ঢাকা ০১:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয়িতা সম্মাননা পেলেন ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরামের সম্পাদক রাবেয়া বেগম

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৩২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৬৬ Time View

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি :

সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এবং নারী উদ্যোক্তা রাবেয়া বেগম ২০২৪ সালের জয়িতা সম্মাননা পেলেন। শুধু ব্যক্তি বা পরিবার নয়, পরিবার জয় করে যিনি জয় করে নিয়েছেন সমাজ; তিনিই জয়িতা। একজন সংগ্রামী অপ্রতিরোধ্য নারীর প্রতীকী নাম ‘জয়িতা’। তেমনই একজন নারীর মূর্ত প্রতীক অদম্য রাবেয়া আক্তার। একজন নারী হয়েও সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তাকে এই স্বীকৃতি দেয়।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স হলে এক অনাঢ়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাবেয়া বেগমসহ মোট পাঁচজন জয়িতার হাতে সম্মাননা তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত আছে ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’। কিন্তু এই কথাটি এখন আর ধোপে টেকে না। কারণ, নারীরা এখন আর শুধু রান্না-বান্না, সংসারধর্ম পালনের মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেননি। আটপৌড়ে জীবনের গন্ডি ডিঙিয়ে নিজেদের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে নারীরা পৌঁছে গেছেন সর্বোচ্চ শেখরে। রাবেয়া বেগম তেমনি একজন জয়িতার নাম; যিনি নিজের অদম্য ইচ্ছাকে সম্বল করে চরম প্রতিকূলতাকে জয়ের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে গুটি গুটি পায়ে সমাজের প্রায় সকল ক্ষেত্রে নিজের জন্য অনন্য সব জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন। সমাজের প্রায় সকল ক্ষেত্রে তার অনবদ্য বিচরণ, আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সরব উপস্থিতি কেড়ে নিয়েছে সহস্র মানুষের প্রাণ। তার সহস্র ভক্ত তাই এই জয়িতার স্বীকৃতিতে কেবল আনন্দে উদ্বেলই নন, তাকে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসিয়ে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে তার স্তুতি এবার অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে তাকে।

রাবেয়া বেগম মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা এক সংগ্রামী নারী। তিন ভাই, চার বোনের আদরের ছোটবোন রাবেয়া বেগম নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। অসহায়কে মানসিকভাবে উজ্জীবিত করে আবার দাঁড়াবার প্রেরণা যোগান। শুধু এসবই নয়, শীতকালে দাঁড়ান শীতার্ত মানুষের পাশে, নিরন্ন ছিন্নমূল মানুষের পাশে দাঁড়ান ক্ষুধা নিবারণে। এককথায়, সমাজের সকল ভালো কাজে সবার আগে ছুটে যান তিনি। ব্যক্তিগত ছাড়াও মানবাধিকার সংগঠন, তরুণদের সামাজিক সংগঠন, নারীদের ব্যবসায়িক এবং স্বাবলম্বী হওয়ার উদ্যোগ, কিংবা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাসামগ্রী সঙ্কট দূর করতে তার জুড়ি নেই। সাহিত্যাঙ্গনেও রয়েছে তার অবাদ অংশগ্রহণ। তিনি নিজে লেখালেখি ও কাব্যচর্চার পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার সংগঠন ‘ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরাম’র সাধারণ সম্পাদক পদে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আমেনা বেগম বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই জয়িতাদের অনুপ্রেরণামূলক সাফল্যগাথা আরও অনেক নারীকেই অনুপ্রাণিত করবে। হাজারো নারীর মনে হাঁটি হাঁটি পা পা করে উঁকি দেওয়া স্বপ্নগুলো পাখা মেলবে আকাশে। তৈরি হবে লাখো জয়িতা। লাখো জয়িতার মিছিলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। এই সফল নারীদের অপরাজেয় রূপ দেখে সমগ্র সমাজ-নারীবান্ধব হবে এবং এতে করে সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ত্বরান্বিত হবে।

প্রসঙ্গত, সরকারের মহিলা অধিদপ্তর ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় ২০১৪ সাল থেকে সারাদেশে জয়িতাদের খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেয়। উদ্যোগটির নাম ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’। “নারী-কন্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতা মুক্ত বিশ্ব গড়ি” প্রতিপাদ্যে বিষয় নিয়ে ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ সারাদেশে বেগম রোকেয়া দিবস পালিত হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন, চাকুরি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান, সফল জননী, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদার রাখাসহ মোট পাঁচটি বিষয়ের ওপরে জয়িতাদের মুল্যায়ন করা হয়।

জয়িতা সম্মাননা পেয়ে রাবেয়া বেগম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি আমার এই জয়িতা অ্যাওয়ার্ড। মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য আজ জয়িতা সম্মাননা পেলম। এ অর্জন আমার একার নয় এ অর্জন আমার পাশে থাকা সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের, অনুপ্রেরণা জোগানো সকল ভাই, বন্ধু, আত্মীয়, সহযোদ্ধা, সহযোগীদের। এই সম্মাননা আমার এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জোগাবে। ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করার আগ্রহ পেলাম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কচুয়া পৌরসভার কোয়া নূর ই মদিনা জামে মসজিদের ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন

