গত ১৫ মে সকাল। স্পেনের কার্টাগেনা বন্দরের অদূরে থামে পণ্যবাহী জাহাজ বোরকুম। এ সময় ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে সেই বন্দরে অবস্থান নিয়েছিলেন বেশ কিছু বিক্ষোভকারী। জাহাজটি ভিড়তে দেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষকে তা পরিদর্শনের অনুরোধ জানান তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের কাছে তথ্য ছিল, ওই জাহাজটিতে বিপুল অস্ত্র আছে। অস্ত্রগুলো যাবে ইসরায়েলে, যা ব্যবহৃত হবে ফিলিস্তিনের গাজায়।
এটা নজরে আসে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের একজন বামপন্থী সদস্যের। তিনি এ নিয়ে চিঠি দেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো শানচেজকে। অনুরোধ করেন, জাহাজটি যেন বন্দরে ভিড়তে দেওয়া না হয়। তবে স্পেনের সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই জাহাজটি কার্টাগেনা বন্দরে নোঙর করার পরিকল্পনা বাতিল করে। এই ঘটনার পরে জাহাজটি নোঙর করে স্লোভেনিয়ার কোপার নামের এক বন্দরে।
এ–সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি দেখেছে আল-জাজিরা। নথি অনুযায়ী, ভারত থেকে জাহাজটিতে অস্ত্র তোলা হয়েছিল। অস্ত্র নিয়ে জাহাজটি যাচ্ছিল গাজা থেকে ১৮ মাইল দূরে ইসরায়েলের আশদদ বন্দরে। জাহাজটিতে ছিল ২০ টন রকেটের ইঞ্জিন, বিস্ফোরকসহ সাড়ে ১২ টন রকেট, ৩ হাজার ৩০০ পাউন্ড বিস্ফোরক, ১ হাজার ৬৩০ পাউন্ড কামানের গোলাসহ আরও অন্যান্য ধরনের কিছু সামরিক সরঞ্জাম।
এরপর গত ২১ মে স্পেনের কার্টাগেনা বিমানবন্দরে ভিড়তে চাইলে আরও একটি পণ্যবাহী জাহাজকে নোঙর করতে দেওয়া হয়নি। এটিও ভারত থেকে ইসরায়েলে যাচ্ছিল। তাতে ছিল ২৭ টন বিস্ফোরক। এসব ঘটনায় ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় আট মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে, তাতে ভারত থেকে যাওয়া অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। এর প্রমাণও এখন পাওয়া যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম কুদস নিউজ নেটওয়ার্কের বরাতে আল-জাজিরা বলছে, ৬ জুন গাজার নুসেইরাত এলাকায় জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়শিবিরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। হামলার ঘটনার পর কুদস নিউজ ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও চিত্র প্রকাশ করে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, বিস্ফোরিত ক্ষেপণাস্ত্রের একটি অংশে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া বা ভারতে তৈরি।’
(প্রথম আলো)