ঢাকা 6:37 pm, Wednesday, 23 July 2025

শাহরাস্তিতে স্মার্টফোনে নকল সরবরাহ, অধ্যক্ষের দুই বছরের কারাদন্ড

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:25:49 pm, Sunday, 3 March 2024
  • 13 Time View

চাঁদপুরের শাহরাস্তি পৌর এলাকার চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ইংরেজী প্রথম পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে নকল সরবরাহ করার দায়ে রাজাপুরা আল-আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলামকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। একই সাথে এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

রবিবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইয়াসির আরাফাত ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহের ঘটনা নিশ্চিত হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।

কারাদন্ডপ্রাপ্ত ছায়েদুল ইসলাম উপজেলার রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিনি ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ভদ্রগাছা গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত বলেন, আজ শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরকারি গাড়ি দূরে রেখে হেঁটে কেন্দ্রে প্রবেশ করি। এ সময় কেন্দ্রের ভিতরে অবস্থানরত অফিস সহকারী, আয়া এবং কিছু শিক্ষক ছোটাছুটি শুরু করেন। ওই কেন্দ্রে অনিয়ম ও নকলের বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করি। পরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের বাউন্ডারি সীমানার মধ্যে অসংখ্য হাতে লিখে সমাধান করা প্রশ্নের উত্তর ও নকল পাওয়া যায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষকদের ইঙ্গিতে পরীক্ষার্থীরা নকল জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফেলে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, হাতে লিখে সমাধান করা ফটোকপি করা নকল দেখে কেন্দ্রে উপস্থিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অধ্যক্ষ ছায়েদুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্টারে ২৫ থেকে ৩০ কপি হাতে লিখা নকলের প্রিন্ট বের করেছেন। উক্ত শিক্ষককে পরে ব্যাপক  জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তিনি একপর্যায়ে জানান, বাসায় তিনি মোবাইল ফোন রেখে এসেছেন। তার নম্বরে কল দিলে পাশের ব্যাগের মধ্যে মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে। মোবাইল ফোনে প্যাটার্ন লক ছিল, তাকে প্যাটার্ণ লকটি খুলতে বললে তিনি তাৎক্ষণাৎ মোবাইল থেকে কিছু একটা ডিলিট করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে শ্রেণিকক্ষের বাইরে উদ্ধারকৃত হাতে লেখা নকলের হুবহু ছবি পাওয়া যায়।

ওই অধ্যক্ষ জানান, তার এক ছাত্র এগুলো সমাধান করে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। পরে তিনি কেন্দ্রের প্রিন্টারে প্রিন্ট করে রুমে রুমে নকল সরবরাহ করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সরকার যেন অন্য কিছু চিন্তা না করে : সারজিস

শাহরাস্তিতে স্মার্টফোনে নকল সরবরাহ, অধ্যক্ষের দুই বছরের কারাদন্ড

Update Time : 06:25:49 pm, Sunday, 3 March 2024

চাঁদপুরের শাহরাস্তি পৌর এলাকার চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ইংরেজী প্রথম পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে নকল সরবরাহ করার দায়ে রাজাপুরা আল-আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলামকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। একই সাথে এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

রবিবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইয়াসির আরাফাত ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহের ঘটনা নিশ্চিত হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।

কারাদন্ডপ্রাপ্ত ছায়েদুল ইসলাম উপজেলার রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিনি ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ভদ্রগাছা গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত বলেন, আজ শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরকারি গাড়ি দূরে রেখে হেঁটে কেন্দ্রে প্রবেশ করি। এ সময় কেন্দ্রের ভিতরে অবস্থানরত অফিস সহকারী, আয়া এবং কিছু শিক্ষক ছোটাছুটি শুরু করেন। ওই কেন্দ্রে অনিয়ম ও নকলের বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করি। পরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের বাউন্ডারি সীমানার মধ্যে অসংখ্য হাতে লিখে সমাধান করা প্রশ্নের উত্তর ও নকল পাওয়া যায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষকদের ইঙ্গিতে পরীক্ষার্থীরা নকল জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফেলে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, হাতে লিখে সমাধান করা ফটোকপি করা নকল দেখে কেন্দ্রে উপস্থিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অধ্যক্ষ ছায়েদুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্টারে ২৫ থেকে ৩০ কপি হাতে লিখা নকলের প্রিন্ট বের করেছেন। উক্ত শিক্ষককে পরে ব্যাপক  জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তিনি একপর্যায়ে জানান, বাসায় তিনি মোবাইল ফোন রেখে এসেছেন। তার নম্বরে কল দিলে পাশের ব্যাগের মধ্যে মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে। মোবাইল ফোনে প্যাটার্ন লক ছিল, তাকে প্যাটার্ণ লকটি খুলতে বললে তিনি তাৎক্ষণাৎ মোবাইল থেকে কিছু একটা ডিলিট করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে শ্রেণিকক্ষের বাইরে উদ্ধারকৃত হাতে লেখা নকলের হুবহু ছবি পাওয়া যায়।

ওই অধ্যক্ষ জানান, তার এক ছাত্র এগুলো সমাধান করে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। পরে তিনি কেন্দ্রের প্রিন্টারে প্রিন্ট করে রুমে রুমে নকল সরবরাহ করেছেন।