ঢাকা 12:36 am, Monday, 8 September 2025

অফিসে না করেও বেতন-ভাতা তুলছেন হাজীগঞ্জের খাদ্য পরিদর্শক!

চট্টগ্রামে বসবাস করলেও কর্মস্থল তার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। মাসে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই সারা মাসের হাজিরা নিশ্চিত করেন তিনি। নিয়মিত অফিসে উপস্থিত না থেকেও মাসের পর মাস সরকারি বেতন-ভাতা তোলার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মুহাম্মদ খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে।

অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর দুই মেয়াদে চার মাস চট্টগ্রাম বন্দরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এরপর থেকে হাজীগঞ্জে তার নিয়মিত উপস্থিতি আর দেখা যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, মাসে একবার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে পুরো মাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারজানা মিলির প্রত্যক্ষ সহযোগিতাতেই দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম চলছে। হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত থেকেও কীভাবে একদিনে সব স্বাক্ষর দেওয়া হয়, এবং কেন এতদিন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি এসব প্রশ্ন এলাকায় নানা গুঞ্জন সৃষ্টি করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুহাম্মদ খোরশেদ আলম নিজেকে অসুস্থ দাবি করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আগামীকাল দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন এটি কি সত্যিই অসুস্থতা, নাকি দায়িত্ব অবহেলার আড়ালে সরকারি সুবিধা ভোগের কৌশল?

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারজানা মিলি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে সিরিয়াস না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, “খাদ্য পরিদর্শক নিয়মিত অফিসে না এলেও অফিসের কাজ চালু আছে। তাই বিষয়টিকে অতটা সিরিয়াসলি না নিলেও হবে। জীবনে সব কিছু সিরিয়াসলি নিতে হয় না। ”

অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, “হাজীগঞ্জে একজন খাদ্য পরিদর্শক আছেন এ তথ্যই আমার জানা ছিল না। যোগদানের পর একদিনও তাকে দেখিনি। অফিস না করে নিয়মিত বেতন ভাতা তুলছেন এ বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাবো এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।”

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, সরকারি কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি প্রশাসনের শৃঙ্খলার জন্য হুমকি। তারা অবিলম্বে উচ্চপর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলব সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে ছাত্রদলের শুভেচ্ছা বিনিময়

অফিসে না করেও বেতন-ভাতা তুলছেন হাজীগঞ্জের খাদ্য পরিদর্শক!

Update Time : 10:14:10 pm, Sunday, 7 September 2025

চট্টগ্রামে বসবাস করলেও কর্মস্থল তার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। মাসে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই সারা মাসের হাজিরা নিশ্চিত করেন তিনি। নিয়মিত অফিসে উপস্থিত না থেকেও মাসের পর মাস সরকারি বেতন-ভাতা তোলার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মুহাম্মদ খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে।

অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর দুই মেয়াদে চার মাস চট্টগ্রাম বন্দরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এরপর থেকে হাজীগঞ্জে তার নিয়মিত উপস্থিতি আর দেখা যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, মাসে একবার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে পুরো মাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারজানা মিলির প্রত্যক্ষ সহযোগিতাতেই দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়ম চলছে। হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত থেকেও কীভাবে একদিনে সব স্বাক্ষর দেওয়া হয়, এবং কেন এতদিন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি এসব প্রশ্ন এলাকায় নানা গুঞ্জন সৃষ্টি করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুহাম্মদ খোরশেদ আলম নিজেকে অসুস্থ দাবি করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আগামীকাল দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন এটি কি সত্যিই অসুস্থতা, নাকি দায়িত্ব অবহেলার আড়ালে সরকারি সুবিধা ভোগের কৌশল?

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারজানা মিলি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে সিরিয়াস না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, “খাদ্য পরিদর্শক নিয়মিত অফিসে না এলেও অফিসের কাজ চালু আছে। তাই বিষয়টিকে অতটা সিরিয়াসলি না নিলেও হবে। জীবনে সব কিছু সিরিয়াসলি নিতে হয় না। ”

অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, “হাজীগঞ্জে একজন খাদ্য পরিদর্শক আছেন এ তথ্যই আমার জানা ছিল না। যোগদানের পর একদিনও তাকে দেখিনি। অফিস না করে নিয়মিত বেতন ভাতা তুলছেন এ বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাবো এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।”

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, সরকারি কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি প্রশাসনের শৃঙ্খলার জন্য হুমকি। তারা অবিলম্বে উচ্চপর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।