বাহরাইনে পার্টনারে (অংশিদারিত্ব) ব্যবসা করছিলেন হাজীগঞ্জের যুবক রিপন ও আরিফ খাঁন। ছুটিতে দেশে আসার পর প্রতারণার শিকার হন রিপন। প্রায় দেড় কোটি টাকার ব্যবসা নিজের আয়ত্ত্বে নিয়ে তার ভিসা বাতিল করে দেন আরিফ। এমন প্রতারণায় নিঃস্ব হয়ে এখন তিনি ব্যবসা ও ন্যায়-বিচার পেতে ঘুরছেন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে।
রিপন উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব রাজারগাঁও গ্রামের আস্কর খাঁন বাড়ির সিরাজুল হকের ছেলে। অভিযুক্ত আরিফ খাঁন একই বাড়ির নুর মোহাম্মদ খাঁনের ছেলে। তারা দুইজন বাড়ির হিসেবে চাচাতো-জেঠাতো ভাই। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদকর্মীদের কাছে মুঠোফোনে বক্তব্য দেন আরিফ খাঁন।
রিপন বলেন, ২০২২ সালে বাহরাইনে সরকারি অনুমোদন নিয়ে আমি বনলতা এক্সপ্রেস সার্ভিস নামের একটি কোম্পানি খুলি। যার লাইসেন্স নম্বর ১৬০৫২০। কোম্পানিতে আমার ৯০% এবং ভারতীয় ফাতেমা ও শ্রীলংকার আশাংকা নামের দুইজনের ৫% করে মোট ১০% মালিকানা ছিলো।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে আমার সাথে ব্যবসায়ীক পার্টনার হন বাড়ির চাচাতো ভাই আরিফ খাঁন। এরপর দুইজনে মিলে চলতি বছর রিপন পাবলিসিটি এন্ড এডভ্যাটাইজমেন্ট, রিপন ক্লিনিং কোম্পানি ও রিপন ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্সি নামের আরো তিনটি শাখা স্থাপন করি। সবমিলিয়ে আমাদের মূলধন হয়, প্রায় দেড় কোটি টাকা।
তিনি বলেন, আমাদের দু’জনের সম্পর্ক ও ব্যবসা ভালোই চলছিলো। আমি দেশে আসলে আরিফ এবং আরিফ দেশে আসলে আমি ব্যবসা পরিচালনা করতাম। গত চারমাস আগে আমি ছুটিতে দেশে আসলে সে (আরিফ খাঁন) আমার পুরো ব্যবসা তার কব্জায় নিয়ে নেয় এবং এ মাসের (সেপ্টেম্বর) ২১ তারিখে আমার ভিসা বাতিল করে দেয়।
রিপন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়েছি এবং সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কথা বলেছি। এছাড়াও তার (আরিফ) পরিবারের সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধিসহ আপনাদেরকেও (সাংবাদিক) জানিয়েছি। এঘটনায় জেলা প্রশাসক, ইউএনও, থানা ও আর্মি ক্যাম্পে অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এসময় রিপনের বাবা সিরাজুল ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে পথে বসিয়ে দিয়েছে আরিফ। আপনাদের মাধ্যমে আমরা তার বিচার এবং আমার ছেলে ব্যবসা ফিরে পেতে চাই।
এদিকে অভিযুক্ত আরিফ খাঁনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রিপন ও আশাংকা নিজ নিজ দেশে চলে যাওয়ার সময় তারা দুইজনে ভারতীয় ফাতেমাকে পাওয়ার অব এর্টনি দিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই ফাতেমাই তার (রিপন) ভিসা বাতিল করে। এখন ফাতেমার সাথে তার কি হয়েছে না হয়েছে, সেটা তাদের বিষয়। এখানে আমার নাম আসবে কেন?
এসময় তিনি বলেন, তার (রিপন) অনুরোধে আমি তাকে আমার কোম্পানিতে চাকরি দেই। যখন আমি ছুটিতে দেশে আসি এবং আমার ব্যবসা দেখার জন্য তাকে দায়িত্ব দিয়ে আসতাম, তখন সে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়তো। সে আমার স্টাফ হয়ে কমিশন খেতো এবং আমি ছুটিতে থাকাকালীন মাসগুলোতে সে ব্যবসা কম দেখাতো। তার কারণে আমি ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এ বিষয়ে তার বাবা-মায়ের কাছে অভিযোগও দিয়েছি।