ঢাকা ০২:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শীতকালে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়,কি কারণে

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:০৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২
  • ৬৭ Time View

শিশুদের জটিল রোগগুলোর একটি পাইলস। শীতকালে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এর মূল কারণ পানি কম খাওয়া। শীতের ভয়ে যেসব শিশু পানি কম পান করে তাদের পাইলসের সমস্যা দেখা দেয়।

শিশুদের পাইলসের আদিঅন্ত নিয়ে জানিয়েছেন বৃহদান্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।

প্রকৃত পাইলস শিশুদের কম হয়। পাইলস বলতে বোঝায় মলদ্বারে ফুলে ওঠা মাংসপিণ্ড বা গ্যাজ। অসংখ্য শিরা মিউকাস ঝিল্লির তলায় ফুলে ওঠার কারণে মাংসপিণ্ড ফুলে ওঠে এবং কখনও কখনও রক্ত যায়। হেমোরয়েড অর্থ হল টয়লেটে রক্ত যাওয়া। অভ্যন্তরীণ পাইলসে মাংসপিণ্ড না থাকলেও প্রচুর রক্ত যেতে পারে। অনেক বড় গ্যাজ আছে কিন্তু রক্ত নাও যেতে পারে।

এ রক্ত যাওয়ার আবার তারতম্য আছে। তবে সাধারণত কয়েকদিন থেকে কয়েক মাস পর পর রক্ত যায়। শিশুদের পাইলস হলে বড়দের চেয়ে বেশি রক্ত যায়। অভিভাবকরা শিশুদের যে পাইলসের সমস্যা অর্থাৎ টয়লেটে রক্ত গেলে চিকিৎসকের কাছে আসেন তাদের বেশিরভাগই পাইলস নয়। শিশুদের টয়লেটে রক্ত যাওয়ার প্রধান কারণ রেকটাল পলিপ।

এটি এক ধরনের আঙ্গুর ফলের মতো টিউমার, যা ক্যান্সার নয়। এগুলো এক বা একাধিক হতে পারে এবং এরূপ শত শত পলিপ থাকতে পারে যা থেকে সাধারণত রক্ত ও মিউকাস বা আম যায়। রোগীর অভিভাবকরা মনে করেন যে, এটি রক্ত আমাশয় এবং ওষুধ দিয়ে ভালো করা যাবে। রেকটাল পলিপ রোগের চিকিৎসা হচ্ছে এটিকে কেটে ফেলে দেয়া। রোগীকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে এটি করতে হয়। অভিভাবকদের ভয়, ছোট শিশুকে অজ্ঞান করলে তার ক্ষতি হবে। কিন্তু রক্ত যাওয়ায় শিশুটি যে রক্তশূন্যতায় ভুগছে সেদিকে তাদের লক্ষ্য থাকে না।

রেকটাল পলিপ অপারেশনের জন্য শিশুকে কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে রাখলেই চলে। রোগীর পেট খালি করার জন্য আগের দিন কিছু ওষুধ দেয়া হয় যাতে পায়খানা ক্লিয়ার হয়। খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে অপারেশন করাই ভালো। এ জন্য রোগীকে ঘুম পাড়াবার ইনজেকশন দিতে হয়। একটি বিশেষ ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে টিউমারটি (পলিপ) কেটে আনা হয়। এ অপারেশনে মলদ্বারে কোনো কাটাছিড়া করা হয় না তাই অপারেশনের পর ব্যথা হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

অপারেশনের দু’তিন ঘণ্টা পর রোগী স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারে এবং বাসায় চলে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বহির্বিভাগীয় রোগী হিসেবে পরক্ষণেই চলে যেতে পারে। শিশুদের মলদ্বারে অন্য একটি সমস্যা হয়। এতে পায়খানা শক্ত হলে মলদ্বার ফেটে যায় এবং ব্যথা হয়। কিছুটা রক্তও যেতে পারে। কিছুদিন পর মলদ্বারে একটি গ্যাজ দেখা যায়। শিশু ব্যথার কারণে টয়লেটে যেতে ভয় পায়। এ রোগটির নাম এনালফিশার। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক মল নরম করার জন্য ওষুধ দেন, পানি, সবজি, সালাদ খেলে উপকার পাওয়া যায়, পায়ুপথে মলম লাগানো যেতে পারে। চুলকানি হলে কৃমির ওষুধও দিতে হবে। জন্মের পরপরই যে কোনো সময় এ রোগ হতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

