ঢাকা 11:12 pm, Sunday, 29 June 2025

পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়লেন ৬ সন্তানের জননী

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:20:39 pm, Sunday, 29 June 2025
  • 1 Time View

ভোলার চরফ্যাশনে তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে চলে গেছেন ৬ সন্তানের জননী এক নারী। এ ঘটনায় তার স্বামী স্থানীয় ইউএনও অফিসের এক কর্মচারীর ‘সহযোগিতার’ অভিযোগ তুলেছেন।

স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি জানান, তার স্ত্রী আয়েশা বেগমকে চরফ্যাশনের মুরাদ নামের এক যুবক নিয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ করেন, ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী সোহাগ এই ঘটনায় মুরাদকে সহায়তা করেছেন।

২৫ জুন এ বিষয়ে স্ত্রীকে উদ্ধারের অনুরোধ জানিয়ে চরফ্যাশন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ইয়াকুব। পরে শুক্রবার তার ছেলে ইয়াছিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মাকে ফেরত চেয়ে লিখিত আবেদন করেন।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও চরফ্যাশন থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এরপর রোববার আয়েশাকে থানায় হাজির করা হয়।

তবে চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, ‘ওই নারীকে পুলিশ উদ্ধার করেনি। তিনি নিজেই ৩ সন্তানকে নিয়ে থানায় এসেছেন এবং জানিয়েছেন যে, মুরাদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। আগের স্বামীকে তিনি তালাক দিয়েছেন।’

বিয়ের বৈধতা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখা গেছে কি না—এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘তিনি বলেছেন এক মাস পরে বিয়ের কাগজ দেখাবেন।’

অন্যদিকে স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি অভিযোগ করেন, তিনি থানায় মামলা করতে চাইলেও ওসি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে নিরুৎসাহিত করে গ্রাম আদালতে যেতে বলেন।

‘ওসি আমাকে বলেন, ‘তিন সন্তান তোমার, তিন সন্তান ওদের’। অথচ আমি ১৯ বছর সংসার করেছি, আয়েশার ইচ্ছা অপূর্ণ রাখিনি। আমার বিশ্বাস আর সমস্ত সঞ্চয় তার ওপরই ছিল,’— কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন ইয়াকুব।

ছেলে ইয়াছিন বলেন, ‘আমার মা-বাবার মধ্যে কোনো কলহ ছিল না। ইউএনও অফিসের সোহাগ ও মুরাদ আমাদের বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। তারা মাকে স্বর্ণালঙ্কার ও ঘরের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে গেছেন।’

এদিকে আয়েশা বেগম থানায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি স্বামীর সঙ্গে ভালো ছিলাম না, তাই মুরাদের সঙ্গে গিয়েছি। তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে, আইনগত সহায়তা চাইতে থানায় এসেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত মুরাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।

অন্যদিকে ইউএনও অফিসের সহকারী সোহাগ বলেন, ‘আমি এই ঘটনায় জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ‘আমার অফিস সহকারীকে জড়িয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত ও মীমাংসার জন্য ওসিকে দায়িত্ব দিয়েছি।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

এনসিপি চাঁদপুর জেলা সমন্বয়ক কমিটি গঠন

পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়লেন ৬ সন্তানের জননী

Update Time : 07:20:39 pm, Sunday, 29 June 2025

ভোলার চরফ্যাশনে তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে চলে গেছেন ৬ সন্তানের জননী এক নারী। এ ঘটনায় তার স্বামী স্থানীয় ইউএনও অফিসের এক কর্মচারীর ‘সহযোগিতার’ অভিযোগ তুলেছেন।

স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি জানান, তার স্ত্রী আয়েশা বেগমকে চরফ্যাশনের মুরাদ নামের এক যুবক নিয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ করেন, ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী সোহাগ এই ঘটনায় মুরাদকে সহায়তা করেছেন।

২৫ জুন এ বিষয়ে স্ত্রীকে উদ্ধারের অনুরোধ জানিয়ে চরফ্যাশন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ইয়াকুব। পরে শুক্রবার তার ছেলে ইয়াছিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মাকে ফেরত চেয়ে লিখিত আবেদন করেন।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও চরফ্যাশন থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এরপর রোববার আয়েশাকে থানায় হাজির করা হয়।

তবে চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, ‘ওই নারীকে পুলিশ উদ্ধার করেনি। তিনি নিজেই ৩ সন্তানকে নিয়ে থানায় এসেছেন এবং জানিয়েছেন যে, মুরাদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। আগের স্বামীকে তিনি তালাক দিয়েছেন।’

বিয়ের বৈধতা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখা গেছে কি না—এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘তিনি বলেছেন এক মাস পরে বিয়ের কাগজ দেখাবেন।’

অন্যদিকে স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি অভিযোগ করেন, তিনি থানায় মামলা করতে চাইলেও ওসি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে নিরুৎসাহিত করে গ্রাম আদালতে যেতে বলেন।

‘ওসি আমাকে বলেন, ‘তিন সন্তান তোমার, তিন সন্তান ওদের’। অথচ আমি ১৯ বছর সংসার করেছি, আয়েশার ইচ্ছা অপূর্ণ রাখিনি। আমার বিশ্বাস আর সমস্ত সঞ্চয় তার ওপরই ছিল,’— কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন ইয়াকুব।

ছেলে ইয়াছিন বলেন, ‘আমার মা-বাবার মধ্যে কোনো কলহ ছিল না। ইউএনও অফিসের সোহাগ ও মুরাদ আমাদের বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। তারা মাকে স্বর্ণালঙ্কার ও ঘরের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে গেছেন।’

এদিকে আয়েশা বেগম থানায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি স্বামীর সঙ্গে ভালো ছিলাম না, তাই মুরাদের সঙ্গে গিয়েছি। তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে, আইনগত সহায়তা চাইতে থানায় এসেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত মুরাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।

অন্যদিকে ইউএনও অফিসের সহকারী সোহাগ বলেন, ‘আমি এই ঘটনায় জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ‘আমার অফিস সহকারীকে জড়িয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত ও মীমাংসার জন্য ওসিকে দায়িত্ব দিয়েছি।’