ঢাকা 6:33 am, Friday, 25 July 2025

চাঁদপুরে শিশু নাবিল হত্যা মামলার আসামী সোহাগের মৃত্যুদন্ড

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:24:35 pm, Monday, 23 January 2023
  • 15 Time View

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নে অপহরণের পর মুক্তিপনের ১০ লাখ টাকা না পেয়ে গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে শিশু নাবিল রহমান ইমন (৬) হত্যার ঘটনায় মামলার আসামী মো. শাহজালাল হোসেন সোহাগ (২৬) কে মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত। আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭ ও ৮ ধারায় পৃথকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রত্যেক ধারায় পৃথকভাবে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাস সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। এছাড়া দন্ডবিধি ২০১ ধারায় তাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে আদালত।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে মামলার রায় দেন চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী।

হত্যার শিকার শিশু নাবিল ওই উনিয়নের মদনের গাঁও গ্রামের মুন্সী বাড়ীর মো. মিজানুর রহমানের ছেলে এবং স্থানীয় চান্দ্রা বাজার শিশু-কিশোর একাডেমির প্লে গ্রুপের ছাত্র ছিল।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো. শাহাজালাল হোসেন সোহাগ একই ইউনিয়নের খাড়খাদিয়া গ্রামের মো. শাহজাহান মেকারের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর দুপুরে শিশু নাবিল দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ীতে ফেরার পথে আসামী সোহাগ অপহরণ করে চান্দ্রা বাজারে তার দোকানে নিয়ে যায়। দোকানে একটি কক্ষে শিশুকে আটকে রাখে এবং মোবাইল ফোনে শিশুর মার কাছ থেকে ১০লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে ওইদিনই তাকে গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে শিশুটিকে কাগজের কার্টুনে ডুকিয়ে বাজারের গলির ময়লার ডাস্টবিলে লুকিয়ে রাখে। শিশুকে খুঁজে না পেয়ে ওইদিনই শিশুর পিতা মিজানুর রহমান ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এরপর ২ অক্টোবর বাজারের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ডাস্টবিনে শিশু নাবিলের মরদেহ কার্টুন থেকে উদ্ধার করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। মুক্তিপনের টাকা দাবী করা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আসামী সোহাগকে ১৩ অক্টোবর গ্রেফতার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। আসামীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের আলামত উদ্ধার করে।

ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আখতার হোসেন ঘটনাটি তদন্ত করে ওই বছর ২ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইয়েদুল ইসলাম বাবু জানান, মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর চলাকালীন সময়ে ৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে এই রায় দেন। তবে আসামী জামিনের পর পলাতক রয়েছে। তার অনপুস্থিতিতে এই রায় দেন বিচারক।

আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মতলবে মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদান

চাঁদপুরে শিশু নাবিল হত্যা মামলার আসামী সোহাগের মৃত্যুদন্ড

Update Time : 05:24:35 pm, Monday, 23 January 2023

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নে অপহরণের পর মুক্তিপনের ১০ লাখ টাকা না পেয়ে গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে শিশু নাবিল রহমান ইমন (৬) হত্যার ঘটনায় মামলার আসামী মো. শাহজালাল হোসেন সোহাগ (২৬) কে মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত। আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭ ও ৮ ধারায় পৃথকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রত্যেক ধারায় পৃথকভাবে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাস সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। এছাড়া দন্ডবিধি ২০১ ধারায় তাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে আদালত।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে মামলার রায় দেন চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী।

হত্যার শিকার শিশু নাবিল ওই উনিয়নের মদনের গাঁও গ্রামের মুন্সী বাড়ীর মো. মিজানুর রহমানের ছেলে এবং স্থানীয় চান্দ্রা বাজার শিশু-কিশোর একাডেমির প্লে গ্রুপের ছাত্র ছিল।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো. শাহাজালাল হোসেন সোহাগ একই ইউনিয়নের খাড়খাদিয়া গ্রামের মো. শাহজাহান মেকারের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর দুপুরে শিশু নাবিল দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ীতে ফেরার পথে আসামী সোহাগ অপহরণ করে চান্দ্রা বাজারে তার দোকানে নিয়ে যায়। দোকানে একটি কক্ষে শিশুকে আটকে রাখে এবং মোবাইল ফোনে শিশুর মার কাছ থেকে ১০লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে ওইদিনই তাকে গলায় প্লাস্টিক পেঁচিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে শিশুটিকে কাগজের কার্টুনে ডুকিয়ে বাজারের গলির ময়লার ডাস্টবিলে লুকিয়ে রাখে। শিশুকে খুঁজে না পেয়ে ওইদিনই শিশুর পিতা মিজানুর রহমান ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এরপর ২ অক্টোবর বাজারের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ডাস্টবিনে শিশু নাবিলের মরদেহ কার্টুন থেকে উদ্ধার করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। মুক্তিপনের টাকা দাবী করা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আসামী সোহাগকে ১৩ অক্টোবর গ্রেফতার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। আসামীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের আলামত উদ্ধার করে।

ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আখতার হোসেন ঘটনাটি তদন্ত করে ওই বছর ২ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইয়েদুল ইসলাম বাবু জানান, মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর চলাকালীন সময়ে ৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে এই রায় দেন। তবে আসামী জামিনের পর পলাতক রয়েছে। তার অনপুস্থিতিতে এই রায় দেন বিচারক।

আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশার।