ঢাকা 3:58 am, Friday, 18 July 2025

বিদেশে ‘নারী-মাদক ফাঁদ’! চাঁদপুরের রাসেল গাজীর বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সর্বস্ব কেড়ে নেওয়ার ভয়ংকর অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:42:14 pm, Thursday, 10 July 2025
  • 16 Time View

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ংকর প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর পৌরসভার ষোল ঘর বিডি রোডের শাহজাহান গাজীর ছেলে মো. রাসেল গাজী নামের এক ব্যক্তি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি মাদক, নারী এবং ভয়ভীতি দেখানোর কৌশল ব্যবহার করে একাধিক প্রবাসীকে অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

একের পর এক অভিযোগে উঠে এসেছে, সৌদি আরবে থাকা এই ব্যক্তি একটি সংঘবদ্ধ কৌশলে নিরীহ প্রবাসীদের ফাঁদে ফেলে ভিডিও, মিথ্যা মামলা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভয় দেখিয়ে কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রবাসীরা কেউ কেউ নির্যাতনের শিকার হয়ে জেল খেটেছেন, আবার কেউ নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী, রাসেল গাজী সৌদি আরবে অবস্থানকালীন সময় মাদক ও নারীর মাধ্যমে প্রবাসীদের ‘ফাঁদে’ ফেলতেন। অনেক সময় স্থানীয় নারীদের দিয়ে অন্তরঙ্গ ভিডিও তৈরি করে, আবার মাদকসহ সাজানো পরিস্থিতি তৈরি করে ওই ভিডিও ও তথ্য ব্যবহার করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ দাবি করতেন।

যদি কেউ অর্থ দিতে অস্বীকার করতেন, তাহলে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সৌদি পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হতো। এতে কেউ কেউ মাসের পর মাস হাজতবাস করেছেন, এমনকি নিজ দেশে ফিরে এসেও হয়েছেন নিঃস্ব।

এই প্রতারণার শিকার প্রবাসীদের মধ্যে রয়েছেন মোঃ আব্দুল সালাম (৫১), কুমিল্লা সদর দক্ষিণ। মোঃ লিটন, চাঁদপুরের আলগীবাজার। কামাল হোসেন, ভোলা-চাঁদপুর অঞ্চল। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, “রাসেল গাজী প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন, পরে ফাঁদ তৈরি করে আমাদের জিম্মি করেন। টাকা না দিলে মারধর করে, আবার পুলিশের হাতে তুলে দেন। কেউ কেউ সবকিছু হারিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।

চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানায় রাসেল গাজীর বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি, জাল দলিল ও প্রতারণা (ধারা ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ইত্যাদি)। এসব মামলায় তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে এবং উচ্চ আদালতের কোনো জামিন বা স্থগিতাদেশ নেই।

ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক নথিতে বলা হয়েছে, তিনি পলাতক এবং তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রাসেল গাজীর মতো প্রতারকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
তারা বলছেন, “সৌদি আরবের কড়া আইনকে অস্ত্র বানিয়ে সাধারণ প্রবাসীদের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে এই চক্র। তাদের থামাতে না পারলে আরও অনেক প্রবাসী ধ্বংস হয়ে যাবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে আঁকা হচ্ছে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’র গ্রাফিতি

বিদেশে ‘নারী-মাদক ফাঁদ’! চাঁদপুরের রাসেল গাজীর বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সর্বস্ব কেড়ে নেওয়ার ভয়ংকর অভিযোগ

Update Time : 10:42:14 pm, Thursday, 10 July 2025

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ংকর প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর পৌরসভার ষোল ঘর বিডি রোডের শাহজাহান গাজীর ছেলে মো. রাসেল গাজী নামের এক ব্যক্তি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি মাদক, নারী এবং ভয়ভীতি দেখানোর কৌশল ব্যবহার করে একাধিক প্রবাসীকে অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

একের পর এক অভিযোগে উঠে এসেছে, সৌদি আরবে থাকা এই ব্যক্তি একটি সংঘবদ্ধ কৌশলে নিরীহ প্রবাসীদের ফাঁদে ফেলে ভিডিও, মিথ্যা মামলা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভয় দেখিয়ে কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রবাসীরা কেউ কেউ নির্যাতনের শিকার হয়ে জেল খেটেছেন, আবার কেউ নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী, রাসেল গাজী সৌদি আরবে অবস্থানকালীন সময় মাদক ও নারীর মাধ্যমে প্রবাসীদের ‘ফাঁদে’ ফেলতেন। অনেক সময় স্থানীয় নারীদের দিয়ে অন্তরঙ্গ ভিডিও তৈরি করে, আবার মাদকসহ সাজানো পরিস্থিতি তৈরি করে ওই ভিডিও ও তথ্য ব্যবহার করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ দাবি করতেন।

যদি কেউ অর্থ দিতে অস্বীকার করতেন, তাহলে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সৌদি পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হতো। এতে কেউ কেউ মাসের পর মাস হাজতবাস করেছেন, এমনকি নিজ দেশে ফিরে এসেও হয়েছেন নিঃস্ব।

এই প্রতারণার শিকার প্রবাসীদের মধ্যে রয়েছেন মোঃ আব্দুল সালাম (৫১), কুমিল্লা সদর দক্ষিণ। মোঃ লিটন, চাঁদপুরের আলগীবাজার। কামাল হোসেন, ভোলা-চাঁদপুর অঞ্চল। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, “রাসেল গাজী প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন, পরে ফাঁদ তৈরি করে আমাদের জিম্মি করেন। টাকা না দিলে মারধর করে, আবার পুলিশের হাতে তুলে দেন। কেউ কেউ সবকিছু হারিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।

চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানায় রাসেল গাজীর বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি, জাল দলিল ও প্রতারণা (ধারা ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ইত্যাদি)। এসব মামলায় তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে এবং উচ্চ আদালতের কোনো জামিন বা স্থগিতাদেশ নেই।

ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক নথিতে বলা হয়েছে, তিনি পলাতক এবং তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রাসেল গাজীর মতো প্রতারকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
তারা বলছেন, “সৌদি আরবের কড়া আইনকে অস্ত্র বানিয়ে সাধারণ প্রবাসীদের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে এই চক্র। তাদের থামাতে না পারলে আরও অনেক প্রবাসী ধ্বংস হয়ে যাবে।”