নকল বই বিক্রিতে জড়িতের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে : গোলাম এলাহী

শীতকালে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়,কি কারণে

Update Time : ১২:০৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২

শিশুদের জটিল রোগগুলোর একটি পাইলস। শীতকালে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এর মূল কারণ পানি কম খাওয়া। শীতের ভয়ে যেসব শিশু পানি কম পান করে তাদের পাইলসের সমস্যা দেখা দেয়।

শিশুদের পাইলসের আদিঅন্ত নিয়ে জানিয়েছেন বৃহদান্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।

প্রকৃত পাইলস শিশুদের কম হয়। পাইলস বলতে বোঝায় মলদ্বারে ফুলে ওঠা মাংসপিণ্ড বা গ্যাজ। অসংখ্য শিরা মিউকাস ঝিল্লির তলায় ফুলে ওঠার কারণে মাংসপিণ্ড ফুলে ওঠে এবং কখনও কখনও রক্ত যায়। হেমোরয়েড অর্থ হল টয়লেটে রক্ত যাওয়া। অভ্যন্তরীণ পাইলসে মাংসপিণ্ড না থাকলেও প্রচুর রক্ত যেতে পারে। অনেক বড় গ্যাজ আছে কিন্তু রক্ত নাও যেতে পারে।

এ রক্ত যাওয়ার আবার তারতম্য আছে। তবে সাধারণত কয়েকদিন থেকে কয়েক মাস পর পর রক্ত যায়। শিশুদের পাইলস হলে বড়দের চেয়ে বেশি রক্ত যায়। অভিভাবকরা শিশুদের যে পাইলসের সমস্যা অর্থাৎ টয়লেটে রক্ত গেলে চিকিৎসকের কাছে আসেন তাদের বেশিরভাগই পাইলস নয়। শিশুদের টয়লেটে রক্ত যাওয়ার প্রধান কারণ রেকটাল পলিপ।

এটি এক ধরনের আঙ্গুর ফলের মতো টিউমার, যা ক্যান্সার নয়। এগুলো এক বা একাধিক হতে পারে এবং এরূপ শত শত পলিপ থাকতে পারে যা থেকে সাধারণত রক্ত ও মিউকাস বা আম যায়। রোগীর অভিভাবকরা মনে করেন যে, এটি রক্ত আমাশয় এবং ওষুধ দিয়ে ভালো করা যাবে। রেকটাল পলিপ রোগের চিকিৎসা হচ্ছে এটিকে কেটে ফেলে দেয়া। রোগীকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে এটি করতে হয়। অভিভাবকদের ভয়, ছোট শিশুকে অজ্ঞান করলে তার ক্ষতি হবে। কিন্তু রক্ত যাওয়ায় শিশুটি যে রক্তশূন্যতায় ভুগছে সেদিকে তাদের লক্ষ্য থাকে না।

রেকটাল পলিপ অপারেশনের জন্য শিশুকে কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে রাখলেই চলে। রোগীর পেট খালি করার জন্য আগের দিন কিছু ওষুধ দেয়া হয় যাতে পায়খানা ক্লিয়ার হয়। খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে অপারেশন করাই ভালো। এ জন্য রোগীকে ঘুম পাড়াবার ইনজেকশন দিতে হয়। একটি বিশেষ ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে টিউমারটি (পলিপ) কেটে আনা হয়। এ অপারেশনে মলদ্বারে কোনো কাটাছিড়া করা হয় না তাই অপারেশনের পর ব্যথা হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

অপারেশনের দু’তিন ঘণ্টা পর রোগী স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারে এবং বাসায় চলে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বহির্বিভাগীয় রোগী হিসেবে পরক্ষণেই চলে যেতে পারে। শিশুদের মলদ্বারে অন্য একটি সমস্যা হয়। এতে পায়খানা শক্ত হলে মলদ্বার ফেটে যায় এবং ব্যথা হয়। কিছুটা রক্তও যেতে পারে। কিছুদিন পর মলদ্বারে একটি গ্যাজ দেখা যায়। শিশু ব্যথার কারণে টয়লেটে যেতে ভয় পায়। এ রোগটির নাম এনালফিশার। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক মল নরম করার জন্য ওষুধ দেন, পানি, সবজি, সালাদ খেলে উপকার পাওয়া যায়, পায়ুপথে মলম লাগানো যেতে পারে। চুলকানি হলে কৃমির ওষুধও দিতে হবে। জন্মের পরপরই যে কোনো সময় এ রোগ হতে পারে।