মরমী সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৫ তম, তিরোধান দিবস পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা, লালন দর্শন ও সাংস্কৃতিক “লালন সন্ধ্যা” অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
তিনি বলেন, ফকির লালন সাঁই কেবল একজন সাধক বা গীতিকার নন, তিনি ছিলেন মানবতার এক অসামান্য দার্শনিক। তাঁর দর্শন মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে এক মানবিক সমাজ গঠনের আহ্বান জানায়। লালনের গানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সহনশীলতা ও ভালোবাসার বার্তা নিহিত রয়েছে। আজকের সমাজে তাঁর দর্শন ও শিক্ষা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।
তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মের উচিত লালনের জীবনবোধ থেকে শিক্ষা নিয়ে মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে এগিয়ে আসা।
তিনি বলেন, লালনের গান ও দর্শন আমাদের সংস্কৃতির মূলভিত্তি। তাঁর গান শুধু সুর ও ছন্দ নয়, মানুষের আত্মার মুক্তির এক দিকনির্দেশনা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব (পিপিএম)।
আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক সংগঠক মইনুদ্দিন লিটন, কবি ও অনুবাদক মাইনুল ইসলাম মানিক।
তাঁরা বলেন, লালনের দর্শন জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের বিভাজন অতিক্রম করে মানবতার এক সার্বজনীন বার্তা বহন করে, যা আজকের সমাজে বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ এরশাদ উদ্দিন এর সভাপতিত্বে ও সংস্কৃতি বিদ সাংবাদিক এম. আর ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা শেষে লালন সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশন করেন লালনের কালজয়ী গান ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে, ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ ধন ধান্য পুষ্পে ভরা’ সহ একাধিক জনপ্রিয় লালনগীতি। শিল্পীদের মধুর কণ্ঠে গীত সেই চিরন্তন গানগুলোতে দর্শক-শ্রোতারা মুগ্ধ হয়।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।