হাজীগঞ্জে আগুনে পুড়ে ছোট-বড় ১১টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ৮টি পরিবারের খোলা আকাশে নিচে বসবাস করছে। রবিবার (৭ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সেন্দ্রা গ্রামের শেখ বাড়িতে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ওই বাড়ির জাকির হোসেনের রান্না ঘর থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়। তাৎখনিক আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে আগুনে ওই বাড়ির হানিফ শেখ, শাহাদাত শেখ, রব শেখ, কালু শেখ, জাকির শেখ, সাত্তার শেখ, সাদ্দাম শেখ ও জসিম শেখের বসতঘরসহ ছোট-বড় ১১ টি ঘরসহ ঘরে থাকা আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে যায়। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয় বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্ত রুমা আক্তার জানান, তিনি ইফতার সামগ্রী রান্না করছিলেন। এমন সময় জাকিরের ঘরের মিটার ঠাস (বিকট শব্দ) করে বাস্ট হয়ে আগুন ধরে যায়। তখন বাড়ির সবাই পানি দিয়ে আগুন নিভানের চেষ্টা করেছে, কিন্তু লাভ হয়নি। ১০ মিনিটের মধ্যে পুরো বাড়িতে আগুন ধরে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত পারভীন বেগম ও আব্দুর রব বলেন, কারেন্টে (বিদ্যুৎ) আগুন লেগেছে। মূহুত্বেই এক এক করে সবঘরে আগুন ধরে। আমরা জান (জীবন) নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। এ সময় পারভীন বেগমসহ ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান সোহেল জানান, আগুনের ঘটনায় পরণের কাপড়চোপড় ছাড়া আর কিছু রক্ষা করতে পারিনি পরিবারগুলো। এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনীর সদস্যদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তিনি বলেন, ঈদের আগে পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়েছে।
হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল আহসান অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদকর্মীদের জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে আগুনে কয়েকটি ঘর পুড়ে গেছে। তাৎখনিক ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব নির্ধারণ করা যায়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মজিব বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আগুনের বিষয়টি মাননীয় সংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীলকে অবহিত করেছি। তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক ১০ বস্তা চাউল ও ৩০ টি কম্বল দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আমি নিজ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি।