ঢাকা 12:27 am, Tuesday, 22 July 2025

রূপসায় অসহায় পরিবারের পাশে ইউএনও

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:13:58 pm, Monday, 21 July 2025
  • 3 Time View

নুরুল ইসলাম ফরহাদ :
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের গাব্দেরগাঁও গ্রামের হোসেন গাজী বাড়ির প্রতিবন্ধী মামুনুর রশিদ লেদা মিয়ার দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে যায়। মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকা অসহায় পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই ২০২৫) রাতে যখন বাহিরে ভারী বর্ষণ হচ্ছে, তখন ঘরের ভিতর ৩ সন্তান, স্ত্রীকে নিয়ে শুয়ে ছিলেন লেদা মিয়া। ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার সংকেত কানে বাজে ছোট মেয়েটির। মাকে বলার পরও পাত্তা না পেয়ে, বিষয়টি অন্য ভাই বোনদের বলার পর তাদের মা বুঝতে পারে বিষয়টি। দেরী না করে তিনি সবাইকে নিয়ে বৃষ্টির ভিতরই বাহিরে বের হয়ে যান। তারা বের হওয়ার সাথে সাথে ঘরটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। অল্পের জন্য বেঁচে যায় ৫টি তাজা প্রাণ। প্রাণ বাঁচলেও জীবন বাঁচাতে হিমশীম খাচ্ছে লেদা মিয়া। নিজে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তেমন একটা কাজ করতে পারেন না। শারীরিক প্রতিবন্ধীর কারনে অনেকে কাজেও নিতে চায় না। তারপরও জীবনের তাগিদে মাঝে মাঝে কাজের খোঁজে বের হয়ে পড়েন। কখনো কাজ পান আবার কখনো পান না। ১ ছেলে ২ মেয়ের সংসারে এমনিতেই অনটন লেগেই থাকে, তার উপর ঘরটি গেলো ভেঙ্গে। এ যেন ‘মরার উপর খাড়া ঘাঁ।’

লেদা মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার এ প্রতিনিধিকে জানান, তার স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধীর কারণে কাজ করতে পারেন না, তাই বাধ্য হয়ে তিনি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান। এর মধ্যে বড় মেয়ে স্কুলেও পড়াচ্ছেন। সবার মুখে খাবার তুলে দিতেই তাকে হিমশিম খেতে হয় কিন্তু নতুন করে ঘর নির্মাণ করার সাধ্য তার নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল’র ভিডিও (ফরিদগঞ্জ পোস্ট) নিউজের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পারি। তাই আমি নিজেই এখানে কিছু উপহার সামগ্রী নিয়ে ছুটে আসি। হয়তো এই উপকরণ দিয়ে তার তেমন কিছু হবে না কিন্তু এলাকার সুহৃদয়বান ব্যক্তিরা যদি ওর পাশে এসে দাঁড়ান, অন্তত তাদের ঘরটি নির্মাণ হয়ে যাবে। আমরা এটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করতে পারি।

শনিবার (১৯ জুলাই ২০২৫) দুপুরে গাব্দেরগাঁও হোসেন গাজী বাড়িতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়, মামুনুর রশিদ লেদা মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার’র হাতে দুই বান্ডেল টিন, নগদ দশ হাজার টাকা এবং কিছু শুকনো খাবার তুলে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আওরঙ্গজেব, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ফরহাদ, সিনিয়র সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সমাজকর্মী আনোয়ার হোসেন সজিব প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

রূপসায় অসহায় পরিবারের পাশে ইউএনও

Update Time : 11:13:58 pm, Monday, 21 July 2025

নুরুল ইসলাম ফরহাদ :
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের গাব্দেরগাঁও গ্রামের হোসেন গাজী বাড়ির প্রতিবন্ধী মামুনুর রশিদ লেদা মিয়ার দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙ্গে যায়। মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকা অসহায় পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই ২০২৫) রাতে যখন বাহিরে ভারী বর্ষণ হচ্ছে, তখন ঘরের ভিতর ৩ সন্তান, স্ত্রীকে নিয়ে শুয়ে ছিলেন লেদা মিয়া। ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার সংকেত কানে বাজে ছোট মেয়েটির। মাকে বলার পরও পাত্তা না পেয়ে, বিষয়টি অন্য ভাই বোনদের বলার পর তাদের মা বুঝতে পারে বিষয়টি। দেরী না করে তিনি সবাইকে নিয়ে বৃষ্টির ভিতরই বাহিরে বের হয়ে যান। তারা বের হওয়ার সাথে সাথে ঘরটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। অল্পের জন্য বেঁচে যায় ৫টি তাজা প্রাণ। প্রাণ বাঁচলেও জীবন বাঁচাতে হিমশীম খাচ্ছে লেদা মিয়া। নিজে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তেমন একটা কাজ করতে পারেন না। শারীরিক প্রতিবন্ধীর কারনে অনেকে কাজেও নিতে চায় না। তারপরও জীবনের তাগিদে মাঝে মাঝে কাজের খোঁজে বের হয়ে পড়েন। কখনো কাজ পান আবার কখনো পান না। ১ ছেলে ২ মেয়ের সংসারে এমনিতেই অনটন লেগেই থাকে, তার উপর ঘরটি গেলো ভেঙ্গে। এ যেন ‘মরার উপর খাড়া ঘাঁ।’

লেদা মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার এ প্রতিনিধিকে জানান, তার স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধীর কারণে কাজ করতে পারেন না, তাই বাধ্য হয়ে তিনি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান। এর মধ্যে বড় মেয়ে স্কুলেও পড়াচ্ছেন। সবার মুখে খাবার তুলে দিতেই তাকে হিমশিম খেতে হয় কিন্তু নতুন করে ঘর নির্মাণ করার সাধ্য তার নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল’র ভিডিও (ফরিদগঞ্জ পোস্ট) নিউজের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পারি। তাই আমি নিজেই এখানে কিছু উপহার সামগ্রী নিয়ে ছুটে আসি। হয়তো এই উপকরণ দিয়ে তার তেমন কিছু হবে না কিন্তু এলাকার সুহৃদয়বান ব্যক্তিরা যদি ওর পাশে এসে দাঁড়ান, অন্তত তাদের ঘরটি নির্মাণ হয়ে যাবে। আমরা এটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করতে পারি।

শনিবার (১৯ জুলাই ২০২৫) দুপুরে গাব্দেরগাঁও হোসেন গাজী বাড়িতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়, মামুনুর রশিদ লেদা মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার’র হাতে দুই বান্ডেল টিন, নগদ দশ হাজার টাকা এবং কিছু শুকনো খাবার তুলে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আওরঙ্গজেব, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ফরহাদ, সিনিয়র সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সমাজকর্মী আনোয়ার হোসেন সজিব প্রমুখ।