ফারজানা আক্তার রুপা একজন দিনমজুরের মেয়ে। মা গৃহিণী। দারিদ্রতার সংগ্রামে বেড়ে ওঠা ফারজানা চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। পরিবারে আর কেউ উচ্চশিক্ষিত না হলেও ফারজানা আক্তার রুপা নিজের চেষ্টা, মেধা ও অধ্যবসায় দিয়ে প্রমাণ করেছে সীমাবদ্ধতা তাকে আটকাতে পারেনি।
সে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলাধীন কাঁকৈরতলা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার মেধাবী শিক্ষার্থী ও উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের পন্ডিত বাড়ির আব্দুর রহমানের ছোট মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মাঝে সে মেঝো।
কাঁকৈরতলা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “রুপার মতো শিক্ষার্থীরা সমাজের জন্য অনুকরণীয়। আমরা চাই, সে যেন উচ্চশিক্ষা অর্জন করে মাদ্রাসা ও পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করে।”
মাদ্রাসার শিক্ষকরা জানান, রুপা অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী ছাত্রী। দারিদ্র্যতাও এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হতে পারেনি। তার এই সাফল্যে পুরো মাদ্রাসা গর্বিত।
রুপার বাবা আব্দুর রহমান জানান , “আমি দিনমজুর মানুষ। কষ্ট করে মেয়েকে পড়াচ্ছি, সে ভালো ফল করেছে — এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সবার দোয়া চাই, মেয়েটা যেন মানুষের মতো মানুষ হয়।”
ফারজানা আক্তার রুপা বলেন, “আমার বাবা-মা কঠোর পরিশ্রম করে আমাকে পড়ালেখার সুযোগ দিয়েছেন। আল্লাহর রহমত আর শিক্ষকদের দোয়ায় আজ এই ফলাফল সম্ভব হয়েছে। আমি মানুষের মতো মানুষ হতে চাই, আর ভবিষ্যতে ভালো কিছু করে বাবার কষ্ট লাঘব করতে চাই। আমি বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশ সেবার জন্য সবার দোয়া চাই।”
জানা গেছে, ফারজানা আক্তার রুপার এই সাফল্যে গ্রামবাসী ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। সবার প্রত্যাশা — দারিদ্র্যতার গণ্ডি পেরিয়ে রুপা একদিন সমাজ ও দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
আরও জানা গেছে, চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় কাঁকৈরতলা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসায় ৪৩ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করলেও ৪০ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। তম্মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ২৮ জন পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেএকমাত্র ফারজানা আক্তার রুপা।