চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সুর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনার পর মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব চত্ত্বরে পুস্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা পরিষদের পক্ষে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম ফারুক মুরাদ ও প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীলসহ পরিষদের অন্যান্য সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। শনিবার সকালে পৌরসভা, থানা, প্রেসক্লাব, সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি, রিপোটার্স ইউনিটি, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সামাজিক এবং ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন লোকজন পুস্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিন হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল এন্ড কলেজ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক মুরাদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল ও অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও ভিডিপি, বয়েজ স্কাউট, রোভার স্কাউট, গালর্স গাইড ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন।
এরপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ডিসপ্লে প্রদর্শন, বালক-বালিকাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সকাল ১১টায় স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরমুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের সংবর্ধণা প্রদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে উপজেলা পরিষদ একাদশ ও হাজীগঞ্জ পৌরসভা একাদশের প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং বিকালে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।
এ ছাড়াও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে হাসপাতাল ও এতিমখানায় স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। উপজেলা চত্ত্বরে শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন করা এবং জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে সকল মসজিদ, মন্দিরসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়।
উল্লেখ্য, রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের (মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম) মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভবহানীর বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। প্রতিবছর বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে উপজেলা প্রশাসন দিবসটি পালন করে থাকে। যার ধারাবাহিকতায় এবারো উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়।