জয়িতা সম্মাননা পেলেন ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরামের সম্পাদক রাবেয়া বেগম

Update Time : ১০:৩২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি :

সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এবং নারী উদ্যোক্তা রাবেয়া বেগম ২০২৪ সালের জয়িতা সম্মাননা পেলেন। শুধু ব্যক্তি বা পরিবার নয়, পরিবার জয় করে যিনি জয় করে নিয়েছেন সমাজ; তিনিই জয়িতা। একজন সংগ্রামী অপ্রতিরোধ্য নারীর প্রতীকী নাম ‘জয়িতা’। তেমনই একজন নারীর মূর্ত প্রতীক অদম্য রাবেয়া আক্তার। একজন নারী হয়েও সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তাকে এই স্বীকৃতি দেয়।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স হলে এক অনাঢ়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাবেয়া বেগমসহ মোট পাঁচজন জয়িতার হাতে সম্মাননা তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত আছে ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’। কিন্তু এই কথাটি এখন আর ধোপে টেকে না। কারণ, নারীরা এখন আর শুধু রান্না-বান্না, সংসারধর্ম পালনের মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেননি। আটপৌড়ে জীবনের গন্ডি ডিঙিয়ে নিজেদের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে নারীরা পৌঁছে গেছেন সর্বোচ্চ শেখরে। রাবেয়া বেগম তেমনি একজন জয়িতার নাম; যিনি নিজের অদম্য ইচ্ছাকে সম্বল করে চরম প্রতিকূলতাকে জয়ের মাধ্যমে তৃণমূল থেকে গুটি গুটি পায়ে সমাজের প্রায় সকল ক্ষেত্রে নিজের জন্য অনন্য সব জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন। সমাজের প্রায় সকল ক্ষেত্রে তার অনবদ্য বিচরণ, আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সরব উপস্থিতি কেড়ে নিয়েছে সহস্র মানুষের প্রাণ। তার সহস্র ভক্ত তাই এই জয়িতার স্বীকৃতিতে কেবল আনন্দে উদ্বেলই নন, তাকে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসিয়ে চলেছেন প্রতিনিয়ত। ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে তার স্তুতি এবার অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে তাকে।

রাবেয়া বেগম মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা এক সংগ্রামী নারী। তিন ভাই, চার বোনের আদরের ছোটবোন রাবেয়া বেগম নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। অসহায়কে মানসিকভাবে উজ্জীবিত করে আবার দাঁড়াবার প্রেরণা যোগান। শুধু এসবই নয়, শীতকালে দাঁড়ান শীতার্ত মানুষের পাশে, নিরন্ন ছিন্নমূল মানুষের পাশে দাঁড়ান ক্ষুধা নিবারণে। এককথায়, সমাজের সকল ভালো কাজে সবার আগে ছুটে যান তিনি। ব্যক্তিগত ছাড়াও মানবাধিকার সংগঠন, তরুণদের সামাজিক সংগঠন, নারীদের ব্যবসায়িক এবং স্বাবলম্বী হওয়ার উদ্যোগ, কিংবা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাসামগ্রী সঙ্কট দূর করতে তার জুড়ি নেই। সাহিত্যাঙ্গনেও রয়েছে তার অবাদ অংশগ্রহণ। তিনি নিজে লেখালেখি ও কাব্যচর্চার পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার সংগঠন ‘ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরাম’র সাধারণ সম্পাদক পদে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আমেনা বেগম বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই জয়িতাদের অনুপ্রেরণামূলক সাফল্যগাথা আরও অনেক নারীকেই অনুপ্রাণিত করবে। হাজারো নারীর মনে হাঁটি হাঁটি পা পা করে উঁকি দেওয়া স্বপ্নগুলো পাখা মেলবে আকাশে। তৈরি হবে লাখো জয়িতা। লাখো জয়িতার মিছিলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। এই সফল নারীদের অপরাজেয় রূপ দেখে সমগ্র সমাজ-নারীবান্ধব হবে এবং এতে করে সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ত্বরান্বিত হবে।

প্রসঙ্গত, সরকারের মহিলা অধিদপ্তর ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় ২০১৪ সাল থেকে সারাদেশে জয়িতাদের খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেয়। উদ্যোগটির নাম ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’। “নারী-কন্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতা মুক্ত বিশ্ব গড়ি” প্রতিপাদ্যে বিষয় নিয়ে ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ সারাদেশে বেগম রোকেয়া দিবস পালিত হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন, চাকুরি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান, সফল জননী, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদার রাখাসহ মোট পাঁচটি বিষয়ের ওপরে জয়িতাদের মুল্যায়ন করা হয়।

জয়িতা সম্মাননা পেয়ে রাবেয়া বেগম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি আমার এই জয়িতা অ্যাওয়ার্ড। মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য আজ জয়িতা সম্মাননা পেলম। এ অর্জন আমার একার নয় এ অর্জন আমার পাশে থাকা সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের, অনুপ্রেরণা জোগানো সকল ভাই, বন্ধু, আত্মীয়, সহযোদ্ধা, সহযোগীদের। এই সম্মাননা আমার এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জোগাবে। ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করার আগ্রহ পেলাম।