ঢাকা 4:51 am, Thursday, 31 July 2025

উপজেলা পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:57:14 pm, Tuesday, 25 October 2022
  • 14 Time View

ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চাঁদপুর শহরে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় গাছের ডাল ভেঙে বসতঘর এবং সরড়কের ওপরে পড়ে। গ্রামাঞ্চলে রোববার দিনগত রাত থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি উপজেলা পর্যায়ে। মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যায়ও আছেন অধিকাংশ গ্রাহক।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে আবহাওয়ার অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। সকাল ১০টার পর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়। সোমবার বেলায় ১১টায় চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে বন্ধ হওয়া লঞ্চ চলাচল শুরু হয় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায়।

চাঁদপুর তিন নদীর মোহনা সিত্রাংয়ের প্রভাবে সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তবে সেখানে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল।

এদিকে সোমবার রাতে ঝড়ের প্রভাবে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৮৭০জন উপকূলীয় এলাকার সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়। তারা আজ সকালে নিজ গন্তব্যে চলে গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় রোববার রাত থেকে অদ্য পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ। হাইমচর উপজেলায় একই অবস্থা। হাজীগঞ্জে বিদ্যুৎ নেই এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে সমস্যায় আছেন গ্রাহকরা। কচুয়া, শাহরাস্তি মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। ঝড়ের প্রভাবে গাছের ডাল পালা ভেঙে পড়েছে বসত বাড়ী ও সড়কে। তবে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষিত খবর পাওয়া যায়নি।

চাঁদপুর জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এবং সিনিয়র সহকারী কমিশনার সুচিত্র রঞ্জন দাস জানান, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাক্তিদের সহায়তা করার জন্য জেরা দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখা হতে জেলার ৮ উপজেলার নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা এবং ১৮ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ে জেলায় বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষিত হয়নি।

এদিকে, ঘুর্ণি ঝড়ের প্রভাবে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে গাছের ডাল পালা ভেঙে পড়ে। পরে স্থানীয়রা সেগুলো অপসারণ করায় সড়ক স্বাভাবিক হয়ে যায়। সোমবার সকাল থেকে চাঁদপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-কুমিল্লাসহ সব রুটে বাস চলাচল শুরু করেছে।

চাঁদপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাষ্টার শোয়েবুল ইসলাম জানান, সোমবার বিকেল ৫টায় চট্রগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে পৌঁছানোর কথা থাকলেও ঘুর্ণিঝড়ে লাইনে গাছ ও ডাল ভেঙে পড়ায় আসতে বিলম্ব হয়। রাত ১টা ২৫ মিনিটে এসে চাঁদপুর স্টেশনে পৌঁছায় মেঘনা এক্সপ্রেস। তবে যাত্রীদের কোন ধরণের সমস্যা হয়নি। কারণ ঝড়ের সংবাদ পেয়ে বরিশালের কোন যাত্রী এই ট্রেনে আসেনি। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) যথারীতি ভোর ৫টায় ট্রেনটি চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল জানান, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব বাড়ার পর থেকে আমরা শহর রক্ষা বাঁধ নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম। সারা রাত আমাদের কোন কর্মকর্তা ঘুমায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা বাড়লেও আজকে স্বাভাবিক। শহর রক্ষা বাঁধও শঙ্কা মুক্ত।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছের ঢাল লাইনের ওপর ভেঙে পড়ে। যে কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। আজ সকাল থেকে সকল সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ লাইন চেক করা হচ্ছে। শহরের কিছু কিছু লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অবস্থা স্বাভাবিক হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

লাদেশ জাতীয়বাদী রিক্সা, ভ্যান, অটো চালক দল চাঁদপুর জেলা শাখার মতবিনিময় সভা

উপজেলা পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ

Update Time : 05:57:14 pm, Tuesday, 25 October 2022

ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চাঁদপুর শহরে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় গাছের ডাল ভেঙে বসতঘর এবং সরড়কের ওপরে পড়ে। গ্রামাঞ্চলে রোববার দিনগত রাত থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি উপজেলা পর্যায়ে। মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যায়ও আছেন অধিকাংশ গ্রাহক।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে আবহাওয়ার অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। সকাল ১০টার পর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়। সোমবার বেলায় ১১টায় চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে বন্ধ হওয়া লঞ্চ চলাচল শুরু হয় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায়।

চাঁদপুর তিন নদীর মোহনা সিত্রাংয়ের প্রভাবে সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তবে সেখানে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল।

এদিকে সোমবার রাতে ঝড়ের প্রভাবে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৮৭০জন উপকূলীয় এলাকার সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়। তারা আজ সকালে নিজ গন্তব্যে চলে গেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় রোববার রাত থেকে অদ্য পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ। হাইমচর উপজেলায় একই অবস্থা। হাজীগঞ্জে বিদ্যুৎ নেই এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে সমস্যায় আছেন গ্রাহকরা। কচুয়া, শাহরাস্তি মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। ঝড়ের প্রভাবে গাছের ডাল পালা ভেঙে পড়েছে বসত বাড়ী ও সড়কে। তবে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষিত খবর পাওয়া যায়নি।

চাঁদপুর জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এবং সিনিয়র সহকারী কমিশনার সুচিত্র রঞ্জন দাস জানান, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাক্তিদের সহায়তা করার জন্য জেরা দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখা হতে জেলার ৮ উপজেলার নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা এবং ১৮ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ে জেলায় বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষিত হয়নি।

এদিকে, ঘুর্ণি ঝড়ের প্রভাবে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে গাছের ডাল পালা ভেঙে পড়ে। পরে স্থানীয়রা সেগুলো অপসারণ করায় সড়ক স্বাভাবিক হয়ে যায়। সোমবার সকাল থেকে চাঁদপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-কুমিল্লাসহ সব রুটে বাস চলাচল শুরু করেছে।

চাঁদপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাষ্টার শোয়েবুল ইসলাম জানান, সোমবার বিকেল ৫টায় চট্রগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে পৌঁছানোর কথা থাকলেও ঘুর্ণিঝড়ে লাইনে গাছ ও ডাল ভেঙে পড়ায় আসতে বিলম্ব হয়। রাত ১টা ২৫ মিনিটে এসে চাঁদপুর স্টেশনে পৌঁছায় মেঘনা এক্সপ্রেস। তবে যাত্রীদের কোন ধরণের সমস্যা হয়নি। কারণ ঝড়ের সংবাদ পেয়ে বরিশালের কোন যাত্রী এই ট্রেনে আসেনি। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) যথারীতি ভোর ৫টায় ট্রেনটি চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল জানান, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব বাড়ার পর থেকে আমরা শহর রক্ষা বাঁধ নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম। সারা রাত আমাদের কোন কর্মকর্তা ঘুমায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা বাড়লেও আজকে স্বাভাবিক। শহর রক্ষা বাঁধও শঙ্কা মুক্ত।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছের ঢাল লাইনের ওপর ভেঙে পড়ে। যে কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। আজ সকাল থেকে সকল সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ লাইন চেক করা হচ্ছে। শহরের কিছু কিছু লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অবস্থা স্বাভাবিক হবে।