ঢাকা 10:52 pm, Friday, 18 July 2025

আইনফোন কিনতেই কেরানীগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতি করতে যায় ৩ কিশোর

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:41:24 pm, Sunday, 22 December 2024
  • 9 Time View

অনলাইন ডেস্ক:

আইনফোন কিনতেই কেরানীগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতি করতে যায় ৩ কিশোর রিমান্ডে এমন কথাই জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের রিমান্ডে এক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা–পুলিশ। এ মামলার আসামি লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরবের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল সোমবার আদালতে হাজির করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় আত্মসমর্পণ করা তিনজন দাবি করেছিলেন, কিডনিজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুপথযাত্রী এক রোগীর চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করতে তাঁরা এই পরিকল্পনা করেন। তবে পুলিশের তদন্তে এ দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল আইফোন কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা। মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে সহানুভূতি পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁরা কিডনি রোগীর চিকিৎসার গল্প সাজিয়েছিলো বলে জানান

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া পাকাপুল এলাকায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ঢুকে কর্মরত ১০ ব্যাংক কর্মকর্তা ও ৬ গ্রাহককে অস্ত্রের (খেলনা পিস্তল) মুখে জিম্মি করে ফেলেন তিনজন। পরবর্তী সময়ে তাঁরা ব্যাংকের কাউন্টার থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা লুট করে একটি ব্যাগে গচ্ছিত রাখেন। একই সঙ্গে আরও তিন লাখ টাকা তিনজনের প্যান্টের পকেটে রাখেন। ব্যাংকে হানা দেওয়ার নেতৃত্বদানকারী হলেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার কুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরব (২২)। অন্য দুজনের বয়স ১৬ বছর। তাঁরা কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার বাসিন্দা। নীরব পেশায় একজন গাড়িচালক। অন্য দুজন শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনজনের বিরুদ্ধে রূপালী ব্যাংকের ওই শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তারেক মাহমুদ বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে গত শুক্রবার পুলিশ লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরবকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত নীরবের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া গত শুক্রবার বাকি দুই কিশোরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁদের গাজীপুরে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

লিয়ন মোল্লার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে। তিনি কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাকি দুজন কিশোরও একই এলাকার বাসিন্দা।

রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদে লিয়ন মোল্লা পুলিশকে জানিয়েছেন, খালপাড় এলাকার একটি খেলার মাঠে দুই কিশোরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। নীরব পরে ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা দুই কিশোরকে জানান এবং সফল হলে তাঁদের আইফোন কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ব্যাংক এবং আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ (রেকি) করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে ডাকাতিকালে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে লিয়ন কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজার থেকে খেলনা পিস্তল এবং চাকু কেনেন। একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁরা ওই ব্যাংকে ঢুকে ডাকাতির চেষ্টা চালান।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজন দাবি করেছিলেন, কিডনি রোগীর চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহের জন্য তাঁরা এই পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে পুলিশের তদন্তে এই দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। মূলত মানুষের সহানুভূতি অর্জনের জন্য তাঁরা পরস্পর মিলে এমন একটি স্পর্শকাতর গল্প তৈরি করেছিলেন। পরে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল আইফোন কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবে বিএনপির আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে মৌন মিছিল 

আইনফোন কিনতেই কেরানীগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতি করতে যায় ৩ কিশোর

Update Time : 09:41:24 pm, Sunday, 22 December 2024

অনলাইন ডেস্ক:

আইনফোন কিনতেই কেরানীগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতি করতে যায় ৩ কিশোর রিমান্ডে এমন কথাই জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের রিমান্ডে এক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা–পুলিশ। এ মামলার আসামি লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরবের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল সোমবার আদালতে হাজির করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় আত্মসমর্পণ করা তিনজন দাবি করেছিলেন, কিডনিজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুপথযাত্রী এক রোগীর চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করতে তাঁরা এই পরিকল্পনা করেন। তবে পুলিশের তদন্তে এ দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল আইফোন কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা। মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে সহানুভূতি পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁরা কিডনি রোগীর চিকিৎসার গল্প সাজিয়েছিলো বলে জানান

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া পাকাপুল এলাকায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ঢুকে কর্মরত ১০ ব্যাংক কর্মকর্তা ও ৬ গ্রাহককে অস্ত্রের (খেলনা পিস্তল) মুখে জিম্মি করে ফেলেন তিনজন। পরবর্তী সময়ে তাঁরা ব্যাংকের কাউন্টার থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা লুট করে একটি ব্যাগে গচ্ছিত রাখেন। একই সঙ্গে আরও তিন লাখ টাকা তিনজনের প্যান্টের পকেটে রাখেন। ব্যাংকে হানা দেওয়ার নেতৃত্বদানকারী হলেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার কুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরব (২২)। অন্য দুজনের বয়স ১৬ বছর। তাঁরা কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার বাসিন্দা। নীরব পেশায় একজন গাড়িচালক। অন্য দুজন শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনজনের বিরুদ্ধে রূপালী ব্যাংকের ওই শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তারেক মাহমুদ বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে গত শুক্রবার পুলিশ লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরবকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত নীরবের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া গত শুক্রবার বাকি দুই কিশোরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁদের গাজীপুরে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

লিয়ন মোল্লার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে। তিনি কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাকি দুজন কিশোরও একই এলাকার বাসিন্দা।

রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদে লিয়ন মোল্লা পুলিশকে জানিয়েছেন, খালপাড় এলাকার একটি খেলার মাঠে দুই কিশোরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। নীরব পরে ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা দুই কিশোরকে জানান এবং সফল হলে তাঁদের আইফোন কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ব্যাংক এবং আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ (রেকি) করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে ডাকাতিকালে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে লিয়ন কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজার থেকে খেলনা পিস্তল এবং চাকু কেনেন। একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁরা ওই ব্যাংকে ঢুকে ডাকাতির চেষ্টা চালান।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজন দাবি করেছিলেন, কিডনি রোগীর চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহের জন্য তাঁরা এই পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে পুলিশের তদন্তে এই দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। মূলত মানুষের সহানুভূতি অর্জনের জন্য তাঁরা পরস্পর মিলে এমন একটি স্পর্শকাতর গল্প তৈরি করেছিলেন। পরে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল আইফোন কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা।