• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
হাজীগঞ্জের গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ পোস্ট মাস্টার হলেন হাজীগঞ্জের খোরশেদ আলম ধার্মিক ছেলে পেলে অভিনয় ছেড়ে বিয়ে করবেন মডেল প্রিয়াঙ্কা হাজীগঞ্জে নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব হাজীগঞ্জের মনিনাগে সম্পতিগত বিরোধের জেরধরে হামলা, ৮জন আহত ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে’ মতলব উত্তরে ১০ম গ্রেডের দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর স্মরণে দোয়া ও মিলাদ শাহরাস্তিতে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে রবি শস্য বীজ ও নগদ অর্থ প্রদান শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ফরিদগঞ্জ ॥ বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তরা

কৌশলে আবারও বলাখাল জেএন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কারিগরি কলেজ মাঠে মেলার প্রস্তুতি!

ত্রিনদী অনলাইন
ত্রিনদী অনলাইন
আপডেটঃ : বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :

হাজীগঞ্জে কৌশল অবলম্বন করে পৌরসভাধীন বলাখাল জেএন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ মাঠে একাধিকবার বানিজ্যিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ ও খেলাধূলার বিঘ্নতা সৃষ্টিসহ নষ্ট হয়েছে মাঠের পরিবেশ। গত দুই বছর মাসব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবছরও মাঠটিতে নতুন করে আবারও মেলার প্রস্তুতি চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিতও করেছেন, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) খোদেজা বেগম।

জানা গেছে, পৌরসভাধীন বলাখাল যোগেন্দ্র নারায়ন (জেএন) উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের একাডেমিক ভবনের বাহিরে মাঠটির অবস্থান। অর্থ্যাৎ মাঠ ঘেঁষেই স্কুল ক্যাম্পাস (একাডেমিক ভবন)। এই মাঠে টিফিনের ফাঁকে, ক্লাসের আগে ও পরে শিক্ষার্থীরা এবং সকাল-বিকাল এলাকার শিশু, কিশোর ও যুবকরা নিয়মিত খেলাধূলা এবং বৈকালিন আড্ডা ও সন্ধ্যায় এলাকার মানুষ ফাঁকা মাঠে হাঁটাহাঁটি করেন। তারা মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নেন।

এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন নিয়মিত ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতা এবং স্থানীয় ও এলাকাবাসীর বিভিন্ন টুর্নামেন্ট হয়ে থাকে। কিন্তু বিদ্যালয় মাঠটিতে বিভিন্ন জাতীয় দিবসের নাম ব্যবহার এবং কুটির ও হস্ত শিল্পের কথা উল্লেখ এবং কৌশল অবলম্বন করে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মেলার আয়োজন করে থাকে। এভাবে গত ২০২১ ও ২২ সালে মাসব্যাপী বানিজ্যিকভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে মেলার আয়োজক কমিটি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও খেলাধূলার বিঘ্নতা সৃষ্টিসহ নষ্ট হয়েছে মাঠের পরিবেশ। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনো প্রকার মেলা, সার্কাস বা বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া যাবে না বলে ২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।

সরকারি প্রজ্ঞাপন থাকা সত্ত্বেও কিভাবে স্কুল মাঠে মেলার অনুমতি নেওয়া হয়, এমন প্রশ্নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, মাঠটি স্কুলের ক্যাম্পাসের ভিতরে না থাকার সুযোগকে কাজে লাগান মেলার আয়োজক কমিটি। তারা মেলার অনুমতির জন্য প্রশাসনের কাছে যে আবেদন করেন, ওই আবেদনপত্রে স্কুল মাঠ উল্লেখ না করে, স্কুল সংলগ্ন মাঠের কথা উল্লেখ করেন। এমন কৌশল অবলম্বন করে সহজেই মেলার অনুমতি নেন তারা।

বিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মেলা এক মাসের কথা বলে প্রায় ৯ মাস মেলার সরঞ্জাম স্কুল মাঠে পড়েছিল। ওই সময়ে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শিক্ষকদের। এ নিয়ে অনেক দেন-দরবার করা হয়েছিল, কিন্তু লাভ হয়নি। এরপর পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তৎকালীন জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষিত হলে, তাঁর নির্দেশনায় স্কুল মাঠ থেকে মেলার সরঞ্জাম অপসারণ করা হয়।

পরে আবারও একই কৌশল অবলম্বন করে ২০২২ সালে মাসব্যাপী মেলার অনুমতি নেওয়া হয়। ওই মেলাটিরও স্থায়িত্ব ছিল দুই মাস। অর্থ্যাৎ স্টল স্থাপন, এক মাসের স্থলে দেড়মাস মেলা ও মেলা শেষে স্টল অপসারণসহ মাঠটি পরিস্কার করতে দ্ইু মাসের বেশি সময় লেগে যায়। এছাড়াও মেলার সরঞ্জাম অপসারণ শেষে মাঠের গর্তসহ উচুঁ-নিচু স্থান সমান হতে আরও মাসখানেক লেগে যায়। এতে শিক্ষা ও খেলাধূলার পরিবেশ নষ্ট হয়।

গত রোববার স্কুল মাঠ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মেলার জন্য স্কুল মাঠে বাঁশসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম এনে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ দিকে অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীদের চাপে পড়ে এবং টাকার বিনিময়ে স্কুল মাঠে মেলা হয়ে থাকে। আর মেলার বিনিময়ে যে টাকা নেওয়া হয়, তা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যার ফলে মেলা আয়োজনে নিরব সম্মতি দিয়ে থাকেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। যদিও তিনি সবকিছুর দায়িত্ব সভাপতির উপর চাপিয়ে দেন।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, এটি এলাকার অন্যতম বড় মাঠ। প্রতিদিন বিকেলে শিক্ষার্থীসহ আশপাশের কিশোর-তরুণেরা খেলাধুলা করে। তাছাড়া মাঠটি বাজার এলাকায় হওয়ায় পথচারী, ব্যবসায়ী, স্থানীয় ও এলাকার লোকজন হাঁটাহাঁটি করে এবং মাঠে বসে সময় কাটায়। কিন্তু মাঠে মেলা অনুষ্ঠিত হলে বিপাকে পড়বেন এলাকার লোকজন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানায়, প্রতিদিন টিফিনের সময় তারা মাঠে খেলাধুলা করে। গত দুইটি মেলার কারণে তারা খেলাধুলা করতে পারেনি। এবারও মেলা হলে তারা খেলতে পারবেন না।

স্থানীয় সচেতন এক ব্যক্তি বলেন, এমনিতে কিশোর-তরুণরা মোবাইল ফোনে আসক্ত। এর মধ্যে যদি মাঠটিতে মেলা হয়, তাহলে এলাকার কিশোর-তরুণেরা আরও বেশি আসক্ত হয়ে পড়বে। অলস সময় পার করবে। এতে তারা বিপথগামী হয়ে যেতে পারে।

এ দিকে আবারও নতুন করে মেলার প্রস্তুতির বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) খোদেজা বেগম বলেন, স্কুল মাঠে মেলার করার জন্য আমার কাছে যারা এসেছিলো, আমি তাদেরকে সভাপতির অনুমতি নেওয়ার জন্য বলেছি। এ সময় তিনি জানান, স্কুল মাঠে মেলা হলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট ও ক্রীড়ার (খেলাধূলা) বিঘ্ন ঘটে।

এক প্রশ্নের জবাবে ২০২১ সালের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ওই সময়ে এক মাসের অনুমতি নিয়ে মেলার সরঞ্জাম ৯ মাস স্কুল মাঠে ছিলো। এরপর ২০২২ সালে মেলার অনুষ্ঠানসহ সরঞ্জাম সরাতে দুই মাসের বেশি সময় লেগে যায়। এতে আমাদের বাৎসরিকসহ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিঘ্ন ঘটে। তাছাড়া মেলা শেষে মাঠটি খেলার উপযুক্ত করতেও অনেক সময় লেগে যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএওন) তাপস শীল বলেন, স্কুল মাঠে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুক

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০