বিশ্ব বিখ্যাত ও চাঁদপুর জেলার গৌরবোজ্জ্বল দ্বীনী মারকাজ ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফে ৩৭তম পবিত্র ওরছে ইমামে রাব্বানী ও হিযবুর রাসূল দ. মহাসমাবেশ ৮ অক্টোবর বুধবার চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের হাজীগঞ্জস্থ ধেররা এলাকায় দরবার শরীফ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হবে। আওলাদে রাসূল দ., গাউছে জামান, কুতুবে জামান, ইমামে রাব্বানী, কাইয়ুমে জামান, মোজাদ্দেদে জামান, ছানীয়ে ওয়ায়েসকরুণী, অলিয়ে কামেল, পীরে মোকাম্মেল, হাদীয়ে দ্বীন ও মিল্লাত আবু নসর সৈয়দ মোহাম্মদ আবেদ শাহ্ মোজাদ্দেদী আল মাদানী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর ৩৭ তম ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে ওরছে ইমামে রাব্বানী ও হিযবুর রাসূল দ. মহাসমাবেশ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অত্যন্ত শান-সওকাতে অনুষ্ঠিত হবে।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের পীর, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান আওলাদে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ইমামে আহলে সুন্নাত, পীরে কামেল আলহাজ্ব আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী আল আবেদী।
ওরছে ইমামে রাব্বানী ও হিযবুর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহাসমাবেশ উপলক্ষে ওই দিন ফজর থেকে জোহর পর্যন্ত পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত নাতে মূর্শিদী, খতমে গাউছিয়া, খতমে খাজেগান, বাদ মাগরিব গিলাপ ছড়ানো এবং সারারাতব্যাপী কোরআন-সুন্নাহর বয়ান করা হবে। ফজরের নামাজের পর বিশ্ব শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করবেন দরবারের গদ্দীনশীণ পীর আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী।
দরবার শরীফ সূত্রে জানা গেছে, হযরত আবেদ শাহ্ মোজাদ্দেদী আল মাদানী রা. ছিলেন রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার ৪০ তম বংশধর। তিনি ১২৮৪ হিজরী সনের সাবান মাসে পবিত্র শব-ই বরাতের রাতে সুবহে সাদিকের সময় মদীনা শরীফের জান্নাতুল বাকী মহল্লায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনার মাতৃকুল হযরত ইমাম হাসান রা. এবং পিতৃকুল আমিরুল মো’মিনিন হযরত ওমর ফারুক রা.। এমনকি মোজাদ্দেদে আল ফেসাণী রা. এর নবম বংশধর। দীর্ঘ ২৮ বছর তিনি মদিনা শরীফে দ্বীনী শিক্ষা অর্জন করে রাসূল দ. এঁর বাতেনী নির্দেশে চাচা মাওলানা এরশাদ হোসাইন মোজাদ্দেদীর সঙ্গে ভারতের রামপুর স্টেটের নবাব আলী খাঁর অনুরোধে ইসলাম প্রচারের জন্য আগমন করেন। সেখানে ৫৭ বছর ইলমে হাদীস, ইলমে তাফসীর ও ফিকাহ্ অধ্যাপনায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ছিলেন। এ সময় তিনি মোনাফেকদের সাথে বাতিল আক্বীদার বিষয়ে বাহাস-মোনাজেরায় অংশ নিয়ে জিহাদ করেন। তাজদীদের ভূমিকায় পঞ্চদশ শতাব্দীর মোজাদ্দেদ হিসেবে বায়াতে রাসূল দ. পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৮ সনে রাসূলে কারীম দ. এঁর গায়েবী নির্দেশে ভারত থেকে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশে হিজরত করেন এই ইসলাম প্রচারক। ওই সময় চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ পৌরসভার মোজাদ্দেদ নগর ধেররা এলাকায় বসতী স্থাপন করেন। বাংলাদেশে থাকাকালীণ হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের খতিব, চট্টগ্রাম জামিয়া আহমদীয়া সুন্নীয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ও নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদে খেতাবতের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনার জীবদ্দশায় শুধুমাত্র ইসলামের প্রচার ও মোনাফেক বাতিলের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলনে কাটিয়েছেন। অসংখ্য কারামতের মধ্যে “মৃত্যুর পূর্বে রাসূল দ. তিনাকে নিতে এসেছেন এবং উপস্থিত সকলকে দাঁড়িয়ে সালাম দিতে বলেন। পরক্ষণেই তিনি ইহজগত ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহী রাজীউন। যাহা সর্বজন স্বীকৃত ও নবী দ. এঁর সাচ্ছা প্রেমের নিদর্শন। ১৯৮৮ সালের ৮ই অক্টোবর শনিবার ১২৬ বছর বয়সে ইসলামের এই মহান হাস্তির ওফাত হয়।
পরবর্তী বছর থেকে অধ্যাবদি হযরত আবেদ শাহ্ আল মাদানী রা. এঁর ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে পবিত্র ওরছে ইমামে রাব্বানী ও হিযবুর রাসূল দ. মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ওরছে ইমামে রাব্বানীতে দাওয়াত করেছেন শাহজাদা সৈয়দ আলমগীর শাহ্ মোজাদ্দেদী, শাহজাদা সৈয়দ নাছির শাহ্ মোজাদ্দেদী, শাহজাদা সৈয়দ মাহমুদ শাহ্ মোজাদ্দেদী সহ দরবারের আশেকান ও মুহিব্বীনগণ।