ঢাকা 1:51 am, Tuesday, 22 July 2025

“ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেয়া যাবেনা”

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:33:20 am, Friday, 25 November 2022
  • 14 Time View

ছবি-ত্রিনদী

ওয়াজ মাহফিলে যাতে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া না হয়, সেজন্য মাঠ প্রশাসনসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়।

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘আসন্ন শীত মৌসুমে ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার বিষয়ে পুলিশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

বৈঠকে কার্যপত্র থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, এর আগের বৈঠকে কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান আসন্ন শীত মৌসুমে ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিবিশেষের নামে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার বিষয়ে প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন। তার এই পরামর্শের বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বুধবারের বৈঠকে অবহিত করা হয়। কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান এ সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার পাশাপাশি ধর্মের আবরণে শক্তিমানরা যাতে দুর্বলের সম্পত্তি দখল কিংবা লুট করতে না পারে, এ বিষয়েও প্রশাসনকে সজাগ ও সতর্কদৃষ্টি রাখতে বলেন।

জানা যায়, কমিটির সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বৈঠকে বলেন, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হিংসা-বিদ্বেষ বা উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য রাখা যাবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রচার করার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। এদের বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ধর্মীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

কমিটির আরেক সদস্য মোকাব্বির খান বৈঠকে বলেন, শীত মৌসুমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসব ওয়াজ মাহফিলে যাতে ধর্মীয় বিদ্বেষ, এমনকি ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো না হয়, সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তিনি মাঠ প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনীকে বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখার জন্য প্রস্তাব দেন।

কমিটির সদস্য আ স ম ফিরোজ বৈঠকে বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় একাত্তরের পরাজিত শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী, উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গি এবং মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রধান টার্গেট। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই এসব অপশক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচারে নামে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। যাতে অপপ্রচার চালিয়ে অপশক্তিগুলো রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে না পারে।

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার তাগিদ : মেলা, যাত্রাপালসহ গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে বলেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এছাড়াও তারা রবীন্দ্রজয়ন্তী, নজরুলজয়ন্তীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ধারা পুনরুদ্ধারের বিষয়ে বৈঠকে গুরুত্বারোপ করে। এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতেও বলেছে সংসদীয় কমিটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

“ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেয়া যাবেনা”

Update Time : 10:33:20 am, Friday, 25 November 2022

ওয়াজ মাহফিলে যাতে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া না হয়, সেজন্য মাঠ প্রশাসনসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়।

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘আসন্ন শীত মৌসুমে ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার বিষয়ে পুলিশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

বৈঠকে কার্যপত্র থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, এর আগের বৈঠকে কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান আসন্ন শীত মৌসুমে ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিবিশেষের নামে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার বিষয়ে প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন। তার এই পরামর্শের বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বুধবারের বৈঠকে অবহিত করা হয়। কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান এ সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার পাশাপাশি ধর্মের আবরণে শক্তিমানরা যাতে দুর্বলের সম্পত্তি দখল কিংবা লুট করতে না পারে, এ বিষয়েও প্রশাসনকে সজাগ ও সতর্কদৃষ্টি রাখতে বলেন।

জানা যায়, কমিটির সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বৈঠকে বলেন, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হিংসা-বিদ্বেষ বা উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য রাখা যাবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রচার করার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। এদের বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ধর্মীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

কমিটির আরেক সদস্য মোকাব্বির খান বৈঠকে বলেন, শীত মৌসুমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসব ওয়াজ মাহফিলে যাতে ধর্মীয় বিদ্বেষ, এমনকি ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো না হয়, সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তিনি মাঠ প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনীকে বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখার জন্য প্রস্তাব দেন।

কমিটির সদস্য আ স ম ফিরোজ বৈঠকে বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় একাত্তরের পরাজিত শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী, উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গি এবং মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রধান টার্গেট। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই এসব অপশক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচারে নামে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। যাতে অপপ্রচার চালিয়ে অপশক্তিগুলো রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে না পারে।

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার তাগিদ : মেলা, যাত্রাপালসহ গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে বলেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এছাড়াও তারা রবীন্দ্রজয়ন্তী, নজরুলজয়ন্তীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ধারা পুনরুদ্ধারের বিষয়ে বৈঠকে গুরুত্বারোপ করে। এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতেও বলেছে সংসদীয় কমিটি।