থেকে দূরে সরে যাবে।

মাদ্রাসার পরিচালানা কমিটির সদস্য আমির হামজা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেন খান কোন কাজ করার আগে আমাদেরকে জানান না। তিনি অনিয়ম করার কারণে আমরা এসব বিষয়গুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছি। তবে এতে কোন ফলাফল দেখছি না।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত বছর এবং এ বছর আমাদের যে পরীক্ষাগুলো হয়েছে সবগুলো পরীক্ষার প্রশ্নপত্রই লেকসার পাবলিকিশেন্স এর সরবরাহ করা। আমাদের পাঠ্য বইয়ের সাথে অনেক সময় এই প্রশ্নপত্রের মিল থাকে না। তাদের প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা দিতে হলে তাদের গাইড বই বাধ্যতামূলক পড়তে হবে।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেন খান বলেন, প্রকাশনার প্রশ্ন দিয়ে শুধু আমরাই না, অনেক প্রতিষ্ঠানই পরীক্ষা নিচ্ছে। এগুলো বড় করে দেখার কিছু না। এসব বিষয়ে পত্রিকায় লিখে কোন কিছু হবে না।

হাইমচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামালকে এই বিষয়টি জানানো হয়।

তিনি বলেন-এভাবে প্রকাশনার প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকরাই প্রশ্ন তৈরী করে পরীক্ষা নিতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান যদি কোন অনিয়ম করে পরীক্ষা নেয় এবং প্রমানিত হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

১০ম গ্রেডসহ ৫ দফা দাবী বাস্তবায়নে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি প্রদান

হাইমচরে গাইড বই কোম্পানীর প্রশ্ন দিয়ে নেয়া হচ্ছে মাদ্রাসার পরীক্ষা

Update Time : ০৯:২৭:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার কাটাখালী হামিদিয়া সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসায় প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার কথা থাকলেও গাইড বই প্রকাশনা কোম্পানী লেকসার পাবলিকিশেন্স এর দেয়া প্রশ্নপত্র দিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। যা মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নিয়মের বহির্ভূত। শুধুমাত্র এই প্রতিষ্ঠানেই নয় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অনেক প্রতিষ্ঠানেই গাইড বই কেনার বিনিময়ে এভাবে প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষা নিচ্ছেন। এতে করে পাঠ্যবই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গাইড বইয়ের উপর নির্ভর হয়ে পড়ছে।

রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে কাটাখালী হামিদিয়া সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসায় গিয়ে দেখাগেছে শিক্ষার্থীরা প্রকাশনা থেকে সরবরাহ করা প্রশ্নে পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষার কক্ষে গিয়ে দেখাগেছে সরবরাহকৃত প্রশ্নে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা দিচ্ছেন গণিত এবং নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা দিচ্ছেন আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা। এই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয় ১২ নভেম্বর। চলবে আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত।

প্রতিষ্ঠানের ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য সোহরাব হোসেন জানান, মাদ্রাসার যিনি অধ্যক্ষ তিনি নিজের ইচ্ছেমত কাজ করেন। তিনি কমিটির লোকজনের সাথে কোন বিষয়ে পরামর্শ করেন না। যেভাবে কোম্পানীর প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে, এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে অন্ধকার নেমে আসবে এবং পাঠ্যবই থেকে দূরে সরে যাবে।

মাদ্রাসার পরিচালানা কমিটির সদস্য আমির হামজা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেন খান কোন কাজ করার আগে আমাদেরকে জানান না। তিনি অনিয়ম করার কারণে আমরা এসব বিষয়গুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছি। তবে এতে কোন ফলাফল দেখছি না।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত বছর এবং এ বছর আমাদের যে পরীক্ষাগুলো হয়েছে সবগুলো পরীক্ষার প্রশ্নপত্রই লেকসার পাবলিকিশেন্স এর সরবরাহ করা। আমাদের পাঠ্য বইয়ের সাথে অনেক সময় এই প্রশ্নপত্রের মিল থাকে না। তাদের প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা দিতে হলে তাদের গাইড বই বাধ্যতামূলক পড়তে হবে।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শরীফ হোসেন খান বলেন, প্রকাশনার প্রশ্ন দিয়ে শুধু আমরাই না, অনেক প্রতিষ্ঠানই পরীক্ষা নিচ্ছে। এগুলো বড় করে দেখার কিছু না। এসব বিষয়ে পত্রিকায় লিখে কোন কিছু হবে না।

হাইমচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামালকে এই বিষয়টি জানানো হয়।

তিনি বলেন-এভাবে প্রকাশনার প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকরাই প্রশ্ন তৈরী করে পরীক্ষা নিতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান যদি কোন অনিয়ম করে পরীক্ষা নেয় এবং প্রমানিত হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।