ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হঠাৎ ঝড়ে কচুয়ায় অর্ধশতাধিক ঘর দুমড়ে মুচড়ে একাকার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:০৮:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
  • ৫৬ Time View

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। রবিবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ সদর উত্তর ও দক্ষিন ইউনিয়নের গ্রামের উপর দিয়ে ঝড়ে আঘাত হানে। এসময় বহু ঘরের চাল ও টিন উরে গেছে। শতশত গাছ উপড়ে গেছে ডালা-পালা তছনছ হয়ে যায।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ঝড়ে ও তুমল বৃষ্টির মধ্যে বয়ে যাওয়া ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার মধ্যে থাকা ঘর-বাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়। পাশবর্তী গ্রামগুলোতে বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

প্রত্যক্ষর্দশীরা জানান, ঘুর্ণিঝড়টি পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। যে দিকে ঝড় গেছে সে দিকে গাছপালা, বাড়ি-ঘর, মুরগী খামার, টিনসেডের মসজিদ ঘর ও ফসলি জমির মধ্যে ভূট্টা এবং বোরধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের জিলহজ¦ বেগম, এমরান হোসেন, হক মিয়া, আলী আহমেদ, লতিফপুর গ্রামের উত্তর-পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদটি, নোয়াগাঁও গ্রামের ওহাবা বেগম, তেতৈয়া সোহরাব হোসেন মেম্বার, কাউছার আলম, জলা তেতৈয়া অরুণ বৈদ্যের দোকান ঘর, সিংড্ডা, খিড্ডা, সদর দক্ষিন ইউনিয়ন ধলি কচুয়া, কোমরকাশা, রাজাপুর গ্রামে পরিবারগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, গত সন্ধ্যায় হঠাৎ করে গ্রামের ওপর বয়ে যাওয়া ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। অনেকেরই ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। শুধু তাই নয়, ফল গাছ ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ওই গ্রামের বিধবা জিলহজ বেগম বলেন, হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার একমাত্র বসতঘর বাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমার স্বামী ও কোনো ছেলে সন্তান নেই। আাল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ভিক্ষা করে রাস্তার পাশে ছোট ঘরটা করেছি। ঝড়ে আমার সবকিছু নিয়ে যায়। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।

একই উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, রাতে কোনো কিছু বোঝার আগেই হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই থেমে যায়। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার পোল্ট্রি র্ফামের ঘর ভেঙে পুকুরে পড়ে অনেক মুরগী মারাগেছে। এতে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

কচুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম বেলায়াত হোসেন বলেন, সন্ধ্যার ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা কত সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।

কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হঠাৎ ঝড়ে ফসলি জমি বিশেষ করে ভূট্টা ও বোরধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছেখবর পেয়েছি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছেন।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, হঠাৎ ঝড়ে উপজেলার বিশেষ করে দুটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি। ইউপি সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ি তাদের সহযোগিতা করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মহান বিজয় দিবস পালনকল্পে হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের প্রস্তুতি সভা

হঠাৎ ঝড়ে কচুয়ায় অর্ধশতাধিক ঘর দুমড়ে মুচড়ে একাকার

Update Time : ০৫:০৮:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি। রবিবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ সদর উত্তর ও দক্ষিন ইউনিয়নের গ্রামের উপর দিয়ে ঝড়ে আঘাত হানে। এসময় বহু ঘরের চাল ও টিন উরে গেছে। শতশত গাছ উপড়ে গেছে ডালা-পালা তছনছ হয়ে যায।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ঝড়ে ও তুমল বৃষ্টির মধ্যে বয়ে যাওয়া ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার মধ্যে থাকা ঘর-বাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়। পাশবর্তী গ্রামগুলোতে বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

প্রত্যক্ষর্দশীরা জানান, ঘুর্ণিঝড়টি পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। যে দিকে ঝড় গেছে সে দিকে গাছপালা, বাড়ি-ঘর, মুরগী খামার, টিনসেডের মসজিদ ঘর ও ফসলি জমির মধ্যে ভূট্টা এবং বোরধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের জিলহজ¦ বেগম, এমরান হোসেন, হক মিয়া, আলী আহমেদ, লতিফপুর গ্রামের উত্তর-পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদটি, নোয়াগাঁও গ্রামের ওহাবা বেগম, তেতৈয়া সোহরাব হোসেন মেম্বার, কাউছার আলম, জলা তেতৈয়া অরুণ বৈদ্যের দোকান ঘর, সিংড্ডা, খিড্ডা, সদর দক্ষিন ইউনিয়ন ধলি কচুয়া, কোমরকাশা, রাজাপুর গ্রামে পরিবারগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, গত সন্ধ্যায় হঠাৎ করে গ্রামের ওপর বয়ে যাওয়া ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। অনেকেরই ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। শুধু তাই নয়, ফল গাছ ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ওই গ্রামের বিধবা জিলহজ বেগম বলেন, হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার একমাত্র বসতঘর বাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমার স্বামী ও কোনো ছেলে সন্তান নেই। আাল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ভিক্ষা করে রাস্তার পাশে ছোট ঘরটা করেছি। ঝড়ে আমার সবকিছু নিয়ে যায়। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।

একই উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, রাতে কোনো কিছু বোঝার আগেই হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই থেমে যায়। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি আমার পোল্ট্রি র্ফামের ঘর ভেঙে পুকুরে পড়ে অনেক মুরগী মারাগেছে। এতে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

কচুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম বেলায়াত হোসেন বলেন, সন্ধ্যার ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা কত সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।

কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হঠাৎ ঝড়ে ফসলি জমি বিশেষ করে ভূট্টা ও বোরধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছেখবর পেয়েছি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছেন।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, হঠাৎ ঝড়ে উপজেলার বিশেষ করে দুটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি। ইউপি সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ি তাদের সহযোগিতা করা হবে।