ঢাকা 8:17 am, Tuesday, 22 July 2025

হবিগঞ্জে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত চাঁদপুরের ৩জনের বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:07:49 pm, Wednesday, 1 January 2025
  • 10 Time View

হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চাঁদপুরের ৩জন নিহত হয়েছেন। নিহত শ্রমিকদের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সম্পর্কে তারা একে অপরের আত্মীয়। স্বজন হারানোর শোকে কাতর পুরো পরিবার। নিহতরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহীম, তার ভাগিনা মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জের বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ।

হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় প্রায় ৩০ বছরের উপরে শ্রমিকের কাজ করতেন মো. ইব্রাহিম খান। বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন, স্বপ্ন ছিলো শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। স্বপ্ন অধরা রেখে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। কারখানার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিহত হন তিনি। শুধু তিনি নন, এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন তার আরো দুই নিকটাত্মীয়। তারা হলেন মোহাম্মদ মিজান ও মাহফুজ। এছাড়াও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন তার বড়ো ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। সংসারের চাহিদা মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি। আকিজ ভেঞ্চারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় পরিবারগুলোর বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জনের পথ। তিনজনের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা। কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের।

বুধবার (১ জানুয়ারি ২০২৫) দুপুরে নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, পরিবারটা যার মাধ্যমে চলে, তিনি এখন নেই। সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে। নিহতের ভাতিজা কাউছার হোসেন বলেন, একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। ইব্রাহীম কাকা দুই বছর পূর্বে একটি ভবনের কাজ ধরেছেন। দুমাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে সবার সংসারের পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নেয়ার চেষ্টা করছি। উপজেলার পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভব সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হবিগঞ্জে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত চাঁদপুরের ৩জনের বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম

Update Time : 11:07:49 pm, Wednesday, 1 January 2025

হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চাঁদপুরের ৩জন নিহত হয়েছেন। নিহত শ্রমিকদের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সম্পর্কে তারা একে অপরের আত্মীয়। স্বজন হারানোর শোকে কাতর পুরো পরিবার। নিহতরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহীম, তার ভাগিনা মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জের বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ।

হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্চারের কারখানায় প্রায় ৩০ বছরের উপরে শ্রমিকের কাজ করতেন মো. ইব্রাহিম খান। বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন, স্বপ্ন ছিলো শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। স্বপ্ন অধরা রেখে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। কারখানার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিহত হন তিনি। শুধু তিনি নন, এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন তার আরো দুই নিকটাত্মীয়। তারা হলেন মোহাম্মদ মিজান ও মাহফুজ। এছাড়াও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন তার বড়ো ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। সংসারের চাহিদা মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি। আকিজ ভেঞ্চারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় পরিবারগুলোর বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জনের পথ। তিনজনের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা। কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের।

বুধবার (১ জানুয়ারি ২০২৫) দুপুরে নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, পরিবারটা যার মাধ্যমে চলে, তিনি এখন নেই। সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে। নিহতের ভাতিজা কাউছার হোসেন বলেন, একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। ইব্রাহীম কাকা দুই বছর পূর্বে একটি ভবনের কাজ ধরেছেন। দুমাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে সবার সংসারের পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নেয়ার চেষ্টা করছি। উপজেলার পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভব সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া হবে।