ঢাকা 12:33 pm, Tuesday, 22 July 2025

১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরতে মানা

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:13:11 pm, Wednesday, 11 October 2023
  • 11 Time View

ছবিটি তোলা হয়েছে চাঁদপুরের লাল বাজার থেকে।

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও প্রজনন রক্ষায় আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে চাঁদপুরের পদ্মা- মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ, বিনিময় ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন এই নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে। বিকল্প হিসেবে মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলেকে সরকার এই সময়ের জন্য ২৫ কেজি করে খাদ্য সহায়তা (বিজিএফ) চাল প্রদান করবে।

জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকা। উপকূলীয় এলাকায় ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়েছে।

বুধবার সকালে সদরের মেঘনা পাড়ের জেলে পল্লী আনন্দ বাজার, তরপুরচন্ডী ও আশপাশের এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে অনেক জেলেই নৌকা ও জাল ডাঙায় উঠিয়ে রেখেছেন এবং জাল মেরামত করছেন তুলে রাখার জন্য। আবার কোন কোন জেলে মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সদরের আনন্দ বাজার এলাকার জেলে রতন ও মানিক মিয়া জানান, সরকার যে অভিযান দেয়, তা আমরা মানি। কিন্তু যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়, তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। এই অবসর সময়ে আমাদের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েব। কারণ বাজারে খাদ্য পণ্যের দাম অনেক বেশী।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স দিন এবং রাতে অভিযানের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, মা ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য আমরা নদী উপকূলীয় উপজেলা মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিন, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় সচেতনা সভা করেছি। জেলেরা আমাদেরকে বলেছে তারা ইলিশ আহরন থেকে বিরত থাকবে। বিকল্প হিসেবে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ শেষ পর্যায়ে। আশা করি কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে জাতীয়ভাবে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে এই কর্মসূচি ভূমিকা রাখবে।

ইলিশের প্রজনন রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, ২২ দিনের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করবে। মতলব উত্তর, সদর ও হাইমচরে কোস্টগার্ডের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকবে। ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা সংশ্লিস্ট সকলকে নিদের্শনা দিয়েছি।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যেসব জেলেরা নদীতে মাছ আহরণ করবে তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদন্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরতে মানা

Update Time : 06:13:11 pm, Wednesday, 11 October 2023

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও প্রজনন রক্ষায় আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে চাঁদপুরের পদ্মা- মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ, বিনিময় ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন এই নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে। বিকল্প হিসেবে মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলেকে সরকার এই সময়ের জন্য ২৫ কেজি করে খাদ্য সহায়তা (বিজিএফ) চাল প্রদান করবে।

জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকা। উপকূলীয় এলাকায় ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়েছে।

বুধবার সকালে সদরের মেঘনা পাড়ের জেলে পল্লী আনন্দ বাজার, তরপুরচন্ডী ও আশপাশের এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে অনেক জেলেই নৌকা ও জাল ডাঙায় উঠিয়ে রেখেছেন এবং জাল মেরামত করছেন তুলে রাখার জন্য। আবার কোন কোন জেলে মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সদরের আনন্দ বাজার এলাকার জেলে রতন ও মানিক মিয়া জানান, সরকার যে অভিযান দেয়, তা আমরা মানি। কিন্তু যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়, তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। এই অবসর সময়ে আমাদের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েব। কারণ বাজারে খাদ্য পণ্যের দাম অনেক বেশী।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স দিন এবং রাতে অভিযানের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, মা ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য আমরা নদী উপকূলীয় উপজেলা মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিন, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় সচেতনা সভা করেছি। জেলেরা আমাদেরকে বলেছে তারা ইলিশ আহরন থেকে বিরত থাকবে। বিকল্প হিসেবে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ শেষ পর্যায়ে। আশা করি কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে জাতীয়ভাবে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে এই কর্মসূচি ভূমিকা রাখবে।

ইলিশের প্রজনন রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, ২২ দিনের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করবে। মতলব উত্তর, সদর ও হাইমচরে কোস্টগার্ডের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকবে। ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা সংশ্লিস্ট সকলকে নিদের্শনা দিয়েছি।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যেসব জেলেরা নদীতে মাছ আহরণ করবে তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদন্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।