ঢাকা 7:55 pm, Friday, 27 June 2025

হাজীগঞ্জে ঝড়ে উড়ে গেছে আল বান্না বালিকা উবির টিনের চালা, পাঠদান ব্যহৃত

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:48:43 pm, Tuesday, 28 May 2024
  • 3 Time View

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :

ঝড়ে উড়ে গিয়ে বিধস্ত হয়েছে, হাজীগঞ্জের কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর বাজারের পাশে অবস্থিত আল বান্না বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইটি একাডেমিক ভবনের টিনের চাল। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শ্রেণিকক্ষগুলো। সোমবার (২৭ মে) দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় রিমেলের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে বিদ্যালয়ের ৪ কক্ষ বিশিষ্ট টিনশেড ভবন ও ২ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘরের চালা বিধস্ত হয়। এতে করে বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধ-সহস্রাধীকেরও বেশি শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যহৃত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে সরজমিনে গেলে দেখা যায়, বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পশ্চিম পাশে তিন কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনের একটি রুম প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়। পাশের রুমে শিক্ষক মিলনায়তন তার পাশের একটি রুমে দশম শ্রেনির পাঠদান চলছে। একই ভবনের বারান্দায় ৬ষ্ঠ ও ৭শ শ্রেনির পাঠদান করাচ্ছেন দুইজন শিক্ষক।

এই পাকা ভবনের পূর্ব পাশের চার কক্ষ বিশিষ্ট টিনশেট ভবন এবং উত্তর পূর্বপাশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘরের পুরো চাল বিদ্যালয় মাঠে বিধস্ত অবস্থায় হয়ে পড়ে আছে। এছাড়াও টিনশেড ভবনের বারান্দার পিলারগুলো ভেঙ্গে গেছে এবং টেবিল, ব্লাক বোর্ড, বৈদ্যতিক পাকা সব বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার হয়ে রয়েছে।

অথচ গত কয়েক মাস আগে দুটি ভবন ২০ লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিদ্যালয়ের মোট ৬টি শ্রেণি কক্ষের চালা ও পাঠদানের আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র নষ্ট হওয়ায় পাঠদান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অবশিষ্ট মাত্র একটি শ্রেণিকক্ষ কোনমতেই পাঠদান সম্ভব নয়।

স্থানীয়রা জানান, এটি এলাকার একমাত্র নারী শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। সোমবার দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড়ে প্রতিষ্ঠানটির আধাপাকা ও টিনের ঘরের টিনের চাল উড়ে মাঠে পড়ে বিধস্ত হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার করা না হলে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হবে শিক্ষার্থীদের। তাই, সাংসদসহ সংশ্লিষ্টদের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তারা।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, ঘূণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যালয়টির আধাপাকা ও টিনের ভবন দুইটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন মাত্র একটি শেণিকক্ষ রয়েছে। যে শ্রেণিকক্ষে সকল শিক্ষার্থীর ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। তাই, শিক্ষার্থীদের পাঠ দান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এসময় তিনি জানান, ইউএনও মহোদয় ও উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার (প্রকৌশলী) বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে গেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, বিদ্যালয়টি দ্রুত সংস্কার করা না হলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়বে। এজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়টির ক্ষতিগ্রস্ত শ্রেণিকক্ষগুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। দেখি কি করা যায়।

খবর পেয়ে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল বলেন, যে ভবনটির চালা বিধ্বস্ত হয়েছে। ওই ভবনটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মাণ করেছে। আমি তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে আশ^স্ত করেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আমরাও দেখছি, উপজেলা পরিষদ থেকে দ্রুতসময়ের মধ্যে কিছু করা যায় কিনা।

অপর দিকে ঘূর্ণিঝড় রিমেলে প্রভাবে সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের তিনতলা একাডেমিক ভবনের টিনের চালাটিও উড়ে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে ২ ডাকাত গ্রেপ্তার, লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার

হাজীগঞ্জে ঝড়ে উড়ে গেছে আল বান্না বালিকা উবির টিনের চালা, পাঠদান ব্যহৃত

Update Time : 08:48:43 pm, Tuesday, 28 May 2024

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :

ঝড়ে উড়ে গিয়ে বিধস্ত হয়েছে, হাজীগঞ্জের কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর বাজারের পাশে অবস্থিত আল বান্না বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইটি একাডেমিক ভবনের টিনের চাল। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শ্রেণিকক্ষগুলো। সোমবার (২৭ মে) দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় রিমেলের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে বিদ্যালয়ের ৪ কক্ষ বিশিষ্ট টিনশেড ভবন ও ২ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘরের চালা বিধস্ত হয়। এতে করে বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধ-সহস্রাধীকেরও বেশি শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যহৃত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে সরজমিনে গেলে দেখা যায়, বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পশ্চিম পাশে তিন কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনের একটি রুম প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়। পাশের রুমে শিক্ষক মিলনায়তন তার পাশের একটি রুমে দশম শ্রেনির পাঠদান চলছে। একই ভবনের বারান্দায় ৬ষ্ঠ ও ৭শ শ্রেনির পাঠদান করাচ্ছেন দুইজন শিক্ষক।

এই পাকা ভবনের পূর্ব পাশের চার কক্ষ বিশিষ্ট টিনশেট ভবন এবং উত্তর পূর্বপাশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘরের পুরো চাল বিদ্যালয় মাঠে বিধস্ত অবস্থায় হয়ে পড়ে আছে। এছাড়াও টিনশেড ভবনের বারান্দার পিলারগুলো ভেঙ্গে গেছে এবং টেবিল, ব্লাক বোর্ড, বৈদ্যতিক পাকা সব বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার হয়ে রয়েছে।

অথচ গত কয়েক মাস আগে দুটি ভবন ২০ লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিদ্যালয়ের মোট ৬টি শ্রেণি কক্ষের চালা ও পাঠদানের আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র নষ্ট হওয়ায় পাঠদান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অবশিষ্ট মাত্র একটি শ্রেণিকক্ষ কোনমতেই পাঠদান সম্ভব নয়।

স্থানীয়রা জানান, এটি এলাকার একমাত্র নারী শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। সোমবার দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড়ে প্রতিষ্ঠানটির আধাপাকা ও টিনের ঘরের টিনের চাল উড়ে মাঠে পড়ে বিধস্ত হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার করা না হলে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হবে শিক্ষার্থীদের। তাই, সাংসদসহ সংশ্লিষ্টদের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তারা।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, ঘূণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যালয়টির আধাপাকা ও টিনের ভবন দুইটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন মাত্র একটি শেণিকক্ষ রয়েছে। যে শ্রেণিকক্ষে সকল শিক্ষার্থীর ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। তাই, শিক্ষার্থীদের পাঠ দান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এসময় তিনি জানান, ইউএনও মহোদয় ও উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার (প্রকৌশলী) বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে গেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, বিদ্যালয়টি দ্রুত সংস্কার করা না হলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়বে। এজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়টির ক্ষতিগ্রস্ত শ্রেণিকক্ষগুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। দেখি কি করা যায়।

খবর পেয়ে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল বলেন, যে ভবনটির চালা বিধ্বস্ত হয়েছে। ওই ভবনটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মাণ করেছে। আমি তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে আশ^স্ত করেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আমরাও দেখছি, উপজেলা পরিষদ থেকে দ্রুতসময়ের মধ্যে কিছু করা যায় কিনা।

অপর দিকে ঘূর্ণিঝড় রিমেলে প্রভাবে সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের তিনতলা একাডেমিক ভবনের টিনের চালাটিও উড়ে যায়।