ঢাকা 4:14 pm, Sunday, 20 July 2025

হৃদরোগে মৃতকে ‘হত্যা’ দেখিয়ে আদালতে শেখ হাসিনার নামে মামলা

  • Reporter Name
  • Update Time : 02:07:21 pm, Tuesday, 3 June 2025
  • 43 Time View

শেখ হাসিনার সরকার পতনের ১ বছর আগে বগুড়ার শাজাহানপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে হৃদরোগে মারা যান খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ফোরকান আলী (৪৭)। পরিবারের অমতে দলীয় নেতা এ ব্যাপারে আদালতে হত্যা মামলা করেন।

মৃতের বাবা এ মামলা প্রত্যাহারে আদালতে আবেদন ও লাশ উত্তোলনে বাধাও দেন। এরপরও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত এজাহারনামীয় ও তদন্তে পাওয়া আসামি হিসেবে ৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত শনিবার রাতে উপজেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি আলাল উদ্দিনকে (৪৮) গ্রেফতার করা হয়। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ফোরকান আলী শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ও ঘাসিড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টিএমএসএসে চাকরি করতেন। গত ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর সকালে সাজাপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে মিছিল বের করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় মিছিল থেকে পালানোর সময় ফোরকান হৃদরোগে মারা যান।

তাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠলেও তার বাবা ও ভাই জানান, ফোরকান হামলা বা গুলিতে নয়, হৃদরোগে মারা গেছেন। চাপের মুখেও তার পরিবার মামলা থেকে বিরত থাকেন। অথচ খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস আলী হলুদ তাকে (ফোরকান) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে গত বছরের ১ নভেম্বর আদালতে মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬০ জনের নাম উল্লেখ করে ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়।

ফোরকানের বাবা আবদুল কুদ্দুস মামলাটি প্রত্যাহার করতে আদালত ও পুলিশ সুপারকে চিঠি দেন। এ ছাড়া কবর থেকে ছেলের লাশ উত্তোলনেও বাধা দেন। এরপরও এ ‘হত্যা’ মামলায় গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়ার শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ করিম জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনে যুবদল নেতা ফোরকান মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার থেকে মামলা করা হয়নি। এমনকি পরিবার থেকে লাশ উত্তোলনে বাধা দেওয়া হয়। দলের এক নেতা আদালতে হত্যা মামলা করেছেন। নিহতের বাবা আবদুল কুদ্দুস এ মামলা প্রত্যাহারে আবেদন করলেও আদালত তা অগ্রাহ্য করেন। ফলে মামলাটি চলমান আছে। এ পর্যন্ত এজাহারনামীয় এবং তদন্তে পাওয়া আসামি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৮০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কিডনি দান করা সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধেই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ স্বামীর

হৃদরোগে মৃতকে ‘হত্যা’ দেখিয়ে আদালতে শেখ হাসিনার নামে মামলা

Update Time : 02:07:21 pm, Tuesday, 3 June 2025

শেখ হাসিনার সরকার পতনের ১ বছর আগে বগুড়ার শাজাহানপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে হৃদরোগে মারা যান খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ফোরকান আলী (৪৭)। পরিবারের অমতে দলীয় নেতা এ ব্যাপারে আদালতে হত্যা মামলা করেন।

মৃতের বাবা এ মামলা প্রত্যাহারে আদালতে আবেদন ও লাশ উত্তোলনে বাধাও দেন। এরপরও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত এজাহারনামীয় ও তদন্তে পাওয়া আসামি হিসেবে ৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত শনিবার রাতে উপজেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি আলাল উদ্দিনকে (৪৮) গ্রেফতার করা হয়। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ফোরকান আলী শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ও ঘাসিড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টিএমএসএসে চাকরি করতেন। গত ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর সকালে সাজাপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে মিছিল বের করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় মিছিল থেকে পালানোর সময় ফোরকান হৃদরোগে মারা যান।

তাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠলেও তার বাবা ও ভাই জানান, ফোরকান হামলা বা গুলিতে নয়, হৃদরোগে মারা গেছেন। চাপের মুখেও তার পরিবার মামলা থেকে বিরত থাকেন। অথচ খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস আলী হলুদ তাকে (ফোরকান) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে গত বছরের ১ নভেম্বর আদালতে মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬০ জনের নাম উল্লেখ করে ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়।

ফোরকানের বাবা আবদুল কুদ্দুস মামলাটি প্রত্যাহার করতে আদালত ও পুলিশ সুপারকে চিঠি দেন। এ ছাড়া কবর থেকে ছেলের লাশ উত্তোলনেও বাধা দেন। এরপরও এ ‘হত্যা’ মামলায় গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়ার শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ করিম জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনে যুবদল নেতা ফোরকান মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার থেকে মামলা করা হয়নি। এমনকি পরিবার থেকে লাশ উত্তোলনে বাধা দেওয়া হয়। দলের এক নেতা আদালতে হত্যা মামলা করেছেন। নিহতের বাবা আবদুল কুদ্দুস এ মামলা প্রত্যাহারে আবেদন করলেও আদালত তা অগ্রাহ্য করেন। ফলে মামলাটি চলমান আছে। এ পর্যন্ত এজাহারনামীয় এবং তদন্তে পাওয়া আসামি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৮০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।