ঢাকা ০৯:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মা-বাবা স্ব-উদ্যোগে ছাত্র শিবিরের ফরম পূরণ করাচ্ছেন সন্তানকে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৪৯:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১০২ Time View

ছবি-ত্রিনদী

নিজ উদ্যোগে বাবা-মা ছেলেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমর্থক পূরণ করাচ্ছেন। আবার কেউ নিজ উদ্যোগে এসে সমর্থক ফরম পূরণ করছেন। আবার কেউ ছোট ভাইয়ের ফরম পূরণ করে দিচ্ছে।

গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সংলগ্ন শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে ছাত্রশিবির আয়োজিত প্রকাশনা উৎসবে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

স্থানীয় শিক্ষার্থীরা জানায়, গত দুইদিন ধরে চলা চলমান এ প্রকাশনা উৎসবে ১৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী সমর্থক ফরম পূরণ করেছে। যার অধিকাংশই স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও কিছুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন।

রংপুর মিস্ত্রিপাড়া এলাকার শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি তার স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা মেলায়। মেলা ঘুরে ছেলের সমর্থক ফরম পূরণ করে দেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে ছেলে মেয়েদের ভালো রাখতে গেলে তারা কার সঙ্গে মেশে তা জানা জরুরি। ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি তারা ছাত্র হওয়ার পাশাপাশি নৈতিকতা চর্চারও পরামর্শ দেয়। মাদক সেবন করে না। সবকিছু বিবেচনা করে ছেলেকে দিয়ে সমর্থক ফরম পূরণ করালাম। যাতে করে খারাপ সঙ্গ না পায়। ভালো মানুষ হয়।

রংপুর ঈদগাহপাড়া থেকে এক স্কুল ছাত্রের মা তার ছেলেকে দিয়ে ছাত্রশিবিরের সমর্থক পূরণ করিয়েছেন। কম বয়সী ছেলেকে দিয়ে সমর্থক ফরম পূরণ করার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক ছেলেই অল্প বয়সে নেশা করে। বাবা-মাকে গালিগালাজ করে। তাদের তুলনায় ছাত্রশিবিরের ছেলেদের ব্যবহার ভালো। নেশা করে না। তাদের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। তাদের সঙ্গে থাকলে আমার ছেলেটা নষ্ট হবে না। তাই এখানে এসেছি।

রংপুর কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান। তিনি ক্লাস ফাইভে পড়া ছোট ভাইকে ছাত্রশিবিরের সমর্থক ফরম পূরণ করিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি ছাত্রশিবিরের একজন সাথী। ছাত্রশিবিরের সব কার্যক্রম কাছ থেকে দেখেছি এবং নিজেও করছি। আমি খারাপ কিছু পাইনি। আমি মনে করি আমার আমার ছোট ভাই ছাত্রশিবিরের সঙ্গে কাজ করলে পড়াশোনাসহ সব দিক থেকে এগিয়ে থাকবে। তাই তাকে এখানে এনেছি।

প্রকাশনা উৎসবের আয়োজক কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, এখানে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা উৎসব হচ্ছে। মানুষ জানতে পারছে ছাত্রশিবির সম্বন্ধে। পাশাপাশি যে কোনো বয়সী শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় সমর্থক ফরম পূরণ করতে পারছে। অনেকেই নিজের ছেলেকে এনে সমর্থক ফরম পূরণ করাচ্ছেন।

বেরোবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সুমন সরকার বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা, সামাজিক সাংস্কৃতিক আগ্রাসনসহ বিভিন্ন কারণে যুব সমাজের অবক্ষয় হচ্ছে। যুবকদের বড় একটি অংশ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত। অপরদিকে ছাত্রশিবির ভালো কাজ করে। পড়াশোনায় ভালো। কোনো অপকর্ম করে না। এগুলো দেখে অনেক বাবা-মা নিজে এসে তাদের সন্তানকে দিয়ে শিবিরের সমর্থক ফরম পূরণ করাচ্ছেন।

কম বয়সী শিক্ষার্থী বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থী সমর্থক ফরম পূরণ করলে তাদের কাজ কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের মূল কাজ হবে পাঠ্যপুস্তক পড়া। পাশাপাশি কোরআন-হাদীস পড়বে, ইসলামী বই পড়বে, নামাজ পড়বে, ভালো কাজ করবে। এগুলো নিজেরা করবে অপরকে করতে বলবে। এটাই হবে তাদের কাজ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবের নারায়নপুরে ক্রয়কৃত সম্পত্তির চেয়ে অধিক জায়গা দখলের অভিযোগ

মা-বাবা স্ব-উদ্যোগে ছাত্র শিবিরের ফরম পূরণ করাচ্ছেন সন্তানকে

Update Time : ০৮:৪৯:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

নিজ উদ্যোগে বাবা-মা ছেলেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমর্থক পূরণ করাচ্ছেন। আবার কেউ নিজ উদ্যোগে এসে সমর্থক ফরম পূরণ করছেন। আবার কেউ ছোট ভাইয়ের ফরম পূরণ করে দিচ্ছে।

গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সংলগ্ন শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে ছাত্রশিবির আয়োজিত প্রকাশনা উৎসবে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

স্থানীয় শিক্ষার্থীরা জানায়, গত দুইদিন ধরে চলা চলমান এ প্রকাশনা উৎসবে ১৫০ এর অধিক শিক্ষার্থী সমর্থক ফরম পূরণ করেছে। যার অধিকাংশই স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও কিছুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন।

রংপুর মিস্ত্রিপাড়া এলাকার শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি তার স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা মেলায়। মেলা ঘুরে ছেলের সমর্থক ফরম পূরণ করে দেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে ছেলে মেয়েদের ভালো রাখতে গেলে তারা কার সঙ্গে মেশে তা জানা জরুরি। ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি তারা ছাত্র হওয়ার পাশাপাশি নৈতিকতা চর্চারও পরামর্শ দেয়। মাদক সেবন করে না। সবকিছু বিবেচনা করে ছেলেকে দিয়ে সমর্থক ফরম পূরণ করালাম। যাতে করে খারাপ সঙ্গ না পায়। ভালো মানুষ হয়।

রংপুর ঈদগাহপাড়া থেকে এক স্কুল ছাত্রের মা তার ছেলেকে দিয়ে ছাত্রশিবিরের সমর্থক পূরণ করিয়েছেন। কম বয়সী ছেলেকে দিয়ে সমর্থক ফরম পূরণ করার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক ছেলেই অল্প বয়সে নেশা করে। বাবা-মাকে গালিগালাজ করে। তাদের তুলনায় ছাত্রশিবিরের ছেলেদের ব্যবহার ভালো। নেশা করে না। তাদের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। তাদের সঙ্গে থাকলে আমার ছেলেটা নষ্ট হবে না। তাই এখানে এসেছি।

রংপুর কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান। তিনি ক্লাস ফাইভে পড়া ছোট ভাইকে ছাত্রশিবিরের সমর্থক ফরম পূরণ করিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি ছাত্রশিবিরের একজন সাথী। ছাত্রশিবিরের সব কার্যক্রম কাছ থেকে দেখেছি এবং নিজেও করছি। আমি খারাপ কিছু পাইনি। আমি মনে করি আমার আমার ছোট ভাই ছাত্রশিবিরের সঙ্গে কাজ করলে পড়াশোনাসহ সব দিক থেকে এগিয়ে থাকবে। তাই তাকে এখানে এনেছি।

প্রকাশনা উৎসবের আয়োজক কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, এখানে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা উৎসব হচ্ছে। মানুষ জানতে পারছে ছাত্রশিবির সম্বন্ধে। পাশাপাশি যে কোনো বয়সী শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় সমর্থক ফরম পূরণ করতে পারছে। অনেকেই নিজের ছেলেকে এনে সমর্থক ফরম পূরণ করাচ্ছেন।

বেরোবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সুমন সরকার বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা, সামাজিক সাংস্কৃতিক আগ্রাসনসহ বিভিন্ন কারণে যুব সমাজের অবক্ষয় হচ্ছে। যুবকদের বড় একটি অংশ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত। অপরদিকে ছাত্রশিবির ভালো কাজ করে। পড়াশোনায় ভালো। কোনো অপকর্ম করে না। এগুলো দেখে অনেক বাবা-মা নিজে এসে তাদের সন্তানকে দিয়ে শিবিরের সমর্থক ফরম পূরণ করাচ্ছেন।

কম বয়সী শিক্ষার্থী বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থী সমর্থক ফরম পূরণ করলে তাদের কাজ কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের মূল কাজ হবে পাঠ্যপুস্তক পড়া। পাশাপাশি কোরআন-হাদীস পড়বে, ইসলামী বই পড়বে, নামাজ পড়বে, ভালো কাজ করবে। এগুলো নিজেরা করবে অপরকে করতে বলবে। এটাই হবে তাদের কাজ।